-->
শিরোনাম

ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় যুবককে আটকে রেখে নির্যাতন

আ.লীগ নেতাসহ ৪ জনের নামে মামলা

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় যুবককে আটকে রেখে নির্যাতন

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের বিপ্লব হোসেন নামের এক যুবককে ইতালি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় আটক রেখে নির্যাতন এবং ১৪ লাখ টাকা মুক্তিপণ নেয়ার অভিযোগ এনে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা সহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

 

১৫ ফেব্রুয়ারী সকালে সিরাজগঞ্জ মানব পাচার দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলাটি দায়ের করেন শাহজাদপুর উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের বেড়াডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে মাসুদ রানা। মামলার শুনানী শেষে বিচারক শেখ মো. নাসিরুল হক মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পিবিআই কে নির্দেশ দিয়েছেন। এই আদালতের স্টেফোগ্রাফার মাজেদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

 

মামলার আসামীরা হলেন, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও কাশিনাথপুর গ্রামের আব্দুল কাদের মিঠু, একই গ্রামের নাজমুল আশরাফ ও তার মা নাজমা খাতুন একই গ্রামের বাবু।

 

মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামীরা মানব পাচার দলের সদস্য। আসামী নাজমুল আশরাফ লিবিয়া রাষ্ট্রে বহুদিন ধরে অবস্থান করছেন। নাজমুল আশরাফের সঙ্গে বাদীর পিতা আব্দুল মান্নানের মোবাইলে কথা হয়। মামলার দুই আসামী বাবু ও আব্দুল কাদের মিঠু আমার (মামলার বাদী) পিতার সঙ্গে যোগাযোগ করে আমার ভাই বিপ্লব হোসেনকে ইতালি রাষ্ট্রে পাঠানোর জন্য ১৫ লাখ টাকা দাবী করে। পরে আসামীর বাড়িতে আসলে বিদেশে যাওয়ার জন্য ১৪ লাখ টাকা চুক্তি হয়।

 

চুক্তি অনুযায়ী আসামীগণ বিদেশে যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট, ভিসা প্রস্তুত করে। প্রথমে তারা বলে বিপ্লব হোসেনকে দুবাই রাষ্ট্রে নিয়ে যাবে। সেখান থেকে ইতালি রাষ্ট্রে পাঠিয়ে দেবে। দুই দফায় ১৪ লাখ টাকা পরিশোধের পর ২০২২ সালের ৭ জুন আসামী বাবু ও আব্দুল কাদের মিঠু মাইক্রোবাসে করে বিপ্লব হোসেনকে ঢাকা বিমানবন্দরে নিয়ে যায়। বিপ্লব হোসেন দুবাই রাষ্ট্রে পৌছার পর তাকে আসামী নাজমুল আশরাফ ১৪ দিন একটি হোটেলে রাখে। ১৪ দিন পর আসামী নাজমুল আশরাফ দুবাই থেকে বিপ্লবকে লিবিয়া রাষ্ট্রে নিয়ে যায়।

 

লিবিয়ায় নিয়ে গিয়ে বিপ্লবকে আটক রেখে মারধর করে নাজমুল। মুক্তিপণ হিসেবে টাকা প্রদানের জন্য বিপ্লবকে দিয়ে বাড়িতে ফোনে কথা বলায়। আমার বাবা বিপ্লবের জীবন বাঁচাতে নাজমুল আশরাফের নির্দেশে বিভিন্ন ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে ৯ লাখ ৪৩ হাজার ৫৬০ টাকা প্রদান করলেও বিপ্লবকে ছেড়ে দেয় না। পরে আসামী নাজমুল আশরাফ মামলার বাদীর পিতাকে বলেন ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা মাদারীপুর জেলার নির্দিষ্ট জায়গায় পৌছে দিতে হবে।

 

আমি এবং আমার পিতা মাদারীপুর যায়। সেখানে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আসামী নাজমুল আশরাফ বলেন বিলের পাশে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় টাকার ব্যাগ রাখতে। তার নির্দেশ অনুযায়ী টাকার ব্যাগটি রাখি এবং পিছনে তাকাইতে নিষেধ করে। টাকা পাওয়ার পর আমাদেরকে জানানো হয় টাকা তাদের হস্তগত হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ১৪ লাখ টাকা মুক্তিপণ নেয়ার পরও বিপ্লবকে ছেড়ে দেয় না।

 

পরে বাধ্য হয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে বিষয়টি লিখিতভাবে অবগত করি। বাংলাদেশ সরকারের সহায়তায় একটি বিশেষ এজিন্সির মাধ্যমে বিপ্লব হোসেনকে উদ্ধার করা হয়। এঘটনায় শাহজাদপুর থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ আদালতে মামলা দায়েরের পরামর্শ দেয়।

 

ভোরের আকাশ/মি

মন্তব্য

Beta version