-->

যশোরে আর থাকবে না লো-ভোল্টেজ বিড়ম্বনা

যশোর প্রতিনিধি
যশোরে আর থাকবে না লো-ভোল্টেজ বিড়ম্বনা
চাঁচড়া উপকেন্দ্র ২৩০/১৩২ কেভি গ্রীডে উন্নীত হতে যাচ্ছে

যশোর জেলার কোথাও আর থাকবে না লো-ভোল্টেজ বিড়ম্বনা। জেলার চাহিদামত ৪শ’ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ নিরবিছিন্নভাবে সরবরাহ করা হবে। যশোরের চাঁচড়া ১৩২/৩৩ কেভি গ্রীড উপকেন্দ্র উন্নীত হতে যাচ্ছে ২৩০/১৩২ কেভিতে।

বাংলাদেশ ও চায়না সরকারের চুক্তির জি টু জি প্রকল্পের আওতায় যশোরে চলছে শত কোটি টাকার কর্মযজ্ঞ। কেন্দ্রটি হবে গ্যাস আইসুলেটেড। ভারত থেকে আমদানি করা বিদ্যুৎ সফলভাবে সঞ্চালন করা হবে।

এক কথায় আরও অত্যাধুনিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে এবং বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগকে আরও সক্রিয় করতে পাওয়ার গ্রীড কোম্পানী অব বাংলাদেশ লিমিটেড মাঠে নেমেছে।

উচ্চ ভোল্টেজের সঞ্চালন নেটওয়ার্ক স্থাপনের মাধ্যমে পর্যাপ্ত ও নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি লো-ভোল্টেজ সমস্যার সমাধান করতে প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। বাংলাদেশ সরকার ও চায়না সরকারের মধ্যে আথির্ক চুক্তি জি টু জি প্রকল্পের আওতায় সারা দেশের বিভিন্ন উপকেন্দ্র ও ন্যাশনাল গ্রীডকে ক্রমোন্নয়নের মাধ্যমে আরও কার্যকর করে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। একনেকে পাস হওয়ার পর শুরু হয় কার্যক্রম।

এর মধ্যে যশোর জেলার গণমানুষের ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদা উচ্চ ভোল্টেজের সঞ্চালনে নেটওয়ার্ক স্থাপন করতে চাঁচড়া উপকেন্দ্রটি ১৩২/৩৩ কেভি গ্রীড থেকে ২৩০/১৩২ কেভিতে উন্নীত করতে নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে।

এর আগে ২০২২ সালে জমি নির্ধারণ করা হয়। প্রায় ৩ একর জমি জুড়ে হচ্ছে এবারের গ্রীড উপকেন্দ্রটি। ২০২৪ এর শুরুতেই কাজ জোরেসোরে এগিয়ে চলেছে চাঁচড়ায়। নির্মাণ হলে পর্যাপ্ত ও নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি লো-ভোল্টেজ সমস্যার সমাধান করা যাবে নিমিশেই।

যশোরে বিদ্যুৎ বিভাগ সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশের পটুয়াখালীর পায়রা, খুলনা রামপাল থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ও ভারত (আদানী, ঝাড়খণ্ড) থেকে আমদানি করা বিদ্যুৎ নির্ভরযোগ্যভাবে সঞ্চালন হবে চাড়াগ্যপি উপকেন্দ্রে। ইতিমধ্যে ২৩০/১৩২ কেভিতে উন্নীত ঝিনাইদহ ও ঈশ্বরদীর গ্রীড উপকেন্দ্রের সাথে যুক্ত হয়ে সঞ্চালন করবে চাঁচড়া গ্রীড উপকেন্দ্রটি।

সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নির্মাণ এবং সম্প্রসারণ কার্যক্রম বিভিন্ন লটে বিভাজন করা হয়েছে। মূলত ভারত থেকে আমদানি করা বিদ্যুৎ নির্ভরযোগ্যভাবে সঞ্চালনের জন্য এ প্রকল্পটি একনেকের সভায় অনুমোদন দেয়া হয়।

সারা দেশে এখন পাওয়ার গ্রীড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড পিজিসিবি’র বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য ৪০০ কেভি ক্ষমতাসম্পন্ন, ২৩০ কেভি ক্ষমতাসম্পন্ন এবং ১৩২ কেভি ক্ষমতাসম্পন্ন সঞ্চালন লাইন রয়েছে। এছাড়া ৪০০ কেভি ক্ষমতাসম্পন্ন একটি এইচভিডিসি ব্যাক টু ব্যাক স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও ৪০০/২৩০ কেভি গ্রীড সাবস্টেশন, ৪০০/১৩২ কেভি গ্রীড সাবস্টেশন, ২৩০/১৩২ কেভি গ্রীড সাবস্টেশন, ২৩০/৩৩ কেভি গ্রীড সাবস্টেশন এবং ১৩২/৩৩ কেভি গ্রীড সাবস্টেশন রয়েছে।

এর মধ্যে বর্তমানে যশোরের চাঁচড়ায় ১৩২/৩৩ কেভি গ্রীড উপকেন্দ্র তার সার্ভিস দিয়ে আসছে। আর আসছে চমক, কাঙ্খিত ২৩০/ ১৩২ কেভির সাবস্টেশন।

এ ব্যাপারে এ অঞ্চলের গ্রীড মেইনটেন্স অফিস ঝিনাইদহের এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার শাহিদুজ্জামান জান, যশোরের চাঁচড়ার গ্রীড উপকেন্দ্রটিতে ২৩০/১৩২ কেভির কাজ আগামী ২ থেকে আড়াই বছরের মধ্য শেষ হবে বলে টার্গেট রয়েছে।

যশোর চাঁচড়া গ্রীড উপকেন্দ্রের ইনচার্জ সহকারী প্রকৌশলী সাজিত ইমাম, উপসহকারী প্রকৌশলী শেখ একরামুল হুসাইন ও গাজী মাজহারুল আনোয়ার জানিয়েছেন, এগিয়ে চলেছে ২৩০/১৩২ কেভিতে উন্নীত করতে নির্মাণ কাজ। যশোরের সব মানুষের ঘরে ঘরে উচ্চ ভোল্টেজে বিদ্যুৎ পৌঁছাবে। লোভোল্টেজ বিড়ম্বনা আর থাকবে না। হাইভোল্টেজ ক্যাপাসিটির বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা যাবে।

 

সব মিলিয়ে যশোরে বিদ্যুৎ সেক্টরে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে এই ২৩০/১৩২ কেভির নয়া গ্রীড।

 

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version