-->
শিরোনাম

কৌশল বদলে কাটা হচ্ছে কৃষিজমি ও পাহাড়ের মাটি

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
কৌশল বদলে কাটা হচ্ছে কৃষিজমি ও পাহাড়ের মাটি
কৃষিজমির টপ সয়েল কেটে নেয়া হয়েছে

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে কৌশল বদলে কাটা হচ্ছে কৃষিজমি ও পাহাড়ের মাটি। স্থানীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা প্রশাসনের হুঁশিয়ারির কারণে এখন আর আগের মতো সেভাবে প্রকাশ্যে তৎপরতা চালাতে পারছে না অপরাধীরা। তাই দিনের চেয়ে এখন রাতের বেলায়ই অধিক পরিমাণে সাবাড় করা হচ্ছে কৃষিজমি ও পাহাড়ের মাটি।

কৃষিজমি ও পাহাড়ের মাটি কাটা বন্ধে সম্প্রতি কঠোর হওয়ার বার্তা দেয় উপজেলা প্রশাসন। স্থানীয় সংসদ সদস্য মাহবুব-উর রহমানও বিষয়টি নিয়ে সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেন। সম্প্রতি উপজেলার আইন-শৃঙ্খলাবিষয়ক সভায়ও বিষয়টি নিয়ে কথা হয়। সেখানে জানানো হয়, এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। মূলত এরপর থেকেই ভিন্ন পথ অবলম্বন করতে শুরু করে মাটি খেকো চক্র। দিনের পরিবর্তে রাতের বেলাকেই মাটি কাটার উপযুক্ত সময় হিসেবে বেছে নেয় তারা।

সরেজমিনে উপজেলার হিঙ্গুলী ইউনিয়নের রসুলপুরে গিয়ে দেখা যায়, কৃষিজমির টপ সয়েল কেটে নেয়া হয়েছে। এ কাজে ব্যবহৃত এস্কেভেটরটি (ভেকু) পাহাড়ের পাশে লুকিয়ে রাখা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, বিভিন্ন ইটভাটার চাহিদা পূরণ ও জমি ভরাটের জন্য রাত ১২টা পর থেকে শুরু হয় মাটি কাটা। কখনো মাটি আনা-নেয়ার যানবাহনের শব্দে রাতের বেলায় ঠিকমতো ঘুমাতে পারেন না স্থানীয়রা। কিন্তু ভয়ে কেউ মুখ খোলেন না।

নতুন করে রাতে মাটি কাটা শুরু হলেও দিনের বেলায় যে এ ধরনের কর্মকাণ্ড একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে, এমন নয়। উপজেলার মিরসরাই সদর ইউনিয়নের গরিয়াইশ গ্রামে পাহাড়ের নিচের অংশ কাটায় স্থানীয় ইটভাটা মালিক মাহমুদুল হকের ছেলে মো. আব্দুল্লাহ আল ফয়সালকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মিজানুর রহমান। এছাড়া মাটি কাটায় ব্যবহৃত তিনটি এস্কেভেটর জব্দ করা হয়।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘এস্কেভেটর দিয়ে পাহাড়ের গোড়ার মাটি কেটে ইটভাটায় নেয়া হচ্ছে। এতে করে আগামী বর্ষায় পাহাড়গুলো ধসে পড়বে। পাহাড়ের গোড়া থেকে মাটি কাটার খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে তিনটি এস্কেভেটর জব্দ করা হয়। এ সময় ভাটায় মাটির নেয়ার কারণে মো. আবদুল্লাহ আল ফয়সাল নামে একজনকে আটক করে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের সাজা দেয়া হয়। এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।’

সূত্র জানায়, উপজেলার ১৪টি ইটভাটায় বছরে যে পরিমাণ মাটি ব্যবহৃত হয় তার পুরোটাই সরবরাহ করা হয় কৃষিজমি ও পাহাড় থেকে। ফলে শুষ্ক মৌসুমে মাটি কাটার ধুম পড়ে যায়। এলাকাভিত্তিক সংঘবদ্ধ একটি চক্র এসবের সঙ্গে যুক্ত। তবে এবার প্রশাসন উদ্যোগী হওয়ায় দৃশ্যত কিছুটা হলেও টনক নড়েছে অপরাধীদের।

 

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version