-->
শিরোনাম

পুরনো ব্যাটারি থেকে চলছে সিসা সংগ্রহ,বিষাক্ত ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষিত

মনোহরদী (নরসিংদী) প্রতিনিধি
পুরনো ব্যাটারি থেকে চলছে সিসা সংগ্রহ,বিষাক্ত ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষিত
চঙ্গভাণ্ডা ও নোয়াদিয়া সড়কের পাশে অবস্থিত সিসা সংগ্রহের কারখানা

নরসিংদীর মনোহরদীতে অবৈধ কারাখানায় পুরোনো ব্যাটারি থেকে সিসা সংগ্রহ করা হচ্ছে। এতে বিষাক্ত ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। দিনে এই কারখানার কর্মীরা কোনো কাজ করেন না। সারা রাত ধরে তারা ব্যাটারি গলানোর কাজ করেন।

উপজেলার একদুয়ারিয়া ইউনিয়নের চঙ্গভাণ্ডা ও নোয়াদিয়া সড়কের পাশে ওই কারখানাটির অবস্থান। গ্রামের ভিতরে কারখানাটি তৈরি করা হয়েছে। সেখানে ২০/২৫ জন কর্মী কাজ করেন। দিনে এই কারখানা কাজ হয় না। শ্রমিকেরা সারা রাত ব্যাটারি গলান ও সিসা সংগ্রহ করেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কারখানার দরজা বন্ধ। বাইরের কোনো লোকজনকে ঢুকতে দেওয়া হয় না। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে কারখানার ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, কারখানার ভেতরে কর্মচারীদের ঘুমানোর জন্য চার-পাঁচটা বড় বড় চৌকিতে বিছানা পাতা রয়েছে। আর সামনের আঙিনায় ব্যাটারি গলানো সরঞ্জাম ও অন্যান্য মালামাল ফেলে রাখা হয়েছে।

কারখানার মালিককে পাওয়া না গেলেও ম্যানেজারের সাথে কথা হয়। ম্যানেজার মো. বাকিরের কাছে ‘কারখানার মালিক কে?’ জানতে চাইলে তিনি বলেন, চার জনের পার্টনারশিপে চলে এ কারখানা। এখানে দিনের বেলা কোনো কাজ হয় না। সারা রাত ব্যাটারি গলানোর কাজ করেন কর্মীরা। এখানকার কর্মীদের বাড়ি বগুড়া। এই কাজে স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে তারা বলেন, কোনো কাজ না পেয়ে নিরুপায় হয়ে এই কাজে এসেছেন।

২ বছর আগে উপজেলার লেবুতলা ইউনিয়নের গজারিয়া গ্রামে এরকম একটি কারখানা তৈরি করা হয়েছিল। সেই কারখানার ক্ষতিকর প্রভাবে এলাকার গাছপালা মরে যাচ্ছিল। তখন এলাকাবাসীর অভিযোগে প্রশাসন কারখানাটি বন্ধ করে দেয়। জানা যায়, সেই কারখানাটিই স্থানান্তর করে ওই জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে।

এলাকাবাসীরা জানান, ওই কারখানায় সিসা গলানোর গন্ধে গ্রামের লোকজন টিকতে পারছেন না। ইতিমধ্যেই জমির ধান গাছের ডগা পুড়ে গিয়েছে। এই কারখানার বিষাক্ত গ্যাসের কারণেই ধানের ক্ষতি হচ্ছে।

কারখানার এক মালিক শাহীন মিয়ার বাড়ি বগুড়া জেলায়। জানা যায়, তিনিই এই কারখানা মূল উদ্যোক্তা। তিনি একা ব্যবসা করতে পারবেনা বলে এখানে স্থানীয় কয়েকজনকে সাথে নিয়ে মাসের পর মাস এই অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।

কারখানা স্থাপনের আগে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি নিয়েছেন কি না, জানতে চাইলে শাহিন মিয়া বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর কোন অনুমতি নেওয়া হয়নি। প্রশাসনকে টাকা দিলেই চলে, অনুমতির কোন প্রয়োজন হয়না। আমরা পরিবেশ অধিদপ্তর ও ইউএনও অফিস ম্যানেজ করেই এই ব্যবসা করে থাকি।

একদুয়ারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোল্লা রফিকুল ইসলাম ফারুক বলেন, শুনেছি এখানে একটা কারখানা হয়েছে। ইতিমধ্যে স্থানীয় লোকজন অভিযোগ নিয়ে আসতে শুরু করেছেন।

ইউএনও হাছিবা খান বলেন, এই ধরনের কারখানা স্বাস্থ্য এবং পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। এই ধরনের কারখানা যদি থাকে, তাহলে আমরা বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিবো।

 

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version