-->
শিরোনাম

কৃষি-পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনাময় এয়াকুবনগর ছড়া

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
কৃষি-পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনাময় এয়াকুবনগর ছড়া
পাহাড়ের কোল ঘেঁষে অবস্থিত এয়াকুবনগরের এই মায়াবী ছড়া

সীতাকুণ্ড পৌরসভার অর্ন্তগত পাহাড়ের কোল ঘেঁষে আবাদি ফসলের সবুজ বিপ্লব আর গাছ-গাছালির অপরূপ দৃশ্যের শান্তিপ্রিয় জনপদ এয়াকুবনগর। এলাকাটির পূর্বাংশে অগনিত পাহাড়ের বুক চিড়ে আসা ছোট-বড় অসংখ্য পাহাড়ি ছড়ার মিলন মোহনায় ঝর্ণা প্রবাহ হতে সৃষ্ট জলধারা ছড়াটির সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ। নয়নাভিরাম ছড়াটির উৎপত্তি ভাঁজে ভাঁজে অগনিত পাহাড়ের বিশাল গভীরতায় আর সমাপ্তি ঘটেছে নুনাছড়া খালে। ছড়ার স্বচ্ছ পানি ও পাহাড়ের গা গেঁষে নেমে আসা ঝর্ণাধারা যেন প্রকৃতির মায়াবি কন্যা।

বারো মাস প্রবাহিত এ প্রকৃতির মায়াবি ছড়া ও ঝর্ণাকে ঘিরেই দেখা দিয়েছে কৃষি, মৎস্য প্রকল্প, পর্যটনের অপার সম্ভাবনা‘সহ সুপেয় খাবার পানির সু-ব্যবস্থা। অসংখ্য চেনা-অচেনা পাখির কলকাকলিতে মুখরিত পাহাড়ি ঝর্ণা‘সহ ছড়ার সৌন্দর্যে ভ্রমণপ্রেমীদের দীর্ঘ হেঁটে আসার ক্লান্তি যেন মহূর্তেই দূর হয়ে যায়।

উপরের টিলায় উঠলে দেখা যাবে দু‘দিকে পাহাড়ঘেরা বিশাল জলধারা‘সহ নয়নাভিরাম ঝর্ণা। মূলত প্রবাহমান ছড়ার পানি আটকে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি হয়েছে এ বিশাল হৃদ ও ঝর্ণা। ঝর্ণার শীতল পানিতে নিজেকে ভিজিয়ে নেয়ার পাশাপাশি অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করেন আগত দর্শনার্থীরা।

স্থানীয় বাসিন্দা অ্যাডভোকেট তৌফিক উদ্দিন বলেন, এয়াকুবনগরে পাহাড়ের কোল ঘেঁষে অবস্থিত এ মায়াবী ছড়া। অপরূপ সৌন্দর্যের রাণী এ ছড়ার প্রায় ১ কি.মি পশ্চিমে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উত্তরাংশে পন্থিছিলা এলাকায় আমার পিতা রফিক উদ্দিন একটি উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। এয়াকুবনগর ছড়াতে সরকারি অর্থায়নে বাঁধের মাধ্যমে উন্নয়ন সাধিত হলে এলাকায় শিক্ষা ও কৃষি-পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনা দেখা দিবে।

সীতাকুণ্ড পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া বলেন, অপার সম্ভাবনাময় ছড়াটি পরিদর্শন করে গেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপরস্থ কর্মকর্তা। সুবিধাজনক স্থানে মীরসরাইয়ের মহামায়া কিংবা বারৈয়াঢালার সহস্রধারা প্রকল্পের মতো ছড়ায় বাঁধ দিয়ে পানি সংরক্ষণ করা হলে শুষ্কমৌসুমে প্রায় ২ হাজার কৃষক এ পানি কৃষি কাজে ব্যবহার করতে পারবে।

তিনি আরো বলেন, দু‘পাশে বসবাসকারী পরিবার ও কৃষকদের দীর্ঘদিনের দাবী সরকারি অর্থায়নে ছড়ার যে কোন সুবিধাজনক স্থানে বাঁধের মাধ্যমে পানি সংরক্ষণ করা হলে এলাকায় সুপেয় খাবার পানির চাহিদা পূরণ হবে। তাছাড়া মৎস্য প্রকল্প ও পর্যটন সহ হাজারো একর অনাবাদী কৃষি জমি ফসলি ভূমির আওতায় আসবে। এলাকায় দেখা দিবে কৃষি বিল্পব।

সাবেক কাউন্সিলর মাইমুন উদ্দিন মামুন বলেন, ঝর্ণা সহ ছড়াটি এতই সুন্দর যে, স্ব-চোখে না দেখে বাহির থেকে কেউ কল্পনাও করতে পারে না। চারপাশে পাহাড়ের সবুজ-শ্যামল পরিবেশ ছড়ার জমাট বাঁধা জলাধার ও ঝর্ণা‘কে করেছে নয়নাভিরাম।

তিনি আরো বলেন, পর্যটন শিল্প ছাড়াও বাঁধ দিয়ে ছড়ার পানি সংরক্ষণ করে সুষম বন্টনের মাধ্যমে পৌরসভার হাজার হাজার কৃষক শুষ্কমৌসুমে এ পানি কৃষি কাজে ব্যবহার করতে পারবে। তাতে ছড়ার দু‘পাশের বিশাল এলাকায় দেখা দিবে উৎপাদিত ফসলের সবুজ বিপ্লব।

উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বন বিভাগের আওতাধিন এলাকায় অবস্থিত ছড়াটি কয়েক দফা পরিদর্শন ও জরিপ শেষে স্কেচ ম্যাপ সহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দপ্তরে প্রেরণ করেছেন তারা। প্রকল্পটি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়েছেন বলে জানান উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড।

 

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version