-->

প্রথম পর্যায়ে জিরার চাষাবাদে সফল প্রান্তিক কৃষক

বগুড়া প্রতিনিধি
প্রথম পর্যায়ে জিরার চাষাবাদে সফল প্রান্তিক কৃষক
ক্যাপশন: বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় কৃষক পর্যায়ে জিরা চাষ করা হচ্ছে

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার দেউলী ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর এলাকায় কৃষক পর্যায়ে শুরু হয়েছে প্রথমবারের মতো জিরা চাষাবাদ। কৃষি অফিসের সহায়তায় প্রদর্শনীর মাধ্যমে সর্ব প্রথম এই এলাকায় স্বল্প পরিসরে জিরার চাষ করছেন কৃষকরা। ইতিমধ্যে জিরার গাছগুলো বড় হয়ে ফুল আসতে শুরু করেছে। জিরার এমন ফলন দেখে কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে। জিরা চাষে সফলতার মুখ দেখবেন এমনটি আশা করছেন তারা।

 

জানা যায়, মসলা জাতীয় ফসলের মাঝে জিরা অন্যতম। জিরা মসলা জাতীয় ফসল। দেশে যে পরিমান জিরার চাহিদা তার সম্পূর্ণটাই আমদানীর উপর নির্ভর করে। আমাদের দেশে প্রতি বছর জিরার চাহিদা থাকে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার মেট্রিক টন।

 

অনেক গবেষণার ফলে মসলা গবেষণা কেন্দ্রর বিজ্ঞানীদের নিরলস প্রচেষ্টায় এ দেশে কৃষক পর্যায়ে চাষাবাদের উপযোগী জিরার জাত আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছেন। বারি জিরা-১ নামের জাতটি জাতীয় বীজ বোর্ড কর্তৃক ২০২২ সালে অনুমোদিত হয়। এ জাতের জিরার গাছ লম্বা ও ঝোপালো। উচ্চতা প্রায় ৪০ থেকে ৫০ সেন্টিমিটার। গাছের পাতার রং গাঢ় সবুজ। ফুলের রং গোলাপী। কৃষক পর্যায়ে চাষ উপযোগী এ জাতের জিরার গাছ বেঁচে থাকে ১০০ থেকে ১১০ দিন পর্যন্ত। এ জাতের জিরা বাজারে প্রাপ্ত জিরা অপেক্ষা অধিক সুগন্ধি। আর হেক্টর প্রতি ফলন ৫৫০ থেকে ৬০০ কেজি।

 

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার দেউলী ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কৃষক পর্যায়ে স্বল্প পরিসরে চাষাবাদ হচ্ছে জিরার। এই গ্রামের কৃষক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, কৃষি অফিসের সহায়তায় প্রদর্শনীর মাধ্যমে ২৫০ গ্রাম জিরার বীজ পাই। সেই বীজ দিয়ে ১০ শতক জমিতে জিরার চাষ শুরু করেছি। নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে জিরার জমি তৈরী করে বীজ বপন করি। এখন জিরার গাছে ফুল চলে আসছে। তবে এ ফসলের যত্ন একটু বেশী করতে হচ্ছে।

 

শিবগঞ্জ উপজেলার রহবল ব্লকে কর্মরত উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মো. সাইফুর রহমান বলেন, জিরা একটি অতি মূল্যবান এবং চ্যালেঞ্জিং মসলা জাতীয় ফসল। গত বছর থেকে জিরার চাষাবাদ সমপ্রসারণের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। জিরা ফসলের রোগবালাই অন্যান্য মসলা জাতীয় ফসলের তুলনায় একটু বেশী হয়ে থাকে। এ জন্য জিরা চাষে নিবিড় পরিচর্যার প্রয়োজন। জিরার রোগবালাইয়ের আক্রমণ প্রতিরোধে নিয়ম অনুযায়ী বালাইনাশক স্প্রে করতে হয়। এখন পর্যন্ত আমার ব্লকে চাষকৃত জিরার অবস্থা বেশ ভালো। প্রতিটি গাছে ফুল-ফল চলে এসেছে। কোন ধরনের প্রাকৃতিক প্রতিকুলতা না আসলে অগামী এক মাসের মধ্যে জিরা সংগ্রহ করা যাবে।

 

উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আল মুজাহিদ সরকার বলেন, মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারন প্রকল্পের আওতায় প্রদর্শনী আকারে জিরার চাষাবাদ হচ্ছে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায়। জিরার চাষাবাদ এ বছর স্বল্প পরিসরে হলেও আমাদের বাস্তবায়িত প্রদর্শনী থেকে উৎপাদিত জিরা বীজ হিসেবে ব্যবহার করে আগামী মৌসুমে এর আবাদ বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। আশা করছি ফলন ভালো হলে চলতি বছরের চেয়ে আগামীতে বগুড়ায় জিরার চাষ বৃদ্ধি পাবে।

 

ভোরের আকাশ/মি

মন্তব্য

Beta version