-->
শিরোনাম

লাল মরিচের বাম্পার ফলনে লাভবান চরাঞ্চলের কৃষকেরা

বগুড়া প্রতিনিধি
লাল মরিচের বাম্পার ফলনে লাভবান চরাঞ্চলের কৃষকেরা
উৎপাদিত মরিচগুলো শুকানোর কাজ চলছে

বগুড়া জেলার পূর্ব বগুড়ার যমুনা নদীর চরাঞ্চলে মরিচ এখন কৃষকের প্রধান অর্থকরী ফসলে পরিণত হয়েছে। যার কারণে প্রতি বছর বাড়ছে মরিচের আবাদ। তবে কৃষক বলছে চাষ এবং ফলন বেশি হওয়ায় এবার মরিচের দাম গত বছরের তুলনায় কম। তারপরেও মরিচ চাষে তারা লাভবান।

 

বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলার যমুনা নদীর চরাঞ্চলে প্রতিবছরই ব্যাপক মরিচ চাষ হয়ে থাকে। উৎপাদিত এই মরিচের বেশি অংশ শুকানোর পর চলে যায় দেশের বিভিন্ন মসলা প্রস্তুতকারী কোম্পানিতে। বগুড়ার মরিচের রং এবং ঝাল বেশি হওয়ায় এর চাহিদাও বেশি। যার কারণে কোম্পানিগুলো মরিচ কেনার জন্য প্রতিনিধির মাধ্যমে মৌসুমের শুরু থেকেই তৎপরতা চালাতে থাকে।

 

সরেজমিনে যমুনার চরাঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, মাঠের পর মাঠ কাঁচা মরিচ পেকে লাল টুকটুকে রং ধারন করেছে। নারী-পুরুষ জমি থেকে মরিচ তোলার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। যমুনার চরাঞ্চলের পাকা শুকনা মরিচ মানে সোনার ফসল। বগুড়ার মরিচের খ্যাতি দেশ জোড়া। বগুড়ার যমুনার চরাঞ্চলে এখন শুকনা মরিচ উত্তোলন, বাছাই উৎসবে মেতে উঠেছে শত শত নারী শ্রমিক। এখন রবি মৌসুমের মরিচ গাছ থেকে উঠানো প্রায় শেষ পর্যায়ে।

 

সারিয়াকান্দিতে যমুনার চরের কৃষকের উঠান, বাড়ির চালা মরিচে লাল হয়ে গেছে। মরিচ নিয়ে চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। কোথাও চলছে মরিচ উঠানোর কাজ। আবার কোথাও উঠানো শেষ। এদিকে মরিচ সংগ্রহের জন্য চরগুলো চষে বেড়াচ্ছে ফুড প্রোসেসিং কোম্পানির প্রতিনিধিরা।

 

বগুড়া কৃষিবিভাগ সূত্রে জানা যায়, বগুড়ায় এবার রবি মৌসুমে ৫ হাজার ৭১৮ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে। যার ৮০ ভাগ চাষ করা হয়েছে যমুনা নদীর চরাঞ্চলে। গত বছর চাষ করা হয়েছিল ৫ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে। ফলন ভালো এবং দাম বেশি পাওয়ার কারণে এবার কৃষক অন্য ফসলের পরিবর্তে মরিচ চাষ করেছে বেশি।

 

গাবতলী উপজেলার সাবাসপুর গ্রামের মরিচ ব্যবসায়ী আব্দুল হালিম বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার মরিচের দাম কম। এবার তিনি মৌসুমের শুরুতেই ২ হাজার ৫০০ টাকা মন দরে লাল মরিচ কিনছেন। তিনি বলেন, গতবছর এই সময়ে মরিচ কিনেছিলেন ৩ হাজার ৫০০ টাকা মন দরে। এক মন লাল মরিচ শুকিয়ে ৮ থেকে ১০ কেজি শুকনা মরিচ পাওয়া যায়। গত বছর তিনি ২০০ টন শুকনা মরিচ ঢাকার বিভিন্ন মসলা প্রস্তুত কোম্পানিতে সরবরাহ করেছেন। এবার মরিচের দাম কম থাকায় টার্গেট নিয়েছেন ৪০০ মেট্রিকটন শুকনা মরিচ সরবরাহ করবেন। তিনি বলেন, গত বছর শুকনা মরিচ ১৬ থেকে ১৭ হাজার টাকা মন দরে বিক্রি করেছেন। এবার শুকনা মরিচের দাম ১২ হাজার টাকা মন।

 

সারিয়াকান্দি উপজেলার যমুনার চরের মরিচ চাষী জব্বার ব্যাপারী ও সলেমান ফকির বলেন, কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় তারা অন্য ফসল চাষ করা ছেড়ে দিয়ে মরিচ চাষ করেছেন। তারা বলেন, চরে এত বেশি মরিচ চাষ এবং ফলন হয়েছে তাতে দাম গত বছরের তুলনায় কম। তারপরেও মরিচ বিক্রি করে তারা লাভবান।

 

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বগুড়া অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক সরকার শফি উদ্দিন আহমদ বলেন, এবার আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় মরিচের জমির ক্ষতি হয়নি। ফলনও হয়েছে ব্যাপক। ৫ হাজার ৭১৮ হেক্টর জমি থেকে মরিচ শুকনা আকারে ১৮ হাজার ৫২৫ মেট্রিক টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও তা ছাড়িয়ে যাবে এবার।

 

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version