-->
শিরোনাম

ক্যাপসিকাম চাষে স্বাবলম্বী হাবিব

কামরুল হাসান রুবেল, সাভার (ঢাকা)
ক্যাপসিকাম চাষে স্বাবলম্বী হাবিব
ক্যাপসিকাম চাষী হাবিব

ঢাকার ধামরাই উপজেলার রোয়াইল ইউনিয়নের আটিমাইঠান গ্রামে ক্যাপসিকাম চাষ করে বাজিমাত করেছেন হাবিব। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একাউন্টিং বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করে চাকুরির পিছনে না ছুটে কৃষি পেশায় নিজেকে সম্পৃক্ত করেন হাবিব।

 

চাষ তো দূরের কথা এখনো আটিমাইঠান গ্রামের মানুষ ক্যাপসিকামের নামটাও ঠিকমতো জানে না। কীভাবে খেতে হয় তাও জানা নেই তাদের। কিন্তু সে গ্রামেরই যুবক হাবিব ক্যাপসিকাম চাষ করে ধামরাই উপজেলায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

 

হাবিব বলেন, আমি চার বছর ধরে ক্যাপসিকাম চাষ করছি। এবছর ফলন ভালো হয়েছে। ক্যাপসিকাম বিক্রি করে অনেক লাভবান হবো। বাজারে এবার দাম ভালো। এভাবে দাম ভালো থাকলে আগের তুলনায় বেশি লাভের আশা করছি। আগামী তিন মাসেই ৮ লাখ টাকার ক্যাপসিকাম বিক্রি করতে পারবো।

 

হাবিব আরও বলেন, মানুষের ভিড় হয় জমির ক্যাপসিকাম দেখতে এবং চাষ শিখতে। আমি ক্যাপসিকামের বীজ এনেছি ভারত থেকে। এবার পরিচর্যা ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গাছের চারা কোনো ক্ষতি হয়নি। গাছ থেকে ফল সংগ্রহ চলছে। প্রতি গাছে এখন ৮ থেকে ১০ টি ফল আছে। ৫-৬টি ফলে ১ কেজি হচ্ছে। পাইকারি এই ফল ঢাকা সহ বিভিন্ন জেলায় পাইকারদের অর্ডারে পাঠিয়ে দেই ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি দামে।

 

জানা গেছে, খাবারে বাড়তি স্বাদ যোগ করতে ক্যাপসিকাম ব্যবহার করা হয়। বাজারে সবুজ, লাল, হলুদ এই তিন রঙের ক্যাপসিকাম পাওয়া যায়। প্রতি ১০০ গ্রাম ক্যাপসিকামে ৮৬০ মিলিগ্রাম প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও ভিটামিন সি থাকে। এছাড়া এতে ভিটামিন বি, ই, কে, থিয়ামিন, ফলিক অ্যাসিড, রাইবোফ্লাভিন ইত্যাদি পাওয়া যায়। সবুজ ক্যাপসিকাম একটু অল্প বয়সীদের জন্য উপকারী। এতে ক্যাপসাইসিনস নামক এক ধরনের উপাদান থাকে, যা ডিএনএর সঙ্গে যুক্ত হয়ে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদানের সংযুক্ত হওয়াতে বাধা দেয়। এটি ক্যান্সার প্রতিরোধে কাজ করে। এ ছাড়া ক্যাপসিকাম মাইগ্রেন, সাইনাস, সংক্রমণ, দাঁতে ব্যথা ইত্যাদি ব্যথা দূর করে।

 

ক্যাপসিক্যাম ক্ষেতে আসা দর্শনার্থী খালেদ বিন আব্দুল আজিজ বলেন, নতুন একটি সব্জি চাষ করেছে আমাদের ধামরাইয়ে ছোট ভাই হাবিব। দেখে খুবই ভালো লাগছে। অনেক লাভবানও হচ্ছে সে।

 

ধামরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুর রহমান জানান, ক্যাপসিকাম চাষে ধামরাইয়ে ৫/৬ জন তরুন উদ্যোগক্তা অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন। আমদানি ক্যাপসিকামের তুলনায় আমাদের উৎপাদিত ক্যাপসিকামের গুণগত মান অনেক ভালো। ফলে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এটি বিদেশে রপ্তানির সম্ভাবনা রয়েছে। আগামীতে পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ এই চাষ বাড়াতে পরামর্শের পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকার কৃষককে ক্ষেত পরিদর্শনে এনে উৎসাহিত করা হবে।

 

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version