-->
শিরোনাম

আগাম আনারস আবাদে আগ্রহী কৃষক

জাহিদুল কবির, মধুপুর (টাঙ্গাইল)
আগাম আনারস আবাদে আগ্রহী কৃষক
ক্যাপশন: আনারস ঝুড়ির্ভতি করতে ব্যস্ত কৃষকেরা

টাঙ্গাইলের মধুপুরে আগাম আনারস আবাদে আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকেরা। রমযানে বাঙ্গালির রসনা বিলাসে আনারস যোগ করার জন্য পরিচর্যা করছেন নিয়মিত। মধুপুরের পাহাড়ী অঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে এমন দৃশ্য।

 

মধুপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, মধুপুরে চলতি মৌসুমে ৬ হাজার ৮৪০ হেক্টরে আনারস আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে ক্যালেন্ডার, জলডুগি ও এমডি-টু জাতের আনারস রয়েছে। চলমান সময়ে জলডুগি আনারস বাজারে আনার জন্য কৃষকরা মেতে উঠেছেন। মধুপুরে চলতি মৌসুমে ৩২৪ হেক্টর জমিতে জলডুগি আনারস আবাদ হয়েছে।

 

ব্যবসায়ি রফিকুল ইসলাম জানান, ৯০ লাখ টাকা দিয়ে ৩ লাখ ৭০ হাজার আনারস কিনেছি। সেই আনারসগুলো বাজারজাত শুরু করেছি। ঢাকা, চাটমোহর, উত্তরবঙ্গসহ বিভিন্ন জেলায় আনারস বিক্রি হচ্ছে। জলডুগি প্রতিটি আনারস খেতেই বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে।

 

তিনি বলেন, ‘রোজা শুরু অইলে আনারসের টান থাকবো বেশি। তখন আনারস খেতেই বিক্রি অবো ৩০-৩৫ টাকা দরে।’ এমন অনেক ব্যবসায়ি কৃষকের নিকট থেকে আনারস চারা কিনে তাতে হরমোন কীটনাশক প্রয়োগ করে আনারস পরিপক্ক করে বাজারে বিক্রি শুরু করেছেন।

 

সরেজমিনে, মধুপুরের ইদিলপুর, দোখলা তালতলা, কাইলাকুড়ি, হাগুড়াকুড়ি, শোলাকুড়ি, ঘুঘুর বাজার, গায়রা গ্রামে ঘুরে বিভিন্ন বাগানেই দেখা যায় শ্রমিকরা আনারসে রাসায়নিক স্প্রে করছেন। হায়দার আলী, নূরুন নাহার বেগম, আব্দুস সামাদ, শুকুমার, সবুজ মিয়া, রিপনসহ অনেকেই আনারস আবাদের বর্ণনা দেন।

 

ইদিলপুরের নূরুন নাহার বেগম ও শুকুমার চন্দ্র বলেন, ‘আনারস গাছে কোন দিনই একসাথে সবগাছে ফল ধরবোনা। কিছুকিছু গাছে ফল ধরবো, আর পাকপো। ওই আনারস খাইতে স্বাদও বেশি, মিষ্টিও বেশি। শিয়ালসহ বিভিন্ন পশু পাখিয়ে আনারস খাওনে ক্ষতিও বেশি হচ্ছে।’

 

শুকুমার আরো বলেন, ‘আনারসের চারা বড় অইলে গাছের মাথায় গর্ভবতী দিলে কয়দিন পরেই সবগাছে গুটি ধরে। যেগাছে গুটি ধরেনা সেই গাছে আবার গর্ভবতী দিলেই গুটি বাইর অয়। তারবাদে ১৫/১৬দিন পরপর দুইবার/ তিনবার হরমোন দেই। আনারস বড় অয়। পাকানির ওষুধ দিলে ঝাত কইরা একবারে পাকে। এক মুহি থিকা কাটি আর বেচি।’

 

দোখলা তালতলা এলাকায় কর্মরত শ্রমিক হায়দার আলী ও আব্দুস সামাদ বলেন, ‘১৬ লিটার পানির কন্টেইনারে দুই বোতল/ তিন বোতল রাইপেন মিশাইয়া আনারসে স্প্রে করতাছি। ৫/৭ দিনের মধ্যেই দারুণ কালার অইয়া পাইকা যাবো। কয়দিন আগে যে আনারসে ওষুধ দিছি হেগনা (ওইগুলো) খেতেই বেচা অইতাছে।’

 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন রাসেল বলেন, মধুপুরের আনারস খুবই সুস্বাদু। বর্তমানে ক্যালেন্ডার, জলডুগি ও এমডিটু জাতের আনারস আবাদ হচ্ছে। অনেকে আনারস পাকানোর ওষুধ ব্যবহার করে ক্ষতির মুখে পরছেন। আমরা কৃষকদেরকে সচেতন করতে চেষ্টা করছি। যাতে তারা রাসায়নিক দ্রব্য নিয়মমত ও মাত্রা মেনে ব্যবহার করে। এই রাসায়নিক না ব্যবহার করলেও ক্ষতি নেই। নিয়ম মানলে কৃষকের লাভও হবে। ভোক্তারাও সুস্বাদু আনারস খেতে পারবেন।

 

ভোরের আকাশ/মি

মন্তব্য

Beta version