-->
শিরোনাম

বাড়ছে বাউ চিকেনের চাহিদা

গড়ে উঠছে বাণিজ্যিক খামার

রানা হামিদ, বদলগাছী (নওগাঁ)
বাড়ছে বাউ চিকেনের চাহিদা
ক্যাপশন: বাউ চিকেন খামারী রেনুকা বেগম

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভাবিত নতুন জাতের মুরগি ‘বাউ চিকেন’ সাড়া ফেলেছে বদলগাছী এলাকায়। খেতে দেশি মুরগির মতোই স্বাদ হওয়ায় বাড়ছে বাউ চিকেনের চাহিদা। গড়ে উঠছে বাণিজ্যিক খামারও। নতুন জাতের এই মুরগি পালন করে বাজিমাত করেছেন বদলগাছী উপজেলার প্রান্তিক খামারী ফেরদৌসী, রিমা, রেনুকা, শামিমা'র মত অনেকেই। তাদের সাফল্যে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন এলাকার আরও অনেকেই।

 

দেশি মুরগির দাম খুবই চড়া। অনেকটা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। এমন বাস্তবতায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক কয়েক বছর আগে ‘বাউ চিকেন’ নামে নতুন একটি মুরগির জাত উদ্ভাবন করেন। এই মুরগির মাংসের স্বাদ অনেকটা দেশি মুরগির মতোই। দেশীয় জলবায়ুর সাথে মানানসই বাউ চিকেন পালন করে সাড়া ফেলেছেন বদলগাছী উপজেলার কোমারপুর গ্রামের খামারি রেনুকা বেগম। চাহিদা বেশি থাকায় মুনাফাও হচ্ছে ভালো।

 

বাউ চিকেন খামারী রেনুকা বেগম বলেন, ৪৫ দিনে এই মুরগি ৯’শ থেকে ১ কেজি ২০০ গ্রাম ওজন হয়। লাভও বেশি, দেশি মুরগির স্বাদ আর এই বাউ মুরগিরও স্বাদ একই রকম। ব্রয়লার, সোনালী কিংবা পাকিস্তানী জাতের চেয়ে এই মুরগিতে রোগবালাই কম। ওষুধ তেমন একটা লাগে না। রোগবালাই দেশি মুরগির মতনই। এই জাতের মুরগি পুষে আমরা লাভবান হয়েছি। এই এলাকার আরও প্রায় ১৫ খামারীরা ইতিমধ্যে বাউ চিকেনের খামার গড়ে তুলেছেন।

 

সরকারের পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় বাউ চিকেন পালনে খামারীদের প্রশিক্ষণ প্রদানসহ সার্বিক সহযোগিতা দিচ্ছে স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থা মৌসুমী। পাশাপাশি পরামর্শ দিচ্ছে প্রাণিসম্পদ বিভাগও। দেশি মুরগির চেয়ে বাউ চিকেনের দাম কিছুটা কম। নতুন জাতের এ মুরগি জেলার মাংসের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

 

মৌসুমীর প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নূর হোসেন বলেন, ‘ব্রাউ ব্রো’ বা ‘বাউ মুরগি’ পালন করে আমার উপজেলায় অনেকেই লাভের মুখ দেখেছে। ব্রয়লার মুরগি অনেকের কাছেই অপছন্দের। সেখানে বাউ মুরগি তাদের কাছে খুবই পছন্দের মুরগি হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। খেতেও দেশি মুরগির মতো স্বাদ। আমি নিজেও অনেকগুলো খামার পরিদর্শন করেছি। এ মুরগিতে রোগ-বালাই খুবই কম হয়ে থাকে। উন্নত এ মুরগির জাতকে ছড়িয়ে দিতে কাজ করে যাবো।

 

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. মো. নাজমুল হক বিপিএএ বলেন, বাউ চিকেন জাতের মুরগির স্বাদ দেশী মুরগির মতো। সোনালি মুরগির ৯’শ গ্রাম-১ কেজি হতে ৬০-৬৫ দিন সময় লাগে। অথচ বাউ চিকেনের ৪৫ দিন সময় লাগে। ফলে ১৫-২০ দিনের খাবারের খরচ কমে যায়। এদিকে বাউ চিকেন জাতের মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলক ভালো হওয়ায় খামারি ও ভোক্তা পর্যায়ে এর চাহিদাও বেশি।

 

তিনি আরো বলেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মাধ্যমে খামারি পর্যায়ে এই জাতের মুরগি সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে, ফিড কস্ট কম হওয়ায় খামারিরা আর্থিকভাবে লাভবান হবে। স্থানীয় এনজিও মৌসুমী প্রশিক্ষণের পাশাপাশি পরামর্শ প্রদান করছে। তাদের সাধুবাদ জানাই এবং সর্বোপরি আমাদের সহযোগিতা থাকবে।

 

ভোরের আকাশ/মি

মন্তব্য

Beta version