-->
শিরোনাম

পৌর এলাকায় যত্রতত্র ময়লার ভাগার

হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
পৌর এলাকায় যত্রতত্র ময়লার ভাগার
ক্যাপশন: বেইলী ব্রীজে পৌর এলাকার ময়লা ফেলা হচ্ছে

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর পৌর এলাকায় যত্রতত্র ময়লার ভাগার গড়ে উঠেছে। পরিচ্ছন্নতাকর্মী কাগজে-কলমে ২৪ জন থাকলেও কাজ করেন ৫জন। ২০০৬ সালে ৫.৪৬ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত পৌরসভাটি ২০১৬ সালে ’বি’ গ্রেডে উন্নীত হয়। কিন্ত দীর্ঘ ১৮ বছরেও সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবে পৌরবাসী পরিচ্ছন্নতার সুফল পায়নি।

 

দু’মেয়াদে মেয়র নির্বাচিত হন আ.লীগের দলীয় মনোনয়ন পাওয়া বর্তমান মেয়র আব্দুল কাইয়ুম খোকন। দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার আগে যদিও তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আবার তিনি মেয়র পদে নির্বাচিত হলে ডামিং ষ্টেশন স্থাপনসহ আধুনিক বর্জ্য ব্যস্থাপনার ব্যবস্থা করবেন। দ্বিতীয় মেয়াদের ২ বছর অতিবাহিত হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

 

দু’টি ভার্গার ট্রাক থাকলেও ১টি ট্রাক ব্যবহার করা হয়। আরেকটি ট্রাক খোলা জায়গায় দীর্ঘদিন যাবৎ ফেলে রাখায় সেটিও নষ্ট হয়ে ব্যবহার অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। পৌর এলাকাটি ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত হলেও অধিকাংশ এলাকাই এখনো গ্রামই রয়ে গেছে। কিন্তু পৌর এলাকার মধ্যে ৮নং, ৭নং, ১নং, ২নং, ৩নং ও ৫নং ওয়ার্ডের বেশির ভাগ অংশই বাজার সংশ্লিষ্ট ও আবাসিক এলাকা হওয়ায় সেখানকার ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গায় কোন ডাস্টবিনই নেই। ফলে বাসাবাড়ি ও দোকানপাটের ময়লাগুলো প্রতিদিন উন্মুক্ত স্থানে ফেলে রাখা হয়। যা পরদিন সকাল ৮টার পর একটি পিকআপ গাড়িতে ৪-৫ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী ব্রহ্মপুত্র নদে ফেলে নদ ভরাট করছে। অন্য দিকে নদের পানি নষ্ট করে পরিবেশ বিনষ্ট করছে।

 

পৌর এলাকায় বসবাস করা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ মূল সড়কের শুধুমাত্র হাসপাতাল চৌরাস্তা থেকে মিষ্টিপট্রি পর্যন্ত ৫০০-৬০০ ফুট রাস্তা একজন ঝাড়ুদার রাতে ঝাড়ু দিয়ে থাকেন। এছাড়া বাকি রাস্তায় ঝাড়ু দেওয়া হয় না। ব্যবসায়ীগণ তাদের দোকানের সামনের অংশ নিজ উদ্যোগে পরিষ্কার করে থাকেন। রাস্তায় ধুলোবালু অল্প বৃষ্টিতে কাঁদায় পরিণত হয়ে পানি প্রবাহের পথ বন্ধ করে দেয়। ফলে উনিশ শহর প্রকল্পের আওতায় রাস্তাগুলো ড্রেনের পানি জমে ডেমেজ হয়ে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

 

সরেজমিনে কথা হয় কুড়িঘাট বধ্যভূমি এলাকার ব্যবসায়ী মা কসমেটিকস এর মালিক মো. রুহুল আমিন, আশরাফ পেপারের মালিক অবসর প্রাপ্ত সৈনিক আশরাফ আহমেদ, নতুন বাজার ফল ব্যবসায়ী মো. লাল মিয়া, কেন্দ্রীয় ঈদগা সংলগ্ন হোটেল ব্যবসায়ী মো.মানিক মিয়াসহ অন্তত ২০জন ব্যবসায়ীদের সাথে। তাদের অভিযোগ হোসেনপুর নতুন বাজার থেকে হাসপাতাল চৌরাস্তা পর্যন্ত এ রাস্তাটি পৌর এলাকার মূল সড়ক হলেও এখান দিয়ে কোনো দিন ঝাড়ু দিতে দেখেননি তারা। এ রাস্তা দিয়ে বালুবাহি লরি ট্রাক, বাসসহ ছোট বড় অসংখ্য গাড়ি চলাচল করায় শুকনো মৌসুমে ধুলোবালির কারণে শ্বাসকষ্টসহ নানাবিধ সমস্যা হচ্ছে।

 

২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. শাহজাহান আলম কাজলকে এ বিষয়ে মুঠোফোনে আলাপ হলে তিনি ক্ষেপে গিয়ে বলেন, মেয়র কোনো ঝাড়ুদার নিয়োগ না দিলে আমাদের কী করার আছে। ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. লুৎফুর রহমান রাসেলকে এ বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে মেয়রের সাথে কথা বলতে হবে।

 

প্যানেল মেয়র নাজমুল হক লিমন বলেন, বৃষ্টির আগেই ড্রেনগুলো পরিষ্কার করা জরুরি। প্রতিদিনের পৌর এলাকার ময়লা ব্রহ্মপুত্র নদে ফেলে নদের পানি নষ্ট হচ্ছে। হোসেনপুর ইউএনও অনিন্দ্য মন্ডল বলেন, মেয়রকে প্রতিমাসেই মাসিক সভায় উপস্থিত হওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হলেও তিনি সেখানে উপস্থিত হন না। তিনি যদি ডাম্পিং এর বিষয়ে আমাদের সহায়তা নিতে চান তা হলে আমরা এ বিষয়ে চিঠি লিখে সরকারীভাবে সহায়তা করতে পারি।

 

পৌর মেয়র আব্দুল কাইয়ুম খোকন বলেন, ঝাড়ুদার পাওয়া যায়না। এছাড়াও এটি একটি ছোট পৌরসভা এখানে তেমন কোন আয় না থাকায় এত কিছু করা সম্ভব নয়। এছাড়াও ডাম্পিং ষ্টেশন না থাকায় ময়লা কোথায় ফেলবো।

 

ভোরের আকাশ/মি

 

মন্তব্য

Beta version