ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের খানপুর গ্রামে গভীর রাতে পাশের বসত ঘরে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে দেখে রিকশাচালক স্বামী ও ঘুমিয়ে থাকা দুই শিশুসন্তানকে উঠিয়ে নিয়ে ঘর থেকে বের হন শিরিনা আক্তার। এ সময় আগুন নেভাতে ও জিনিসপত্র বের করতে এগিয়ে যান তিনি। তবে কখন যে শিশু আল-আমীনও (৮) ঘরে প্রবেশ করে তা কেউ দেখেনি। প্রায় দুই ঘণ্টা পর অন্যান্য জিনিসের সঙ্গে পুড়ে ছাই হওয়া আল-আমীনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আগুনের ঘটনায় দুটি বসতঘর, গোয়ালঘর ও দুটি গরু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। অসহায় দরিদ্র পরিবার এখন খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে।
আজ রোববার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই গ্রামের রিকশাচালক মো. জুয়েল মিয়ার বসত ঘরের পাশেই দিনমজুর নূরুল হকের বসত ঘরে একটি গোয়ালঘরে আগুন লাগে। মুহূর্তেই সেই আগুন অন্যান্য ঘরেও ছড়িয়ে পড়ে। আর্তচিৎকারে প্রতিবেশীসহ এলাকার লোকজন আগুন নেভাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
রিকশাচালক জুয়েল জানান, মাত্র কয়েক দিন আগেই নিজের বসতঘরটি নির্মাণ করা হয়। এখনো কাজ অসমাপ্ত রয়েছে। ঘুম থেকে জেগে দেখেন পাশের ঘরে আগুন লেগেছে। তখন আতঙ্কে তিনি স্ত্রী-সন্তানসহ ঘর থেকে বের হন। ওই সময় স্ত্রী শিরিনার কোলে ও হাতে ছিল দুই শিশু। একপর্যায়ে ছোট শিশুকে অন্য একজনের কাছে দিলেও হাত ধরা অপর শিশু আল-আমীন হাত ছেড়ে চলে যায়। স্ত্রীকে নিয়ে তিনি অন্যদের সঙ্গে আগুন নেভাতে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন।
এভাবেই প্রায় ঘণ্টাখানেক চলার পর খোঁজ নিয়ে দেখেন, শিশু আল-আমীন নিখোঁজ। অনেক খুঁজেও তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। প্রায় দুই ঘণ্টা পর আগুন নিভে গেলে দেখা যায়, আগুন লাগা ঘরের সব কিছুই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ওই সময় ঘরের ভেতরে আগুনে পোড়া চৌকির নিচে দেখা যায়, ছেলে আল-আমীন পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে। তার সঙ্গে পাশেই গোয়ালঘরে দুটি গরু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
অন্যদিকে নিহত শিশুর বাবা জুয়েল দ্বগ্ধ হওয়ায় চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ভোরের আকাশ/ সু
মন্তব্য