পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা খাদ্যগুদাম ঘাটে ৪৬ বছরেও নির্মাণ হয়নি টেকসই জেটি (ঘাট)। কাঠের পাটাতনের সাঁকো দিয়ে শ্রমিকদের জাহাজ থেকে খাদ্যগুদামের পণ্য নিয়ে ওঠানামা করতে হয়। এতে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের পাশাপাশি নিরাপত্তাঝুঁকিতে থাকতে হয় তাদের। সংকট নিরসনে দ্রুত টেকসই জেটি নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা। এদিকে দুর্ভোগের কথা স্বীকার করেছে খোদ খাদ্য বিভাগও। তাদের দাবি, উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে। দ্রুত স্থায়ী জেটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
জেটি থেকে গুদাম পর্যন্ত ২০০ মিটার রাস্তায়ও দুর্ভোগ পোহাতে হয় শ্রমিকদের। মাটির রাস্তায় ইটের খোয়া দিয়েই দায় সেরেছে কর্তৃপক্ষ। এর ফলে পণ্য নিয়ে চলা গাড়িগুলো প্রায়ই বিপাকে পড়ে। বর্ষাকালে এই দুর্ভোগ বেড়ে যায় কয়েকগুণ।
খাদ্যগুদাম সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৭ সালে পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্রে ও আন্ধারমানিক নদীসংলগ্ন উপজেলা খাদ্যগুদামটি প্রতিষ্ঠিত হয়। বছরে ১০ হাজার টন গম/চাল ওঠানামা করা হয় ওই জেটি দিয়ে। কিন্তু টেকসই জেটি না থাকায় জাহাজ থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পণ্য ওঠানামার কাজ করছেন শ্রমিকরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলা খাদ্যগুদাম ঘাটে মালবাহী জাহাজ নোঙর করা আছে। ভেঙে যাওয়া জেটিতে কোনো রকম সিমেন্টের স্লাবের ওপর কাঠের তক্তার পাটাতন দিয়ে জেটি নির্মাণ করা হয়েছে। তার ওপর দিয়ে শ্রমিকরা মাথায় করে চালের বস্তা নামাচ্ছেন। নিচে নড়বড়ে পাটাতন মাথায় চালের বস্তার বোঝা নিয়ে সারাক্ষণ দুর্ঘটনার আশঙ্কায় থাকতে হয় তাদের।
জাহাজ থেকে চাল নামানোর কাজ করেন শ্রমিক আব্দুল মালেক। জানতে চাইলে তিনি বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমাদের পণ্য ওঠানামা করতে হয়। উপজেলা খাদ্যগুদাম নির্মাণটি বহুদিনের পুরোনো হলেও এখন পর্যন্ত কোনো জেটি নির্মাণ করা হয়নি। এভাবে অস্থায়ী জেটিতে ভারী কাজ করা কঠিন।
দুলাল নামে আরেক শ্রমিক বলেন, বেহাল জেটির কারণে আমাদের সময়ও খরচ হয় দ্বিগুণ। চাইলেও আমাদের পক্ষে দ্রুত করা সম্ভব হয় না। এর ফলে আমাদের একদিকে বাড়তি পরিশ্রম, অন্যদিকে নিরাপত্তাঝুঁকির মধ্যে থাকতে হয়।
জানতে চাইলে কলাপাড়া পৌর মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদার বলেন, খাদ্যগুদাম এলাকাটি এমনিতেই সংরক্ষিত। এটি পৌরসভার আওতাভুক্ত নয়। এর ফলে আমাদের পক্ষে কোনো প্রকল্প নেওয়া কঠিন।
কলাপাড়া নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে আমার কোনো ধারণা নেই। এর ফলে খাদ্যগুদামে স্থায়ী জেটি না থাকার কারণে চলমান দুর্ভোগের বিষয়ে অবগত নই।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. নুরুল্লাহ বলেন, জেটি না থাকায় জাহাজ থেকে মালামাল নিয়ে ওঠানামা করতে শ্রমিকদের বেশ সমস্যা হয়। দ্রুত জেটি নির্মাণ করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তবে স্থায়ী জেটি নির্মাণে কিছুটা সময় লাগবে।
ভোরের আকাশ/ সু
মন্তব্য