রমজান ঘিরে বরিশালে বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে ছোলা, ডাল ও আলুর দামে বেড়েছে ১০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। গত বছরের তুলনায় এ বছর দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে খেজুর। ভোক্তারা বলছেন, দুই দিন পরপর লোক দেখানো অভিযান কোনো কাজেই আসছে না। গতকাল মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে পবিত্র মাহে রমজান। আর এই সময়ে ভোক্তার চাহিদাকে টার্গেট করে অস্থির বরিশালের নিত্যপণ্যের বাজার।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৯৫ টাকার ছোলা ঠেকেছে ১১০ টাকায়। এক লাফে ৪০ টাকা বেড়েছে মুগ ডালে। বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায়। বাজারে খেসারি বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। মুড়িতে কেজি প্রতি বেড়েছে ১০ টাকা। চিড়ার কেজি ৬০ টাকা ও চিনি ১৪০ টাকা। এদিকে কেজি প্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে ফলের দাম। পাঁচ টাকা বেড়ে আলুর কেজি ৩৫ টাকা। তবে দাম কমেছে সয়াবিন তেলের। ১৭৩ টাকার পরিবর্তে বিক্রি হচ্ছে ১৬২ টাকায়।
এছাড়া খেজুরের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। মরিয়ম ১১৫০ টাকা, আজোয়া ১১৫০ টাকা, ডাল খেজুর ৬৫০ টাকা, নাগাল ৬৫০ টাকা, বড়ই খেজুর ৪৮০ টাকা, দাবাস ৫৮০ টাকা, ছালবি ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গতবারের তুলনায় দ্বিগুণ।মুদি দোকানের বিক্রেতারা জানায়, পাইকারি বাজার থেকে তারা যে দামে কিনে আনেন সেই দামেই বিক্রি করতে হয় তাদের। পাইকার বেশি রাখলে তাদের কিছুই করার থাকে না। বাধ্য হয়ে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের।
রহিম নামে এক ফল বিক্রেতা জানান, গতবার যে খেজুর বিক্রি করেছে ৫০০ টাকায়; এবার সেই খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়। ফলে চাহিদার তুলনায় তেমন ক্রেতাও নেই। এছাড়া সব ধরনের ফলের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা।
আর ভোক্তারা বলছেন, দুই দিন পর পর লোক দেখানো অভিযান কোনো কাজেই আসছে না। আনিস নামের এক ভোক্তা জানান, রমজানকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ায়। ব্যবসায়ীদের এমন মনোভাব কবে পরিবর্তন হবে জানা নেই।
সবুজ নামে আরেক ভোক্তা বলেন, আমরা বাজারে দায়সারা অভিযান চাই না। মিডিয়া এনে জরিমানা করলো কিন্তু পরের দিন আবারও দাম বাড়তি সেই অভিযান করে কি লাভ। কঠোর অভিযানের দাবি জানাচ্ছি বাজারগুলোতে। বাজার নিয়ন্ত্রণে ভোক্তাদেরও সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান ক্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। আর জেলা প্রশাসকের ব্যবস্থা গ্রহণের দায়সারা আশ্বাস।
বরিশাল ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক রণজিৎ দত্ত বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা যেমন সিন্ডিকেট করে ভোক্তাদেরও এখন সিন্ডিকেট করার সময় হয়েছে। ভোক্তারা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ার ভয়ে কেউ যেন পণ্য মজুদ না করে। তাহলে বাজার ক্রেতাদের নিয়ন্ত্রণে আসবে।’
বরিশালের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মনদীপ ঘরাই বলেন, ‘রমজানে বাজার মনিটরিংয়ের পাশাপাশি নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হবে।’
এদিকে, রোজার আগে বাজারে পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে ৮ ফেব্রুয়ারি চাল, চিনি, তেল ও খেজুরের শুল্ক-কর কমানোর ঘোষণা দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। তবে, বরিশালের বাজারে পণ্যের দাম না কমায় ক্ষুব্ধ ক্রেতারা।
ভোরের আকাশ/মি
মন্তব্য