বরিশাল নগরীতে রেস্তোরাঁ রয়েছে তিন শতাধিক। বাণিজ্যিক ও আবাসিক এলাকায় গড়ে ওঠা অধিকাংশৃ রেস্তোরাঁর নেই ফায়ার লাইসেন্স ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। নামমাত্র যে কয়েকটির আছে সেগুলোও নিয়ম মানছে না। অগ্নিনির্বাপণের শর্ত না মানলে রাজধানীর বেইলি রোড ট্র্যাজেডির মতো বরিশাল নগরীতেও ঘটতে পারে যেকোনো দুর্ঘটনা বলে শঙ্কা সচেতন মহলের।
বরিশাল নগরীর গির্জা মহল্লার এলাকায় হাই ভোল্টেজ বৈদ্যুতিক খুঁটির পাশে কাঁচের দেয়াল তুলে রেস্তোরাঁর ব্যবসা শুরু করেছে কাচ্চি ডাইন।
রেস্তোরাঁটি যে ভবনে করা হয়েছে সেখানে নেই জরুরি বহির্গমন পথ ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও কাগজপত্র। সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে তড়িঘড়ি করে বের করা হয় প্যাকেট করা অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র। সংশ্লিষ্টদের দাবি নতুন প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এখনো সবকিছু গুছিয়ে উঠতে পারেননি তারা।
বরিশাল কাচ্চি ডাইনের ম্যানেজার মো. এবাদাত হোসেন বলেন, আমাদের অনেক কাগজপত্র এখনও ঠিক হয়নি। আমরা এখনও প্রস্তুতি নিচ্ছি। আশা করি কয়েক দিনের মধ্যে গুছিয়ে উঠতে পারবো। এছাড়া সব কর্মচারী নতুন, তাদের অগ্নি নির্বাপণ ট্রেনিংও জরুরি।
প্রায় একই চিত্র নগরীর বিভিন্ন জায়গায় গড়ে ওঠা প্রায় দুই শতাধিক রেস্তোরাঁর। কোনো কোনো রেস্তোরাঁ আবার গড়ে উঠেছে আবাসিক ভবনে, কেউ কেউ রাস্তার ওপর গ্যাসের চুলা ও সিলিন্ডার রেখে চালাচ্ছে রান্না-বান্না। এখানকার সিংহভাগ কর্মচারীরা জানে না কিভাবে ব্যবহার করতে হয় অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র।
মালিক পক্ষের দাবি, রাস্তায় গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারে ঝুঁকি থাকলেও নেই দুর্ঘটনার আশঙ্কা। কর্মচারীরা জানায়, হাতে গোনা ৩ থেকে ৬ জন ট্রেনিং করলেও কিভাবে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র চালাতে হয় তা তারা জানে না। তবে রেস্তোরাঁ মালিকরা জানায়, কর্মচারীদের অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র চালানোর বিষয়ে দ্রুত ট্রেনিং দেয়া হবে।
এদিকে মালিক পক্ষ শঙ্কা না দেখলেও ২৪ ফেব্রুয়ারি নগরীর রূপাতলী হাউজিং এলাকায় সুগার পেস্টি অ্যান্ড ডাইন রেস্তোরাঁয় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
বরিশাল জেলা সনাক সভাপতি অধ্যাপক শাহ সাজেদা বলেন, সংশ্লিষ্টরা দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা না নিলে রাজধানীর বেইলি রোডের মতো ট্র্যাজেডি বরিশাল নগরীতেও ঘটতে পারে। তাই এখনই এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে রাজি হয়নি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মকর্তারা।
তবে নিরাপত্তার স্বার্থে অগ্নিনির্বাপণের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ রেস্তোরাঁর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানায় বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. ফজলুল করিম।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের তথ্য মতে, সর্বশেষ ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে নগরীতে ফায়ার লাইসেন্স না থাকা রেস্তোরাঁগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল। এ সময় নগরীর ৫০ শতাংশ রেস্তোরাঁর ফায়ার লাইসেন্স না থাকার তথ্য পাওয়া যায়।
ভোরের আকাশ/মি
মন্তব্য