-->
টোল আদায় অব্যাহত

ক্ষুব্ধ পরিবহন মালিক-চালক

ময়মনসিংহ ব্যুরো
ক্ষুব্ধ পরিবহন মালিক-চালক
ক্যাপশন: শম্ভুগঞ্জ ব্রিজের টোল আদায় করা হচ্ছে

ময়মনসিংহের পাটগুদাম এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর নির্মিত বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু (শম্ভুগঞ্জ ব্রিজ) দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৭ হাজার যানবাহন চলাচল করে। বর্তমানে প্রতিটি যানবাহন থেকে আকারভেদে ১৫-২৫০ টাকা করে টোল আদায় করা হচ্ছে। ব্রিজ নির্মাণ হওয়ার পর থেকে খরচের কয়েকগুণ টাকা উঠে আসলেও এখনো বন্ধ হচ্ছে না আদায়। এতে ক্ষুব্ধ পরিবহন মালিক-চালকরা।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, শত শত ছোট-বড় যানবাহন পার হচ্ছে। গাড়ির সংখ্যা বেশি হওয়ায় শ্রমিকরা দৌড়ে চালকদের কাছ থেকে টোল আদায় করছেন। কিছুক্ষণ পরপর সৃষ্টি হচ্ছে যানজট।

 

চালকরা জানান, হেভি ট্রাক ১৩৫ টাকা, মিডিয়াম ট্রাক ১০০ টাকা, মিনি ট্রাক ৭৫ টাকা, বড় বাস ৬৫ টাকা, মিনিবাস ৩৫ টাকা, মাইক্রোবাস ৪০ টাকা, প্রাইভেটকার ২০ টাকা, পাওয়ার টিলার ৬০ টাকা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে ১৫ টাকা টোল আদায় করা হচ্ছে। দিন যত যাচ্ছে ধীরে ধীরে টোলের পরিমাণ ততই বাড়ানো হচ্ছে। দিনের মধ্যে যতবার ব্রিজ পার হতে হচ্ছে, ঠিক ততবারই টোল দিতে হচ্ছে। এতে চালকদের কষ্ট হলেও বাধ্য হয়ে টোল দিতেই হচ্ছে।

 

জানা যায়, ১৯৯১ সালে ৭৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুটি। এ সেতু দিয়ে কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোণা, শেরপুর, মদন, মোহনগঞ্জ, তাড়াইল, কেন্দুয়া, কলমাকান্দা, দুর্গাপুর, বিরিশিরি, ময়মনসিংহের তারাকান্দা, ফুলপুর, হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া, গৌরীপুর, ঈশ্বরগঞ্জ, নান্দাইল, সিলেট, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলার যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ছোট-বড় ট্রাকসহ প্রতিদিন প্রায় ৭ হাজার যানবাহন চলাচল করে। নির্মাণ ব্যয়ের কয়েকগুণ টাকা উঠে আসলেও এখন পর্যন্ত চলছে টোল আদায়।

 

এই সেতু দিয়ে চলাচলকারী ইমাম পরিবহনের চালক আসিফ মিয়া বলেন, টোল আদায় বন্ধ হলে যাত্রীদের কাছ থেকে কিছু ভাড়া কম নেয়া যেতো। আমরাও নিশ্চিন্তে গাড়ি চালাতে পারতাম। কিন্তু আমাদের দাবি মানা হচ্ছে না ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, দিনের কয়েকবারই এই সেতু পারাপার হতে হয়। যতবার পারাপার হচ্ছি, ততবারই টোল দিতে হচ্ছে। যে টাকা পাই তা দিয়ে চলে না। জেলা মোটরমালিক সমিতির মহাসচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, দীর্ঘ সময়েও টোল আদায় বন্ধ না হওয়ায় ক্ষুদ্ধ এ অঞ্চলের পরিবহন মালিক, চালক ও শ্রমিকরা।

 

ময়মনসিংহ জেলা নাগরিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার নুরুল আমিন কালাম এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সেতু উদ্বোধনের পর থেকে এখনো টোল আদায় করা হচ্ছে। আদৌ টোলমুক্ত হবে কি-না তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই।

 

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগ ময়মনসিংহের নির্বাহী প্রকৌশলী কে. বি. এম. সাদ্দাম হোসেন বলেন, উদ্বোধনের পর থেকে টোল আদায় হয়ে সরকারি কোষাগারে রাজস্ব জমা হয়েছে। সবশেষ ২০২১-২০২২ অর্থবছরে তিন বছর মেয়াদে ৪৮ কোটি টাকা ইজারা দেওয়া হয়েছে। টোল আদায় বন্ধ করতে হলে মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা আসতে হবে।

 

ভোরের আকাশ/মি

মন্তব্য

Beta version