ঝালকাঠির জেলায় মুকুলে ছেয়ে যাওয়া আমগাছগুলো আলাদা শোভা ছড়িয়েছে। সবুজ পাতার কিনার ছাঁপিয়ে ওঠা মুকুলের সোনালি রেণু যেন ফুলশয্যা সাজিয়ে স্বাগত জানিয়েছে বসন্তকে।
ঝালকাঠিতে যদিও আমের ফলন কম তারপরও গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে আমের মুকুল। প্রায় সব জায়গায় চোখে পড়ছে মুকুলে ছেয়ে যাওয়া অসংখ্য আম গাছগুলো। এভাবে ফাগুনে গাছে-গাছে প্রস্ফূটিত আমের মুকুল সর্বত্র ছড়াচ্ছে স্বর্ণালি আভা।
এসেছে ঋতুরাজ বসন্ত। আগুন ঝরা ফাগুনে গাছে গাছে জেগে উঠছে সবুজ পাতা। প্রকৃতির পালা বদলে সারা দেশের ন্যায় ঝলকাঠির প্রতিটি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আমগাছগুলোতে মুকুলের মিষ্টি সুবাসে মৌ মৌ করছে প্রকৃতি।
ঝালকাঠি জেলার সদর, নলছিটি, রাজাপুর ও কাঁঠালিয়া উপজেলায় শনিবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, আম বাগানের সারি সারি গাছে শোভা পাচ্ছে কেবলই মুকুল। এ যেন হলুদ আর সবুজের মহামিলন। মুকুলে ছেয়ে আছে গাছের প্রতিটি ডালপালা। চারদিকে ছড়াচ্ছে সেই মুকুলের সুবাসিত পাগল করা ঘ্রাণ।
তবে আমের ফলন নির্ভর করছে আবহাওয়ার ওপর। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন বাগান মালিকরা।
এদিকে মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মুকুলে ভরে গেছে বাগানসহ ব্যক্তি উদ্যোগে লাগানো আম গাছগুলোতে। তবে বড় আকারের চেয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের গাছে বেশি মুকুল ফুটেছে। সেই মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে বাগান মালিকদের চোখে ভাসছে স্বপ্ন। আম্রুপালি, গোপালভোগ, ল্যাংড়া, ফজলি, ক্ষিরসাপা অন্যতম। ইতিমধ্যে এসব গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। গাছের পুরো মুকুল ফুটতে আরও কয়েক সপ্তাহ লাগবে বলে জানান বাগান মালিকরা।
আম বাগানের মালিকরা বলেন, মাঘের মাঝামাঝিতে গাছে মুকুল দেখে তারা বুঝেছেন, আমের মৌসুম এসে গেছে। গাছগুলোর যত্ন নিতে পরিশ্রম শুরু করে দিয়েছেন। ভালো ফলনের আশায় গাছে পরিচর্যায় এখনো ব্যস্ত তার। ঝালকাঠি জেলা জুড়ে ছোট গাছ কিংবা বড় গাছেও দেখা মিলেছে মুকুল ও প্রায় সব জাতের আমগাছেই মুকুল এসেছে। যার সৌন্দর্য চোখ জুড়ানো। আমগাছের শাখাগুলো ভরা উজ্জ্বল সোনালি মুকুল যেন আকাশের বুকে ডানা মেলে দিয়েছে।
কাঁঠালিয়া উপজেলার আম চাষি মো. রাজীব খান বলেন, এ বছর আমাদের বাগানে প্রচুর পরিমাণে আমের মুকুল ধরেছে। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে লক্ষাধিক টাকা লাভবান হওয়ার আশা করি। মুকুল আসার পর থেকেই গাছের প্রাথমিক পরিচর্যা শুরু করেছি। মুকুল রোগ বালাইয়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ওষুধ স্প্রে করছেন তারা।
বাগান মালিকরা আরও জানান, বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। এ অবস্থা থাকলে এবার আমের বাম্পার ফলন বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।
ঝালকাঠি জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ইসরাত জাহান মিলি বলেন, জেলায় এ বছর ২৫০ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। ফজলী, রুপালি, হিমসাগর, ব্যানানা, কাঁচা মিঠা, লকনা, আশ্বিনাসহ দেশীয় প্রজাতির নানা জাতের আম চাষ হয়েছে। কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর ঝালকাঠিতে আমের বাম্পার ফলন হবে।
ভোরের আকাশ/ সু
মন্তব্য