ঈদ আসলেই মেয়েরা ব্যস্ত হয়ে পড়তেন চাল-গমের আটার সেমাই তৈরিতে। হাতে তৈরি এ সেমাইয়ের কদর ছিল বেশ। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী খাবার এটি। এমন সেমাই ছাড়া ঈদের উৎসব যেন ফিকে। কিন্তু এখন এমন চিত্র দেখা মেলাভার। এখন বাণিজ্যিক কোম্পানিগুলোর সেমাইয়ের কারণে হাত মেশিনে তৈরি সেমাই হারিয়ে যেতে বসেছে। তবে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ সদর ইউনিয়নের গোয়ালপাড়ায় আজও সেই পুরানো দিনের হাতে তৈরি সেমাইয়ের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে।
রূপগঞ্জের গোয়ালপাড়ায় দেখা গেছে, গৃহিণী নাছিমা বেগম ও হাসিনা বেগম, এবং শিশু আলভী হোসাইন ও সাবিব মিয়া হাত মেশিনে সেমাই তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তৈরি সেমাই রোদে শুকানো হচ্ছে। একেকজন ১ থেকে ৪ কেজি পর্যন্ত ময়দা দিয়ে হাত মেশিনের সেমাই তৈরি করছেন।
মনির হোসেন জানান, বাজার থেকে যত দামি সেমাই বা লাচ্ছা কিনে আনা হোক না কেন হাত মেশিনের ময়দা দিয়ে তৈরির সেমাইয়ের মতো স্বাদ হবে না। এবার ময়দা দিয়ে তৈরি হাত মেশিনের সেমাই তিনি নিজে খাবারের জন্য রেখে একমাত্র মেয়ে জামাইয়ের বাড়িতে পাঠিয়েছেন।
হাসিনা বেগম বলেন, আমি প্রতি রমজানের ঈদে হাত মেশিনের তৈরি সেমাই তৈরিতে এলাকাবাসীকে সাহায্য করি। এবারও আমি আমার ছেলে, নাতি, নাতনি ও নাতি বউদের সেমাই তৈরিতে সহযোগিতা করছি। হাত মেশিনের সেমাই তৈরিতে আমি আনন্দ পাই।
আট বছর বয়সী ২য় শ্রেণিতে পড়ুয়া আলভী হোসাইন বলেন, এই সেমাই খেতে ভালো লাগে। পেটের কোনো সমস্যা হয় না। তাই রমজান মাসের প্রথম থেকে হাত মেশিনের সেমাই তৈরিতে মেশিনের হাতল ঘুরানোর কাজে দাদিকে সহযোগিতা করি। যেহেতু এখন স্কুল বন্ধ সেহেতু আমার কাছে এই কাজটা খুবই আনন্দের মনে হল, তাই সহযোগিতা করছি।
ভোরের আকাশ/মি
মন্তব্য