-->
শিরোনাম

ভাঙা সেতুতে বাঁশের সাঁকো, দুর্ভোগে ২০ গ্রামবাসী

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
ভাঙা সেতুতে বাঁশের সাঁকো, দুর্ভোগে ২০ গ্রামবাসী
স্থানীয় বাসিন্দারা সাঁকোতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে

উপজেলার খাগকান্দা ইউনিয়নের দুইটি সেতু চার বছর ধরে ভেঙে পড়ে থাকলেও নির্বিকার উপজেলা প্রকৌশল অফিস। স্থানীয় বাসিন্দারা ভাঙা সেতুর ওপর সাঁকো তৈরি করে তা দিয়ে চলাচল করছে। খাগকান্দা থেকে নয়নাবাদ যাওয়ার জন্য পাঁচ বছর আগে নির্মিত হয় সেতু। অথচ এক বছর যেতে না যেতেই ভেঙে পড়েছে সেতু দুটি।

 

কান্দাপাড়া মাখরাজুল উলুম মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষক মুফতি আলমগীর হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত চার বছর এই সড়কে দুটি সেতু দেবে গিয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় সেতুর ওপর বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হয় সাঁকো। এ সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার লোক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। বছরের পর বছর এই সড়কে যানবাহন না চলায় সাধারণ মানুষ পড়েছেন নানামুখী বিপাকে। হাট-বাজার, হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসায় যাতায়াতে দুর্ভোগের শিকার অন্তত ২০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। সাঁকো পার হতে গিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীসহ বেশ কিছু পথচারী নিচে পড়ে আহত হয়েছেন।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, খাগকান্দা থেকে নয়নাবাদ যাওয়ার অন্যতম সড়কে দুটি সেতু মাটিতে দেবে গিয়ে অকেজো হয়ে আছে। সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকায় হেঁটেই দীর্ঘ চার বছর ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো দিয়ে চলাচল করছেন ঐ এলাকার বাসিন্দারা।

 

জানা গেছে, এই সেতু দিয়ে নয়নাবাদ, খাগকান্দা, নয়াপাড়া, তাতুয়াকান্দা, চৌতনকান্দা, কান্দাপাড়া, পাচালি পাড়া, হোগলাকান্দি, বঙ্গবাজারসহ কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের ১০ থেকে ১৫ হাজার লোক এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করে। খাগকান্দা নয়নাবাদ এবং খাগকান্দা থেকে নয়নাবাদ পর্যন্ত সড়কের দুটি সেতু অকেজো হয়ে পড়ে আছে চার বছর যাবৎ। সেতুর দুই পাশের মাটি সরে গেছে। সেতুর ওপর দিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে লোক চলাচল করতে পারলেও যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

 

নয়নাবাদ এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, কবি নজরুল ইসলাম কলেজ খাগকান্দা মারকাজুল কোরআন মহিলা মাদ্রাসা, নয়নাবাদ পুরুষ ও মহিলা মাদ্রাসা, খাগকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নয়নাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কান্দাপাড়া মাখরাজুল উলুম মাদ্রাসাসহ প্রায় ২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার শিক্ষার্থীসহ দুই ইউনিয়নের ১০ থেকে ১৫ হাজার লোক এই পথ দিয়ে চলাচল করেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের যাতায়াতের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো পার হতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। সেতু দুটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান তিনি।

 

নয়াপাড়া গ্রামের কৃষক ইসমাইল হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকি। চার বছর যাবৎ সেতু দুটি দেবে গেলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ কেউই কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় সেতুর ওপর দিয়ে মানুষ চলাচল করার জন্য দুটি সাঁকো তৈরি করে বছরের পর বছর চলাচল করতে হচ্ছে আমাদের। জমির ফসল নিয়ে এই সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয় আমাদের। ফলে নানা সমস্যায় পড়তে হয় তাদের।

 

খাগকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান বলেন, চার বছর যাবৎ জনগুরুত্বপূর্ণ সেতু দুটি দেবে গিয়ে বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকলেও সংশ্লিষ্টরা কোনো নজরদারি করছেন না। আমি কয়েক বার উপজেলার মাসিক সভায় গ্রামের মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টি জানালেও কেউ আমলে নেয়নি। আমি চাই সেতুগুলো মেরামত করে এলাকাবাসী দুর্ভোগ লাঘব করবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

 

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version