আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে কিশোরগঞ্জ হোসেনপুরে ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত সর্বস্তরের ক্রেতাসাধারণ। দ্রব্য মূল্যের বাড়তি দামের কারণে ক্রেতা বিক্রেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া থাকলেও সার্বিকভাবে খারাপ বলা যাবে না।
রোববার হোসেনপুর বাজার ঘুরে ক্রেতা বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে দেখা যায় অন্য বছরের তুলনায় এ বছর সকল পণ্যেই বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। সকল পণ্যের দোকানে পড়েছে কেনাকাটার ভীড়। ঈদের আমেজে অনেকেই করেছেন রঙ্গিন বাতির আলোকসজ্জা। তবে জামা কাপড়, কসমেটিক ও জুতার দোকানগুলোতে ক্রেতা সমাগম অনেক বেশি। ঈদ উপলক্ষে পাঞ্জাবি, থ্রি-পিস, ক্রোকারিজ ও মুদি দোকানেও মানুষের ভিড় চোখে পড়ার মত।
হোসেনপুর বাজারের কাপড় পট্টি, ফল পট্টি এলাকার বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা যায়, সকাল ১০টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত রয়েছে ক্রেতাদের ভীড়। ঈদ কেনাকাটায় মার্কেটগুলোতে মহিলাদের সমাগম বেশি। একজন মহিলা ক্রেতা বলেন, পরিবারের কর্তা অন্য কাজে ব্যস্ত থাকায় আমি নিজেই এসেছি কেনাকাটা করতে।
তবে কাপড়ের দাম আগের চেয়ে অনেকটাই বেশি বলে মনে হচ্ছে জয়কালী বস্ত্রালয়ের মালিক জুয়েল সাহা বলেন, অন্য বছরের তুলনায় এবার বিক্রির পরিমাণ কিছুটা কম। কেননা এবার এখনো কৃষকের ঘরে ধান ওঠেনি। কিছু প্রবাসির পরিবার ছাড়া অন্যরা খুব কমই কিনছেন।
তরী বস্ত্রালয়ের মালিক মো. মাসুদ শেখ বলেন, তাঁতিদের কাছ থেকে কাপড় কিনলে এখনো আগের দামেই কাপড় কেনা যায়। দাম বেশি রাখেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। গত বছর যে কাপড় আমরা ১২শ’ টাকায় কিনতাম। এ বছর সেটি ১৪শ’ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এছাড়াও ১৫শ’ টাকার কাপড় ২ হাজার টাকায় কিনতে হচ্ছে।
ফ্যাশন মেলার মালিক আবুল বাশার জানান, মানুষের ক্রয় ক্ষমতা আগের বছরের তুলনায় অনেকটা কমে গেছে। অনেক কাস্টমার সকাল থেকে ঘুরে। কিন্তু বার বার দামাদামি করে। তাদের কষ্ট দেখে অনেক সময় খুবই সীমিত লাভ হলেই কাপড় দিয়ে দেই। যেন ঈদের আনন্দটা বাচ্চারা উপভোগ করতে পারে।
আরেক ব্যবসায়ী আব্দুল হাকিম বলেন, এবছর দেশে অভাব অনটন বেশি। কেননা দ্রব্য মূল্যের দাম অনেক বেশি। মানুষ খেয়ে-পড়ে-বেঁচে থাকাটাই কষ্টের।
অপরদিকে টেইলার্সের দোকান গুলোতে চলছে মহা কর্মযজ্ঞ। দিনরাত নির্ঘুম থেকে অর্ডারি জামাকাপড় তৈরি করে ডেলিভারি দিচ্ছেন খোকা মিয়া। তিনি বিদ্যুতের লোডশেডিং এর তীব্রতার কারণে গরমে অতিষ্ঠ।
ঈদ মার্কেটের নিরাপত্তার বিষয়ে থানার ওসি নাহিদ হাসান সুমন বলেন, আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে হোসেনপুর উপজেলায় শহর ও গুরুত্বপূর্ণ মার্কেটগুলোতে চুরি ছিনতাইসহ সকল ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা রুখতে থানা পুলিশ বিশেষ তৎপর রয়েছে। এছাড়া রাস্তায় যানজট ও আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
ভোরের আকাশ/মি
মন্তব্য