-->
শিরোনাম
অযত্ন অবহেলায় বেড়ে উঠা

ভাঁটফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ পথচারিরা

শিরিন জামান, চুয়াডাঙ্গা
ভাঁটফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ পথচারিরা
ক্যাপশন: চুয়াডাঙ্গা-দর্শনা সড়কের দু’ধারে ভাঁট ফুলের সমারোহ

চুয়াডাঙ্গায় আঞ্চলিক মহাসড়ক ও গ্রাম্য মেঠোপথের দু’ধারে অযত্নে ও অবহেলায় বেড়ে ওঠা গ্রাম বাংলার অতি পরিচিত দীর্ঘজীবী বুনো পুষ্পজাতীয় উদ্ভিদ ভাঁটফুল শোভা ছড়াচ্ছে। প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা সাদা ভাঁটফুলের সৌন্দর্যে চোখ জুড়িয়ে যায় পথচারীদের। গ্রাম বাংলার চিরচেনা এ ফুলটি হরহামেশা দেখা গেলেও সাদা ভাঁটফুলের দিকে তাকালে অনেকের মনে আলাদা একটা অনুভূতি জাগে। অঞ্চলভেদে এ গাছের ফুল ভাইটা ফুল, ঘেটু ফুল, বনজুঁই ফুল, হলেও চুয়াডাঙ্গায় এটি ভাঁটফুল নামে পরিচিত।

 

চুয়াডাঙ্গা-দর্শনা সড়কের দু’ধারে ভাঁট ফুলের সমারোহ দেখলে মনে হবে প্রকৃতি যেন অপরূপ সাজে সেজেছে। এছাড়া জেলার ৪ উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামে রাস্তার পাশে পরিত্যক্ত জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে ভাঁটফুল। এ ফুলের সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হবেন যে কেউ। সড়কে চলাচলকারী লোকজন এবং ঘুরতে বা বেড়ানো দর্শনার্থীরাও তা দেখে মুগ্ধ হন।

 

দামুড়হুদা উপজেলা সদরের প্রাইমারি শিক্ষক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভাঁটফুল মনোমুগ্ধকর ফুল। পড়ন্ত বিকেলে দেখলে মনটা জুড়িয়ে যায়। এ ফুল থোকায় থোকায় থাকে বলে এর সৌন্দর্য আরো বেশি বৃদ্ধি পায়।’ অযত্ন অবহেলায় বন-বাদাড়ে, রাস্তার পাশে ফুটে থাকা এ ফুলের প্রতি যত্ন নেয়া দরকার বলেও জানান তিনি।

 

একাধিক পল্লী চিকিৎসক ও কবিরাজ নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ভাঁটফুল শুধু সৌন্দর্য গুণে নয়। মানবদেহের জন্য এ গাছের অনেক ওষুধি গুণাগুণ আছে। বিশেষ করে চর্ম রোগীদের জন্য নিয়মিত এ ভাঁট ফুলের রস দিনে দুইবার ক্ষত স্থানে মালিশ করলে যে কোনো চর্ম রোগ দ্রুত সেরে যাবে। অনেক সময় বিষাক্ত পোকামাকড় কামড় দিলে এ ভাট ফুলের রস ক্ষত স্থানে মালিশ করলে ফোলা ও ব্যথা দ্রুত কমে যায়। ভাঁটের পাতার রস কৃমি প্রতিরোধেও দারুণ উপকারী।’

 

জীবননগর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মনিরুজ্জামান বলেন, ভাঁটফুল দেশি বুনো পুষ্পক উদ্ভিদ। গাঁয়ের মাঠে কিংবা রাস্তার ধারে অযত্নে ফুটে থাকে এ ফুল। ফুল গাছটি ভাঁট বলে পরিচিত হলেও স্থানভেদে এবং ভিন্ন ভিন্ন জনগোষ্ঠীতে এর ভিন্ন ভিন্ন নামও রয়েছে। অনেকে একে বনজুঁইও বলেন। এ গাছের ভেষজ গুণাগুণও রয়েছে।

 

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা জানান, বসন্তের আগমনে পলাশ-শিমুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভাট ফুল ফোঁটে। এ ফুল ফাল্গুন ও চৈত্র মাসে ফুটতে দেখা যায়। বিশেষ করে পরিত্যক্ত মাঠ, বন, রাস্তা কিংবা জলাশয়ের পাশে ভাঁট ফুলের ঝোঁপ চোখে পড়ে। ভাঁট গাছের প্রধান কান্ড সোজাভাবে দন্ডায়মান। সাধারণত ২ থেকে ৪ মিটার লম্বা হয় এ ফুলের গাছ। এ গাছের পাতা দেখতে কিছুটা পানপাতার আকৃতির ও খসখসে। ডালের শীর্ষে পুষ্পদন্ডে ফুল ফোঁটে। পাপড়ির রং সাদা এবং এতে বেগুনি রঙের মিশ্রণ আছে। বসন্ত থেকে গ্রীষ্ম অবধি ফুল ফোঁটে। এ ফুলের রয়েছে মিষ্টি সৌরভ। রাতে বেশ সুঘ্রাণ ছড়ায় এ ফুল। ফুল ফোঁটার পর মৌমাছিরা ভাঁট ফুলের মধু সংগ্রহ করে।

 

ভোরের আকাশ/মি

মন্তব্য

Beta version