নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জে স্কুল শিক্ষকের উপর অতর্কিত হামলা, নিরীহ কৃষকদের প্রায় ১০ বিঘা জমি জোরপূর্বক জবরদখল এবং বালু ভরাটের প্রতিবাদে স্থানীয় কৃষক ও জমির মালিকরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন।
রোববার উপজেলার রূপগঞ্জ ইউনিয়নের বাগবের ও দক্ষিণবাগ এলাকায় এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা। মানববন্ধনে বাগবের ও দক্ষিণবাগ এলাকার প্রায় ৪ শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ গ্রহণ করেন। এলাকাবাসীর মাঝে চাপা ক্ষোভ ও বোবা কান্না চলছে।
মানববন্ধনে দক্ষিণবাগ এলাকার স্কুল শিক্ষক মাওলানা আব্দুল হামিদ অভিযোগ করে জানান, বাগবের ও দক্ষিণবাগ এলাকায় তিনিসহ স্থানীয় কৃষকরা ধানী জমি ও সবজি চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। বেশ কিছুদিন আগে ওই এলাকায় ফরটিস গ্রুপ নামে একটি কোম্পানি বেশ কিছু জমি জমা ক্রয় করে স্থানীয় একটি সত্যের জমি জোরপূর্বক জবরদখল ও বালু ভরাট শুরু করেন। কোম্পানির পক্ষ হয়ে শাহাদাত হোসেন, আদর, সোহাগ, নাজমুল, হেদায়েত, আফজাল হোসেনসহ একদল প্রভাবশালী জমির মালিক ও কৃষকদের ভয় ভীতি প্রদর্শন করে এসব জমিজমা জবরদখল ও বালুভরাট চালিয়ে আসছেন।
কোম্পানির নিয়োজিত সন্ত্রাসীরা মাওলানা আব্দুল হামিদের মালিকানাধীন ৭৮ শতাংশ জমি দখল করে ফেলে। গত শনিবার সকালে দখলের প্রতিবাদ করতে গেলে ওই শিক্ষককে বেধড়ক মারপিট করে সন্ত্রাসীরা। এ ব্যাপারে তিনি রূপগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
বাগবের এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা মারফত আলী অভিযোগ করে জানান, ১৬ বিঘার মধ্যে ৬ বিঘা জমি ফরটিস গ্রুপ বিক্রি করতে বাধ্য করে। এখন আরো ছয় বিঘা জবরদখল করে বালু ভরাট করে ফেলেছে। বাকি ৪ বিঘাও জবরদখল চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
দক্ষিণবাগ এলাকার গোলাম মুস্তাফা ভূইয়া অভিযোগ করে জানান, ফরটিস গ্রুপ প্রভাব খাটিয়ে তাদের ২১ শতাংশ জমি জবরদখল দখল করে বালু ভরাট করে ফেলেছে। এসব জমিতে ২০ ফুট উঁচু করে দেয়াল নির্মাণ করে বালু ভরাট করায় সবজি চাষ করতে পারছেন না ।
একই অভিযোগ করে বাগবের এলাকার মুজিবুর রহমান ভূঁইয়ার। তিনি অভিযোগ করে বলেন, কোন প্রকার জিজ্ঞাসা না করেই আমার ৬৫ শতাংশ পৈত্রিক জমি ফরটিস গ্রুপ জমি দখলে নিয়েছে। এছাড়াও জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়ার ৮০ শতাংশ, শাহাদাত হোসেন ভূঁইয়ার ১১০ শতাংশ, সমির উদ্দিন ভূঁইয়ার ৮১ শতাংশসহ আরো বেশ কয়েক জনের জমি জবরদখলের অভিযোগ উঠেছে।
দক্ষিণবাগ এলাকার পানজত বেগম,জান্নাত ইসলাম ও খোশ আক্তার বেগম অভিযোগ করে বলেন, বালুর নিচে তাদের বাড়ি চাঁপা পড়েছে। ফরটিস গ্রুপের সন্ত্রাসীরা রাস্তা বন্ধ করে দেয়। বৃষ্টি হলে পানির নিচে তলিয়ে যায় ঘরবাড়ি। এ বিষয়ে ফরটিস গ্রুপের জিএম নাজমুল হাসান বলেন, আমাদের জমিতে আমরা বালু ভরাট করেছি এবং সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করেছি। এসব জমি আমরা করায় করিনি শেষ হোক জমিতে আমরা বালু ভরাট করিনি। এখন আমাদের ক্রয়কৃত সম্পত্তিতে বালু ভরাট ও সীমানার প্রাচীন নির্মাণ করলে অন্য কারো অসুবিধা হলে তো আমাদের কিছু করার নেই।
এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, একজন শিক্ষকের উপর হামলার ঘটনায় থানায় অভিযোগ।
ভোরের আকাশ/মি
মন্তব্য