তাপদাহ ও খড়ায় পুড়ছে কুড়িগ্রাম। বৃষ্টি না হওয়ায় ফসলের মাঠ ফেটে চৌচির হয়ে পড়েছে। প্রচন্ড রোদে খা- খা করছে সর্বত্র। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারনে ব্যাহত হয়ে পড়েছে সেচ ব্যবস্থা। এ পরিস্থিতিতে বিরূপ প্রভাব পড়েছে কৃষিতে। খড়ায় সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে বাদামের আবাদ। তীব্র রোদে ঝিমিয়ে মরে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছে বাদামের গাছ।
বাদাম চাষীরা বলছেন, বাদাম তো চাষ হয় বালু মাটিতে। এখনো বৃষ্টির দেখা নাই। এর মধ্যে তীব্র রোদে বাদামের গাছ ঝিমিয়ে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত সেচ দিয়ে গাছগুলোরকে স্বাভাবিক রাখা হচ্ছে।
নিয়মিত সেচ না দিলে গাছগুলোর মরে যেতে পারে। গত বছর এক বিঘা জমিতে বাদাম চাষে সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ১৫-২০ হাজার টাকা। তবে এবার এক বিঘা জমিতে খরচ হবে ৩৫-৪০ হাজার টাকা। যার ফলে উৎপাদন খরচ উঠা নিয়েও চিন্তিত তারা।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, জেলার বিভিন্ন চরাঞ্চলে এবার ২ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে বাদামের চাষ করা হয়েছে। তবে বৃষ্টি না হওয়ার কারণে বাদামের ফলন কিছুটা কম হতে পারে। উলিপুর উপজেলার তিস্তা পাড়ের গোড়াই পিয়ার এলাকার বাদাম চাষী মিজানুর রহমান বলেন, তীব্র রোদ আর বৃষ্টি নাই, সেচের পানির উপরে রয়েছে বাদামের আবাদ। সবসময় নজরদারিতে রাখছি ক্ষেত। গাছ ঝিমিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে সেচের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বৃষ্টি না হওয়ার কারনে ফলনও কম হবে। পাশাপাশি উৎপাদন খরচ দ্বিগুণ হবে এবার।
ওই এলাকার আরও এক কৃষক নুরুজ্জামান বলেন, যতদিন বৃষ্টি হয় নাই ততদিন সেচ দিতে হবে জমিতে। সেচ না দিলেই গাছ ঝিমিয়ে যাচ্ছে। গাছ মরে গেলে তো আবাদ শেষ। প্রতিটা জমিতে একদিন পর পর পানি দিতে হচ্ছে। বৃষ্টিটা হলেই আমরা শান্তি পেতাম। এবং বাদামটা ভালো হতো।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, বেশকিছু দিন ধরে তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রি থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠানামা করছে। তবে তিন তারিখের পরে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এ জেলায়।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমাদের পরামর্শ হচ্ছে জমিতে সেচ দিতে হবে নিয়মিত। যে দাবদাহ চলছে সব ফসলেই সেচ দিতে হবে। যেহেতু বৃষ্টি নাই, পানির বিকল্প কিছু নাই। আমরা ধান, সবজি, বিভিন্ন ফলসহ সব ফসলেই সেচ দেয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।
ভোরের আকাশ/মি
মন্তব্য