-->

বোরো ধানের বাম্পার ফলন আকাশের দিকে তাকিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক

বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি
বোরো ধানের বাম্পার ফলন
আকাশের দিকে তাকিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক
ক্যাপশন: লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে

নওগাঁর বদলগাছীতে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে ধান ঘরে তোলা নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষক। তাকিয়ে রয়েছেন আকাশের দিকে। দুই সপ্তাহ আকাশ ভালো থাকলেই স্বপ্নের ফসল ঘরে তুলতে পারবে তারা। মুখে ফুটবে সুখের সোনালি হাসি।

 

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, নওগাঁ জেলার মোট আবাদকৃত বোরো ধানের শতকরা ১৬ ভাগ চাষ হয় বদলগাছীতে। চলতি বোরো মৌসুমে এ উপজেলায় ১১ হাজার ৭০৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে চাষাবাদ হয়েছে ১১ হাজার ৭৪০ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি।

 

এ বছর ব্রিধান-৮১, ব্রিধান-৮৪, ব্রিধান-৮৬, ব্রিধান-৮৮, ব্রিধান-৮৯, ব্রিধান-৯০, ব্রিধান-৯২, ব্রিধান-৯৬, ব্রিধান-৯৭, ব্রিধান-৯৯, বঙ্গবন্ধু ধান-১০০, বিনা ধান-১৪, বিনা ধান-২৫, জিরাশাইল ও কাটারিভোগ জাতের ধান চাষ হয়েছে।

 

উপজেলা কৃষি অফিস হতে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে জমির ধান শতকরা ৮০ ভাগ পাকলেই কেটে ঘরে তোলার। এছাড়াও শ্রমিক খরচ সাশ্রয় করতে এবং দ্রুত ধান ঘরে তুলতে কম্বাইন হারভেস্টর ও রিপার যন্ত্র ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কম্বাইন হারভেস্টর দিয়ে এক বিঘা জমির ধান কাটা ও মাড়াই করতে খরচ হয় ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা। অপরদিকে শ্রমিক দিয়ে ধান কাটতে ও মাড়াই করতে খরচ হয় ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা। কম্বাইন হারভেস্টর ব্যবহারের ফলে বিঘাপ্রতি গড়ে ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত সাশ্রয় হতে পারে। এছাড়াও মেশিনের অপারেশনাল লস শতকরা ০.৫ থেকে এক ভাগ। আর শ্রমিক দিয়ে করলে লস হবে শতকরা ১০ থেকে ১৫ ভাগ।

 

এলাকার কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বোরো ধান আবাদের জন্য বীজতলা থেকে শুরু করে ধান ঘরে তোলা পর্যন্ত কৃষকদের খরচ হয় বিঘাপ্রতি ১২ হাজার থেকে ১৪ হাজার টাকা। আর বিঘাপ্রতি ফলন হবে ২২ থেকে ২৫ মণ। ধানের বর্তমান বাজারদর এক হাজার থেকে বারোশত টাকা। উপজেলায় স্বল্প পরিসরে ধান কাটা শুরু হয়েছে। তিন-চার দিন পর পুরোদমে ধান কাটা শুরু হবে।

 

বালুভরা ইউনিয়নের কুশারমুড়ি গ্রামের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক জুয়েল বলেন, আমি পাঁচ বিঘা জমিতে জিরাশাইল ধানের আবাদ করেছি। দুই-এক দিনের মধ্যেই ধান কাটব। আকাশ ভালো থাকলে পাঁচ বিঘা জমিতে একশত মণের ওপর ধান পাওয়ার আশা করছি। খরচ বাদ দিলে আমার ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা লাভ থাকবে।

 

সদর ইউপির পানিশাইল গ্রামের কৃষক মোশারফ হোসেন বলেন, আট বিঘা জমিতে ধান আবাদ করেছি। এখন পর্যন্ত সবকিছু ঠিকঠাক আছে। কয়েকদিন পর ধান কাটবো। আকাশ ভালো থাকলে প্রত্যাশা অনুযায়ী ফলন পাব। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাবাব ফারহান বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর বোরো ধানের ফলন খুব ভালো হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। আবহাওয়ার কারণে সুষ্ঠুভাবে ধান ঘরে তোলা নিয়ে কৃষক কিছুটা দুশ্চিন্তায় থাকে। তবে আমি তাদের পরামর্শ দিয়েছি ৮০ ভাগ ধান পাকলেই তা কেটে ঘরে তোলার। এবং ধান কাটা ও মাড়াইয়ে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করার।

 

ভোরের আকাশ/মি

মন্তব্য

Beta version