প্রায় ৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় কুড়িগ্রাম পৌরসভার কার্যালয়ের মূল ভবনসহ এর অধীন ৬টি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে নর্দান ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো)। বুধবার সকাল ৯টার দিকে এসব সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে নেসকো কর্তৃপক্ষ। নেসকো কুড়িগ্রাম কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আতিফুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নেসকো জানায়, কুড়িগ্রাম পৌরসভার মূল ভবন, পৌর অডিটোরিয়াম, পানি পরিশোধনাগার, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ও সড়কবাতিসহ বিদ্যুৎ সংযোগের অন্তত ২২টি হিসাব নম্বর রয়েছে। এসব হিসাব নম্বরের কোনোটিতেই নিয়মিত বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা হয় না। এসব সংযোগ বাবদ প্রতি মাসে প্রায় ৪ লাখ থেকে ৬ লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল আসে। সংযোগগুলোর বিপরীতে পৌরসভার হিসাব নম্বরে প্রায় পাঁচ কোটি ২৮ লাখ ৫৭ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। নোটিশ করার পরও পৌর কর্তৃপক্ষ নিয়মিত বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করছে না। বছরের পর বছর তাদের বকেয়া বেড়ে চলেছে। এ অবস্থায় বকেয়া বিদ্যুৎ বিল আদায়ের কৌশল হিসেবে পৌর ভবনের বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে নেসকো। এ ছাড়াও পৌরসভার অধীন কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ও ৪টি ক্ষুদ্র পানির পাম্পের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। তবে এসব সংযোগ বিচ্ছিন্নের কারণে পৌরবাসীর সেবা খাতে কোনও বিঘ্ন ঘটবে না।
নেসকো আরও জানায়, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া প্রায় সাড়ে ৮ লাখ টাকা। আর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা চারটি ক্ষুদ্র পানির পাম্পের বকেয়া বিল প্রায় ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, আর্থিকসংকটের কারণে পৌর কর্তৃপক্ষ বকেয়া বিল হালনাগাদ করতে পারছে না। বিগত মেয়রদের আমল থেকেই বকেয়া চলমান রয়েছে।
পৌর মেয়র কাজিউল ইসলাম বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের অক্ষমতার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘রাজস্ব সংকটে পৌরসভার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়েছে। এটা পৌরসভার সৃষ্টিলগ্ন থেকে চলে আসছে। কিছু বিল পরিশোধ করে সংযোগ চালুর ব্যবস্থা করা হবে।’ একই সঙ্গে পৌরবাসীকে পানির বিল নিয়মিত পরিশোধের আহ্বান জানান মেয়র।
বাস টার্মিনালের বিদ্যু বিল বকেয়া প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ‘তারা ইজারা নিয়ে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে চান না। বারবার তাগিদ দিলেও বিলের টাকা পরিশোধ করেন না। গত তিন দিন আগেও তাদের বিল পরিশোধের তাগিদ দেওয়া হয়েছিল। তারা (বাস মালিকপক্ষ) বলে পৌরসভা দেবে। কিন্তু পৌরসভার বিধি অনুযায়ী যারা ইজারা নেবেন তারাই বিদ্যুৎ বিল দেবেন।’নেস
কোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আতিফুর রহমান বলেন, ‘কুড়িগ্রাম পৌরসভায় কয়েক কোটি টাকা বিল বকেয়া রয়েছে। আমরা বারবার তাগিদ দিলেও পৌর কর্তৃপক্ষ বিল পরিশোধ করছেন না। এ অবস্থায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় পৌর ভবনসহ তাদের অধীন ৬টি হিসাব নম্বরের বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। বিল পরিশোধ করলে পুনরায় সংযোগ দেওয়া হবে।’ এসব সংযোগ বিচ্ছিন্নের ফলে পৌরবাসীর কোনও ভোগান্তি হবে না বলে জানান এই বিদ্যুৎ প্রকৌশলী।
ভোরের আকাশ/মি
মন্তব্য