স্বাধীনতার পর এই প্রথম আগামীকাল শনিবার (১৮ মে) অনুষ্ঠিত হবে বহুল আলোচিত পিরোজপুর জেলা যুবলীগের সম্মেলন। যুবলীগ প্রতিষ্ঠার পর এটিই প্রথম পিরোজপুর জেলা শাখার সম্মেলনে। ১৯৭২ সালে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠার পর জেলা কমিটি গঠনের শুরু থেকেই বিভিন্ন সময় সংগঠনটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মাধ্যমে পিরোজপুর জেলা শাখার কমিটি গঠন হলেও কোন কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়নি।
জানা গেছে, সর্বশেষ ২০১০ সালে ১ আগাষ্ট তৎকালীন কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ওমর ফারুক ও সাধারণ সম্পাদক মির্জা আজম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মাধ্যমে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট জেলা কমিটি অনুমোদন করেন। এতে সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি আলহাজ্ব আক্তারুজ্জামান ফুলুকে সভাপতি ও একই কমিটির ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল আহসান গাজীকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করা হয়।
বর্তমানে সংগঠনটির জেলা শাখার সভাপতি আক্তারুজ্জামান ফুলু জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হাসান গাজী জেলা আওয়ামী সাংগঠনিক সম্পাদক দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া সহ সভাপতি রেজাউল করিম মন্টু, মনিরুজ্জামান আতিয়ার ও মশিউর রহমান মহারাজ জেলা আওয়ামী সহ বিভিন্ন উপজেলা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদ অধিষ্ঠিত হয়েছে।
১৪ বছর আগে গঠিত ওই কমিটির সিনিয়র সহ সভাপতি হুমায়ুন কবির সহ কয়েকজন নেতা মৃত্যু বরন করা সহ অধিকাংশ পদধারী নেতারা নিস্ক্রিয় থাকায় সংগঠনটি কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়েছে। কয়েক দফায় জেলা শাখার বর্ধিত সভা করলে গঠিত হয়নি নতুন কমিটি। তাই ১৮ মে তারিখের সম্মেলনকে ঘিরে নেতকর্মী জেলা যুবলীগের পদ প্রত্যাশী মাঝে প্রানচাঞ্চল্য দেখা গেছে। জেলা যুবলীগের সম্মেলনে উপলক্ষে শহরের সরকারী বালক বিদ্যালয় মাঠে তৈরি করা হচ্ছে বিশাল মঞ্চ ও প্যান্ডেল। শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে ও প্রধান প্রধান সড়ক গুলোতে তৈরি করা হয়েছে তোরন। সাটানো হচ্ছে বিভিন্ন পদ পদবী প্রত্যাশী নেতাদের ছবি সংবলিত ব্যানার ফেষ্টুন।
জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও জেলা যুবলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান ফুলু জানান,স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশ যুবলীগ প্রতিষ্ঠার পর এটিই পিরোজপুর জেলার প্রথম সম্মেলন। তাই নেতাকর্মী মাঝে উৎসাহ ও উদ্দিপনা বিরাজ করছে। সম্মেলনে মাধ্যমে জেলা শাখার নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি হবে।
এ ব্যাপারে পিরোজপুর-১ (নাজিরপুর, পিরোজপুর সদর ও ইন্দুরকানী) আসনের এমপি ও সাবেক মন্ত্রী শ.ম রেজাউল করিম বলেন, দীর্ঘদিন পরে জেলা যুবলীগের নতুন কমিটি সম্মেলনের মাধ্যমে গঠন করে হবে। আশা করি বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া এ সংগঠনের নতুন নেতৃত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সহায়ক ভুমিকা পালন করবে।
দলীয় একাধীক সূত্র জানান, জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পেতে লোবিং তদবির করছেন প্রায় ডজনখানেক নেতা। এদের প্রায় সকলেই দলের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরস ও তার পরিবার কেন্দ্রিক লোভিং করছেন। আর শেখ পরিবারের সদস্যদের মনোরঞ্জনের জন্য পরিবারের বিভিন্ন সদস্যদের ছবি সম্বলিত বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন সহ তোরন তৈরী করেছেন। জেলার বিভিন্ন উপজেলা সহ পিরোজপুর –ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশের প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকার রাস্তা সহ পিরোজপুর বরিশাল, পিরোজপুর বাগেরহাট সড়ক সহ বিভিন্ন সড়কে এ সব পোষ্টার, ব্যানার ও ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে।
জানা গেছে, সভাপতি পদের প্রার্থী রয়েছেন পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের সাবেক ভিপি ও জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তরুজ্জামান মানিক, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য কামরুজ্জামান খান শামীম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক ভিপি মাকসুদুল ইসলাম লিটন সিকদার ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইরতিজা হাসান রাজু । এ ছাড়া সাধারণ সম্পাদক পদে পেতে পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের সাবেক ভিপি পিরোজপুর সদর উপজেলা পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান এস এম বায়েজিদ হোসেন, সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বিপ্লব, পৌর যুবলীগের সভাপতি আবু সাইদ ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তানভীর মুজিব অভি। তবে এদের মধ্যে সভাপতি হিসাবে সাবেক ভিপি আক্তারুজ্জামান মানিক ও সাধারন সম্পাদক হিসাবে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও তরুন নেতা এসএম বায়েজিদ হোসেন এ দুজন পরিচ্ছন্ন ও জনপ্রিয় বলে দলের নেতা-কর্মীদের দাবী।
ভোরের আকাশ/ সু
মন্তব্য