-->
শিরোনাম

আইসিইউ থেকে ফেরানো গেল না সুরাইয়াকে

নিজস্ব প্রতিবেদক
আইসিইউ থেকে ফেরানো গেল না সুরাইয়াকে
আইসিইউ থেকে ফেরানো গেল না সুরাইয়াকে -বাবা জালাল উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সুরাইয়া আহমেদ

রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকায় নির্মাণাধীন বহুতল ‘সৈনিক ভবনের’দেয়াল ধসে আহত শিশু সুরাইয়া আহমেদ মারা গেছে। বুধবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালে চিকিৎসাধীন সুরাইয়ার লাইফ সাপোর্ট খুলে নেওয়া হয়। দেয়াল ধসে আহত হওয়ার পর থেকে অচেতন ছিল সুরাইয়া আহমেদ।

এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন সুরাইয়ার বাবা আহত দৈনিক সমকালের মার্কেটিং বিভাগে সিনিয়র নির্বাহী জালাল উদ্দিন আহমেদ। তিনি ঢাকা ডেন্টাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সুরাইয়া আহমেদের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন সমকালের মার্কেটিং বিভাগে সিনিয়র নির্বাহী রবিউল হাসান।

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, শিশুটির মস্তিষ্ক কাজ করছিল না। রক্তচাপ অস্বাভাবিক ছিল। লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন সুরাইয়ার রক্তচাপ স্বাভাবিক করার জন্য ওষুধ দেওয়া হয়।

সোমবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে দক্ষিণখান কাজীবাড়ি রোডের ২৫১ গাওয়াইর নির্মাণাধীন ১৪ তলা ভবনের ১১ তলার দেয়ালের একটি অংশ ধসে তাদের ঘরের চালের ওপরে পড়ে। এতেই গুরুতর আহত হন বাবা ও মেয়ে। মুমূর্ষু অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে প্রথমে উত্তরা কেসি হাসপাতাল, পরে জালালকে ঢাকা ডেন্টাল কলেজ হাসপাতালে এবং তাঁর মেয়ে সুরাইয়াকে নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।

আহত জালালের বড় ভাই সাইফুদ্দিন আহমেদ  ভোরের আকাশকে বলেন, বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি বলা হচ্ছিল। কিন্তু ভবন কর্তৃপক্ষ কর্ণপাত করেনি। তারা নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দিলে আজকে আমার ভাই ও ভাতিজির এত বড় বিপদ হতো না। আমরা এ ঘটনায় থানায় মামলা করেছি। এর ন্যায়বিচার চাই।

মামলার এজাহারে বলা হয়, পাঁচ ভাই পরিবারসহ গাওয়াইরে নিজস্ব বাসায় বসবাস করেন। আসামিরা তাদের বাড়ির পাশের দক্ষিণ সীমানায় যৌথভাবে ১৪ তলা বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন। তারা রাজউকের নির্দেশনা না মেনে ভবন নির্মাণ করে আসছেন। সোমবার ওই ভবনের ১১ তলার উত্তর পাশের দেয়াল ভেঙে ছোট ভাই জালাল আহমেদের টিনশেড ঘরের ওপরে পড়ে। এতে তারা বাবা-মেয়ে আহত হয়েছেন। এ ছাড়া ঘর ভেঙে আনুমানিক ১২ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ঢাকার দক্ষিণখান থানার ওসি  আমিনুল বাশার ভোরের আকাশকে বলেন, দেয়াল ধসে বাবা ও মেয়ে গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া কার অবহেলায় এত বড় দুর্ঘটনা ঘটল, সেটাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। তিনি বলেন, ঘটনার দিন খবর পাওয়ার পরপরই থানার একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এ ছাড়া আহতদের চিকিৎসার খোঁজখবর রাখছে দক্ষিণখান থানা পুলিশ।

অবহেলার অভিযোগে মামলা: এ ঘটনায় মঙ্গলবার বিকেলে অবহেলাজনিত কারণ উল্লেখ করে মামলা করেছেন জালালের বড় ভাই। মামলায় চারজনের নাম উল্লেখ করে ৪২ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে। মামলার আসামিরা হলেন–ভবনের মালিক আনিছ, মোর্শেদ, জসিম উদ্দিন রবি ও মমিন। তারাই আবার ঠিকাদার হিসেবে ভবনের কাজ করছেন। তবে আসামিদের কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

মন্তব্য

Beta version