৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৩য় ধাপে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন সমকাল পত্রিকার সাংবাদিক আব্দুল হাকিম শিমুল হত্যা মামলার প্রধান আসামি হালিমুল হক মিরু। মিরু জেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক ও শাহজাদপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র।
বর্তমানে সাংবাদিক শিমুল হত্যা মামলায় মিরুসহ ৪০ জন উচ্চ আদালতের আদেশে জামিনে রয়েছেন। তৃতীয় ধাপে (২৯শে মে) শাহজাদপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে হালিমুল হক মিরু (আনারস) মার্কায় ৫৪৪২৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি শাহজাদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শেখ আব্দুল হামিদ লাবলু (কাপ পিরিচ) মার্কায় ২৯৮৮৪ ভোট পেয়েছেন।
বৃহস্পতিবার শাহজাদপুরের সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও ইউএনও মো. কামরুজ্জামান মিরু নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, ৭ বছর চার মাস আগে সাংবাদিক শিমুল হত্যার দায়ে গ্রেপ্তার হয়ে দু’বছর সাড়ে ৯ মাস কারাভোগ শেষে তাকে মেয়রের পদ থেকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বরখাস্ত করে। শিমুল হত্যা মামলার বিচারকার্য প্রক্রিয়ার দীর্ঘ সূত্রিতার কারণে চার্জ গঠন প্রক্রিয়া নানা কূটকৌশলে বিলম্বিত করে মিরু জামিনে থেকে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এর আগে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী হিসেবে নৌকার প্রার্থী চয়ন ইসলামের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মিরু। নির্বাচন চলাকালীন কারচুপি, বাধা প্রদান ও ভোট ডাকাতির অভিযোগ এনে দুপুরের পর ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন বর্জন করেন তিনি।
শাহজাদপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি বিমল কুমার কুণ্ডু বলেন, শাহজাদপুরের সাবেক মেয়র মিরু এবার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় সাংবাদিক শিমুলের সহকর্মী হিসেবে আমরা উদ্বিগ্ন। শিমুলের হত্যাকারী হয়েও সরকারি, বেসরকারি ও সামাজিক বিভিন্ন সভা-সমাবেশে মিরু এবার অংশ নিবেন। জনপ্রতিনিধি হওয়ায় তার পাশেও হয়তো আমাদের বসতে হবে। এটি কতটা লজ্জার! নিজের কাছেই এখন নিজেকে হীন মনে হচ্ছে।
এ বিষয়ে মৃত সাংবাদিক শিমুলের স্ত্রী বেগম নুরুন্নাহার বলেন, ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষের সময় পেশাগত দায়িত্ব পালন ও ছবি সংগ্রহ করতে গিয়ে সাবেক মেয়র হালিমুল হক মিরুর শটগানের ছোড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে পরদিন মারা যান আমার স্বামী সাংবাদিক শিমুল।
তিনি বলেন, গত সাত বছর চার মাস পার হলেও আমার স্বামী হত্যার বিচার হয়নি। নানা কূটকৌশল ও ফন্দিফিঁকির করে বিচার প্রক্রিয়া আটক রাখে মিরু। তার ওপর মিরু এবার উপজেলা চেয়ারম্যান হলো। জনপ্রতিনিধি হয়ে বিচার প্রক্রিয়ায় আগামীতে আরও প্রভাব বিস্তারের সুযোগ পেতে পারেন মিরু। অন্যদিকে শিমুলের বিচার প্রক্রিয়া আরও ঝুলে যাবার সম্ভাবনা আছে বলে মনে করে তিনি।
ভোরের আকাশ/মি
মন্তব্য