-->
শিরোনাম

অবৈধ ১৫ অটোরিকশা স্ট্যান্ডে যানজট ভোগান্তি

ফেনী প্রতিনিধি
অবৈধ ১৫ অটোরিকশা স্ট্যান্ডে যানজট ভোগান্তি
ক্যাপশন : যত্রতত্র লাইসেন্সবিহীন অটোরিকশার স্ট্যান্ড থাকায় শহরে তীব্র যানজটের সৃষ্টি

ফেনী শহরের বিভিন্ন সড়কে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে একাধিক সিএনজিচালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ড। সড়কের দুই পাশের এসব স্ট্যান্ড থেকে জেলার বিভিন্ন উপজেলার উদ্দেশে ছেড়ে যায় অটোরিকশা।

লাইসেন্সবিহীন এসব সিএনজিচালিত অটোরিকশা সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করাসহ পার্কিং করে রাখা হয় যত্রতত্র। ফলে শহরে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে শহরমুখী মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।

জানা যায়, ফেনীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালটি ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ায় সেখানে কোনো বাস-সিএনজি থাকে না। এই সুযোগে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক দখল করে অন্তত ১৫টি স্থানে অবৈধ সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও গাড়ি স্ট্যান্ড বসিয়ে এক শ্রেণির অসাধু চক্র চাঁদা আদায় করছে। ফলে ব্যস্ত সড়কটি সংকীর্ণ হয়ে যানজটের তৈরি হচ্ছে। ভোগান্তিতে পড়ছেন যাত্রী, চালক ও পথচারীরা।

ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীসহ পৌরসভার কয়েকজন প্রভাবশালী শহরের বিভিন্ন স্থানে চলাচলের রাস্তা দখল করে নিজেদের খেয়ালখুশি মতো বসিয়েছেন সিএনজিচালিত অটোরিকশার স্ট্যান্ড। প্রতিটি স্ট্যান্ডে পার্কিং করা যানবাহনগুলো থেকে নেওয়া হচ্ছে দৈনিক ভিত্তিতে চাঁদা।

সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের প্রবেশ পথ মহিপালে ফেনী-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে সিএনজিচালিত অটোরিকশার স্ট্যান্ড করে দাগনভূঞা, বসুরহাট, সোনাপুর, দরবেশের হাটসহ বিভিন্ন এলাকার অটোরিকশা দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানামা করা হয়। এ ছাড়া ট্রাংক সুরত সুপার মার্কেটের সামনে, পুরানো হাসপাতালের সামনে, মিজান রোডের মাথায়, মডেল স্কুলের সামনে, রাজাঝীর দীঘির পূর্ব পাশে ও পোস্ট অফিসের সামনে অবৈধ স্ট্যান্ড বসিয়ে বিভিন্ন উপজেলায় যাতায়াত করা যাত্রীদের ওঠানামা করানো হচ্ছে। এ ছাড়া নগর সিএনজি সার্ভিসসমূহে শহীদ মিনারের পাশে, মহিপাল তৈয়বিয়া মাদ্রাসার সামনে ও ট্রাংক রোডে শহীদুল্লাহ কায়সার সড়কের মুখে যাত্রী ওঠানামা করা হয়। ট্রাংক রোড়ে সিএনজি ও অন্যান্য গাড়ির কারণে রাস্তার দুই পাশে মনে হয় এখানে গাড়ির হাট বসেছে। এসব স্ট্যান্ডে প্রতিটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে ২০ থেকে ৪০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয়।

জানা গেছে, শহর থেকে বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়কে প্রায় ১০ হাজারের অধিক সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করে। এসব অটোরিকশা থেকে প্রতিদিন কয়েক লাখ টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। কোনো চালক চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তার সিরিয়াল বাতিল করা হয়। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে মারধর করাসহ ট্রাফিক পুলিশ দিয়ে মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা হয়। চাঁদা আদায়কারী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে তারা কেউ কথা বলতে রাজি হয়নি।

সিএনজি চালকরা জানান, প্রতিবার যাত্রী নিয়ে যাওয়া-আসার সময় শ্রমিক সংগঠন ও পৌরসভার নির্দেশে তাদের নিয়োজিত লোকজন পৌরসভার টোলের পাশাপাশি অতিরিক্ত ২০ টাকা শ্রমিক সংগঠনের নামে চাঁদা নিয়ে যায়। সন্ধ্যার পরে এ চাঁদার পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে যায়।

কাসেম নামে এক চালক বলেন, ‘শহরের প্রতিটি স্টান্ডে দুই-তিনজন করে দায়িত্বে থেকে চাঁদা আদায়সহ গাড়ির সিরিয়াল ঠিক করে। পৌরসভার লোক দাবি করা হৃদয় নামের এক যুবকের নেতৃত্বে এই চাঁদা তোলার কাজ চলে।’

ফেনী পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী বলেন, ‘শহরকে যানজটমুক্ত করতে আমরা সব সময় কাজ করছি। ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি পৌরসভার ১০-১৫ জন কর্মী যানজট নিরসনে কাজ করছে। শহরের প্রবেশমুখে প্রতিদিন একবার পৌর টোল ইজারাদার নিয়ে থাকে।’

সড়কের ওপর অবৈধ সিএনজি স্ট্যান্ডের বসানোর বিষয়টি তিনি জানেন না দাবি করে বলেন, ‘অচিরেই এসব অবৈধ স্ট্যান্ডের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে।’ ফেনীর ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আনোয়ারুল করিম বলেন, ‘ট্রাফিকের পাশাপাশি যানজট নিয়ন্ত্রণে শহরের প্রবেশ মুখে পৌরসভার নিয়োজিত কিছু লোক কাজ করছে।’

 

ভোরের আকাশ/মি/সু

মন্তব্য

Beta version