কক্সবাজার টেকনাফে প্লাবিত এলাকার পানি নামতে শুরু করেছে। বুধবার বিকেল থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নেমে না আসার কারণে প্লাবিত এলাকার গ্রামগুলো থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল। এতে প্রায় ১০ হাজার পরিবারের ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি ছিলেন। পানি নামতে শুরু হওয়ায় ওইসব মানুষের ভোগান্তি কমে এসেছে।
টেকনাফ ইউএনও মো. আদনান চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের পানি নামতে না পারায় প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল। নাফনদীর কয়েকটি সুইচগেট নির্মাণাধীন থাকায় পানি নিষ্কাশনের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় গ্রামগুলো প্লাবিত হয়েছে। পরে বাঁধের বিভিন্ন অংশে কেটে দিলে পাহাড়ি ঢলের পানি নাফনদীতে প্রবাহিত হয়। এরমধ্যে যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদের স্ব স্ব ইউনিয়নের মাধ্যমে তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। তাদের সরকারিভাবে সহযোগিতা করা হবে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী পরিচালক আব্দুল হান্নান বলেন, বুধবার ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত তেমন বৃষ্টিপাত হয়নি। এর আগে প্রবল বর্ষণে টেকনাফ উপজেলায় হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ৮টি গ্রাম, হ্নীলা ইউনিয়নের ১২টি গ্রাম, টেকনাফ পৌরসভার ৭টি গ্রাম, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৬টি গ্রাম, সাবরাং ইউনিয়নের ৭টি গ্রাম, বাহারছড়া ইউনিয়নের ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল।স্থানীয়রা জানিয়েছেন, প্লাবিত এলাকা থেকে পাহাড়ি ঢল ও ভারি বৃষ্টির পানি নামতে শুরু করেছে। টেকনাফ-কক্সবাজার আঞ্চলিক সড়কের উপর দিয়ে পানি নেমে গেছে। যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে ফসলি জমিতে ঢালে পানি রয়েছে। প্লাবিত এলাকার বসতঘর থেকে পানি নেমে যাওয়ায় অনেকে ঘরে ফিরছেন।
হ্নীলার বাসিন্দা ছৈয়দ আলম বলেন, পাহাড়ি ঢল ও ভারি বৃষ্টিপাতের পানি তার বাড়িতে কোমর সমান পানি ঢুকে পড়েছিল। বুধবার বিকেলের পর থেকে আর বৃষ্টি না হওয়ায় পানি নেমে যাচ্ছে। বাড়ির অধিকাংশ জিনিসপত্র ভিজে যাওয়ায় নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়েছে পাশাপাশি নানা ধরনের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
একই এলাকার ফারুক জানান, তাদের গ্রামের রাস্তার একটি অংশ ভেঙে যাওয়ায় মানুষের চলাচল করতে সমস্যা হচ্ছে। উঁচু জায়গার পানিগুলো নেমে গেলেও নিচু জায়গার পানিগুলো নামতে সময় লাগতে পারে। নাফনদীতে ভাটার টান পড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্লাবিত এলাকা থেকে পানি নেমে যাচ্ছে।
হ্নীলার ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, প্লাবিত এলাকার গ্রামগুলো থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসতে শুরু করেছে। তবে নাফনদীর তীরে নির্মাণাধীন সুইচগেট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়। মঙ্গলবার জোয়ারের পানির সঙ্গে পাহাড়ি ঢল ও ভারি বর্ষণের কারণে অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছিল।
ভোরের আকাশ/মি/সু
মন্তব্য