নীলফামারী জেলা ডিমলায় তিস্তা সেচ ক্যানেলের ডালিয়া থেকে দুন্দিবাড়ী পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটারের মধ্যে ৯ কিলোমিটার সড়কের সংস্কার কাজ হয়েছে। তবে সপ্তাহ যেতে না যেতেই সড়কের কার্পেটিং উঠতে শুরু করেছে। রোদের তাপে পিচ গলে উঠে যাচ্ছে পথচারীর জুতার সঙ্গে।
জানা গেছে, ৪ কোটি টাকা ব্যয় ধরা এ সড়কের সংস্কারের কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আবুল কালাম ট্রেডার্স। তবে কাজটি করে সাব ঠিকাদার লোকমান হোসেন।
গত ২৩ জুন সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সামান্য রোদে পিচ গলে পথচারীর জুতার সঙ্গে পিচ উঠে যাচ্ছে। যানবাহনের চাকার দাগ বসে যাচ্ছে সড়কে। পা দিয়ে ঘষলে উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং। এ ছাড়া সড়কের বিভিন্ন স্থানের কার্পেটিংয়ে অসংখ্য ফাটল দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, ১৫ জুন সড়ক সংস্কারের কাজ শেষ করেন ঠিকাদার। কিন্তু এ সময়ের মধ্যেই ৯ কিলোমিটার সড়কের অধিকাংশ জায়গার পিচ গলে যানবাহন চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে। অনেক স্থানে সড়ক ধসে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, উন্নতমানের বিটুমিন ও শতভাগ ভাঙা পাথর দিয়ে সড়কটি সংস্কার করার কথা থাকলেও নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার, কম পুরুত্ব ও তদারকি কর্মকর্তার গাফিলতির কারণে এমনটি হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সড়ক ও মহাসড়কে যে পিচ ব্যবহার করা হয় তার মান ৬০-৭০ গ্রেডের। এই পিচের গলনাঙ্ক ৪৮-৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ তাপমাত্রা ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে পিচ গলে যাওয়ার কথা; এর আগে নয়।
এদিকে এমন ঘটনার জন্য ঠিকাদারের পাশাপাশি পাউবোর প্রকৌশলীর বিরুদ্ধেও অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন অনেকে। তাদের অভিযোগ, পাউবোর প্রকৌশলীর যোগসাজশে ঠিকাদার তড়িঘড়ি করে সড়কটির সংস্কারকাজ করেছে।
এ বিষয়ে সাব ঠিকাদার লোকমান হোসেন বলেন, সড়কের কিছু জায়গায় বিটুমিনের পরিমাণ বেশি পড়েছে। ফলে রোদের তাপে এরকম হচ্ছে। কার্যাদেশ অনুযায়ী কাজ হয়েছে। দরপত্রে সড়ক কার্পেটিংয়ের পুরুত্ব ৯ মিলি ধরা হয়েছে।
কার্পেটিং উঠে যাওয়ার খবরে সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন ডালিয়া পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী হাশেম আলী। তিনি বলেন, বিটুমিন গলে কার্পেটিং উঠে যাওয়ার বিষয়টি নির্বাহী প্রকৌশলী স্যারকে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে ডালিয়া পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদদৌলা বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। বর্তমান যে তাপমাত্রা, এতে কোনোভাবেই বিটুমিন গলে যাওয়ার কথা নয়। সরেজমিনে পরিদর্শন করে অনিয়ম পেলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করব। তবে তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তা অস্বীকার করেন তিনি।
ভোরের আকাশ/ সু
মন্তব্য