উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে। তলিয়ে যাচ্ছে নদীর তীরবর্তী নিম্ন অঞ্চলের বাড়িঘর ও ফসলি জমি। আর পানি বাড়ার সঙ্গে শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙ্গন। দ্রুতগতীতে পানি বাড়ায় বন্যা হওয়ার আতঙ্কে দিন কাটছে নদী পাড়ের মানুষের। গত ১২ ঘন্টায় সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষার হার্ড পয়েন্টে ১৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। (বিপদসীমা ১২.৯০)।
এদিকে, পানি বৃদ্ধির সঙ্গে জেলার অভ্যান্তরীণ করতোয়া, ফুলজোড়, হুড়াসাগর ও চলনবিলের নদ নদীর পানি বেড়েই চলেছে। দ্রুত পানি বৃদ্ধির কারণে চরাঞ্চলের নিম্নভূমি তলিয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে যমুনার তীরবর্তী অঞ্চলে শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন। অপরদিকে, কাজিপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টে গত ১২ ঘন্টায় ২০ সেন্টিমিটার বেরে বিপদসীমার ৩২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। (বিপদসীমা ১৪.৮০)।
শুক্রবার সকালে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রনজিত কুমার সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ৩ জুন থেকে অস্বাভাবিকভাবে যমুনায় পানি বাড়ে। এক সপ্তাহ পরই পানি কমতে থাকে। এরপর ১৮ জুন থেকে আবারও দ্রুতগতীতে পানি বাড়তে থাকে। টানা পাঁচদিন বাড়তে থাকার পর ২২ জুন থেকে কমতে শুরু করে। ২৭ জুন স্থিতিশীল থাকার পর ২৮ জুন আবারও পানি বেড়েছে। ২৯ জুন আবার স্থিতিশীল হয়ে ৩০ জন সামান্য কিছুটা কমে যমুনার পানি। ১ জুলাই থেকে আবারও পানি বাড়তে থাকে।
জানা যায়, যমুনার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলার সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউনিয়ন, কাজিপুর উপজেলার খাসরাজবাড়ী ও শাহজাদপুর উপজেলার জালালপুর এবং কৈজুরীতে তীরবর্তী অঞ্চলগুলোতে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে এসব অঞ্চলের প্রায় ৮ শতাধিক বাড়ি-ঘর, ফসলী জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, দ্রুতগতিতে যমুনায় পানি বাড়ছে। বর্তমানে শহর রক্ষা হার্ড পয়েন্ট ও কাজিপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। পানি আরও ৪/৫ দিন বাড়তে পারে।
তিনি আরও বলেন, পানি বাড়লেও বড় ধরনের বন্যা না হলেও মাঝারি বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ভাঙন কবলিত এলাকাগুলোর খোঁজ নিয়ে বালি ভর্তি ব্যাগ জিওটিউব ও জিওব্যাগ ডাম্পিং করে ভাঙন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে।
ভোরের আকাশ/ সু
মন্তব্য