বগুড়ায় স্কুলছাত্র তামিম (১৩) হত্যার সাথে জড়িত মূল আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ভোর রাত ৪টার দিকে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ ও শেরপুর থানার যৌথ অভিযানে উপজেলার কুসুম্বী ইউনিয়নের দক্ষিণ আমইন গ্রামের আব্দুল মান্নানের পুকুর পাড় থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ১টি চটের বস্তা, গরু বাঁধার রশি, ১টি স্যান্ডেল, ১টি বেডসিট ও প্লাস্টিকের ড্রাম কেটে বানানো নৌকা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আসামী শেরপুর উপজেলার দক্ষিণ আমইন গ্রামের মো. খাদেমুল ইসলামের ছেলে মো. এমদাদুল হক। তিনি মান্নানের পুকুর ও গরুর খামার দেখাশোনার কাজ করতেন।
আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে নবাগত পুলিশ সুপার জাকির হাসান এ তথ্য জানান। এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে শেরপুর উপজেলার কুসুম্বী ইউনিয়নের দক্ষিণ আমইন গ্রামের একটি জলাশয়ে ভাসমান অবস্থায় বস্তাবন্দি স্কুলছাত্র তামিমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত তামিম একই গ্রামের মো. মুকুল আকন্দের ছেলে। তিনি স্থানীয় কেল্লা বাজারস্থ আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন। এ ঘটনায় তামিমের মা মোছা. সুফিয়া খাতুন শেরপুর থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করেছিলেন।
পুলিশ সুপার জাকির হাসান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত আসামী জানায়, তিনি মান্নানের পুকুর ও গরুর খামার দেখাশোনার কাজ করতেন। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তামিম পুকুর পাড়ের ঘর থেকে মাছের কিছু খাবার নেয়। এসময় এমদাদুল তাকে দেখে ফেলে এবং তামিমকে কুপ্রস্তাব দেয়। তামিম তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এমদাদুল তামিমকে মালিকের কাছে ধরিয়ে দিবে বলে ভয় দেখায়। তামিম ভীত হয়ে আসামীর প্রস্তাবে রাজী হয়। তখন আসামী তামিমকে পুকুর পাড়ের একটি ঘরে নিয়ে যায়। এসময় তামিম ব্যাথায় কান্নাকাটি ও চিৎকার শুরু করলে আসামি এমদাদুল তার গলা চেপে ধরে। একপর্যায়ে তামিমের গলাই রশি পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে ঘরে থাকা পাটের বস্তার মধ্যে তামিমের লাশ ভরে প্লাস্টিকের ড্রামের তৈরী নৌকায় তুলে পাশের পুকুরের মাঝখানে ফেলে দেয়।
তিনি আরো জানান, হত্যাকান্ডের সাথে আরো কেউ জড়িত আছে কিনা তা তদন্ত করা হচ্ছে। আসামিকে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির জন্য আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সিগ্ধ আকতার, আব্দুর রশিদ, মোতাহার হোসেন, সুমন রঞ্জন সরকার, জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ওসি মোস্তাফিজ হাসান, শেরপুর থানার ওসি সেলিম রেজা প্রমুখ।
ভোরের আকাশ/ সু
মন্তব্য