-->
শিরোনাম

এক বাড়ি নিয়ে একটি গ্রাম

ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
এক বাড়ি নিয়ে একটি গ্রাম
ক্যাপশন: সিরাজুল সরকারের এই একটি বাড়ি ঘিরেই উমানাথপুর গ্রাম

কয়েকটি পাড়া নিয়ে একটি গ্রাম অথবা গ্রাম হলো জনবসতির একটি এলাকা। এটি প্রধানত কৃষিভিত্তিক অঞ্চলে ছোট বসতি। যেখানে ছোটখাটো কাজের মাধ্যমে মানুষ জীবনযাপন করে থাকে। সেই সঙ্গে থাকে রাস্তাঘাট, মসজিদ-মাদরাসা অথবা যেকোনো প্রতিষ্ঠান।

 

কিন্তু এর ব্যতিক্রম ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার রাজীবপুর ইউনিয়নের ‘উমানাথপুর’ নামের গ্রামটি। ৮ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত জনৈক সিরাজুল সরকারের বাড়ি। যেখানে দুটি বসতঘর, একটি গোয়ালঘর, আছে একটি ছোট পুকুর ও একটি টয়লেট ছাড়াও কিছু গাছগাছালি। অন্যের জমির আইল দিয়ে এ বাড়িতে প্রবেশ করতে হয়। আর এ বাড়ি ঘিরেই ‘উমানাথপুর’ গ্রাম।

 

এই গ্রামের বর্তমান লোকসংখ্যা পাঁচ এবং চারজন ভোটার। দুই দিন আগে একজন মারা গেলে এখন ভোটারসংখ্যা তিন। ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার উত্তর দিকের গ্রাম এটি। পাশেই পশ্চিমে রয়েছে ব্রহ্মপুত্র নদ।

 

গ্রামটিতে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১২-১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রাজীবপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের উমানাথপুর গ্রাম। কাগজপত্রে মৌজার নামও উমানাথপুর। এর আশপাশে গ্রামগুলো হলো—উত্তরে রামগোবিন্দপুর, দক্ষিণে হরিপুর, পূর্বে উদয়রামপুর ও পশ্চিমে রামগোবিন্দপুর ও হরিপুর। সিরাজ সরকারের নামীয় ২৫ শতক জমির ওপর বাড়িটি অবস্থিত।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই ইউনিয়নে মোট গ্রামের সংখ্যা ৪৩। সিরাজ সরকার বলেন, ‘আমার বাবা সাবেক ইউপি সদস্য রমজান আলী সরকার ও ভাই মজিবুর রহমান সরকার ও মা সামর্থ্যবান ছিলেন এই বাড়ির মূল মালিক। তাঁদের উত্তরসূরি হিসেবে পরিবারসহ এখন বসবাস করছি। পরিবারে মোট সদস্য পাঁচজন। এক ছেলে দুই দিন আগে মারা গেলে এখন আমি, স্ত্রী ও পুত্রবধূ ভোটার। নিজের কিছু জমিজমা চাষাবাদ করে ও উপজেলা সদরে সাবরেজিস্ট্রি অফিসে দলিল লেখক হিসেবে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করি। রাস্তাঘাট না থাকায় অন্যের জমির আইল দিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করতে হয়। বর্ষকালে একরকম ঘরবন্দি থাকতে হয়। নিজের বোনেরা থাকেন বাড়ির পেছনে অন্য গ্রামে।’

 

‘একটি বাড়ি নিয়ে একটি গ্রাম’ এর সত্যতা নিশ্চিত করে স্থানীয় রাজীবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আলী ফকির বলেন, যেহেতু পুরো গ্রামে একটি বাড়ি। তাই উন্নয়ন করার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হচ্ছে না।

 

ঈশ্বরগঞ্জ ইউএনও সারমিনা ছাত্তার বলেন, ‘এই রকম গ্রাম তো কোথাও থাকার কথা নয়। এর আগে জানা ছিল না। এখন খোঁজ নিয়ে দেখা হবে কোন নীতিমালায় এই গ্রামটি হয়েছিল।’

 

ভোরের আকাশ/মি

মন্তব্য

Beta version