উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানিতে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের সাথে পৌর সদরের একমাত্র যোগাযোগের সড়ক কাশিনাথপুর-শক্তিপুর আঞ্চলিক সড়কের চিথুলিয়া এলাকায় বন্যার পানির স্রোতে ভেঙ্গে যাওয়ায় ওই এলাকার প্রায় ৯ গ্রামের অন্তত ১০ হাজার লোকের যাতায়াতে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
জানা যায়, উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের সাথে পৌর সদরের যোগাযোগের একমাত্র সড়ক কাশিনাথপুর-শক্তিপুর সড়ক দিয়ে প্রতিদিন জরুরি শিশুখাদ্য প্রায় ৭০০ মণ গরুর দুধ পরিবহণ নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সড়ক ভেঙে যাওয়ায় এখান দিয়ে নিয়ে যাওয়া বন্ধ রয়েছে এবং সাথে ধান, চালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের পণ্য পরিবহণেও চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীর।
রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়া গ্রামগুলি হলো, কায়েমকোলা, বাঙ্গালপাড়া, সায়েস্তাবাদ, সরাতৈল, বৃ-আঙ্গারু, চর আঙ্গারু, বনগ্রাম, কাশিনাথপুর, চিথুলিয়া।
স্থানীয় এলজিইডি বিভাগের লোকজন এ ভাঙ্গা অংশ মেরামতের জন্য বরাদ্দ বেশি পরিমাণে বাড়িয়ে নেয়ার অপকৌশল হিসাবে ধীরগতিতে মেরামত কাজ করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে এলাকাবাসীর।
অভিযোগের সত্যতা মেলে এলজিইডি অফিসের এস.এ.ই আমির ফরুক সরকারের বক্তব্যে তিনি সংবাদকর্মীদের বলেন, ‘বক্তব্য দিয়ে কি হবে, এ কাজের জন্য কীভাবে বরাদ্দ বেশি আনা যায় আপনারা সেই চেষ্টা করেন।’
এ বিষয়ে কায়েমপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হাসিবুল হাসান ভোরের আকাশকে বলেন, বুধবার (১০ জুলাই) রাতে সড়কটির চিথুলিয়া অংশে বন্যার পানির স্রোতে ভেঙ্গে যাওয়ার দেড়সপ্তাহ পার হলেও সড়কটি সম্পূর্ণ মেরামত না করায় এ এলাকার ৯ গ্রামের বাসিন্দাদের প্রতিদিন যাতায়াতে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে এ সব গ্রাম থেকে প্রতিদিন জরুরি শিশুখাদ্য প্রায় ৭০০ মণ গরুর দুধ এ সড়ক দিয়ে বাঘাবাড়ি মিল্কভিটাসহ অন্যান্য দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানায় সরবরাহ করা হয়। এ সড়কটি ভেঙ্গে যাওয়ায় এই বিশাল পরিমাণ দুধ প্রায় ৭/৮ কিলোমিটার পথ বেশি ঘুরে যেতে খরচ ও সময় বেশি সময় ব্যয় হচ্ছে। এতে সঠিক সময় দুধ পৌঁছাতে না পাড়লে তা পথে নষ্ট হয়ে কৃষকের চরম আর্থিক লোকশান গুনতে হচ্ছে।
চিথুলিয়া গ্রামের হাজী শাহজাহান, দুলাল হোসেন, আব্দুল কুদ্দুস, হাবিবুর মোল্লা ভোরের আকাশকে বলেন, মঙ্গলবার সকাল থেকে সড়কটির ওই অংশের নিচের ছিদ্র দিয়ে দুইদিন ধরে পনি গড়তে থাকে। এলাকাবাসী পক্ষ থেকে এখানে বস্তা ফেলে এটি দ্রুত মেরামতের জন্য শাহজাদপুর এলজিইডি অফিসকে বার বার তাগাদা দিলেও তারা তা গায়ে লাগায়নি। এরপর বুধবার (১০ জুলাই) ভেঙ্গে যাওয়ার পর খবর দিলেও তারা দুইদিন ধরে কিছু কাঁচা-অবাত্তি বাঁশ ও এ সড়কের পাশের ইউকালেক্টাস গাছ দিয়ে খুবই ধীরগতিতে পাইলিং কাজ করছেন। ফলে এ কাজ শেষ হতে বেশি সময় অপচয় হচ্ছে। এতে এলাকাবাসীকে দীর্ঘ ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা প্রকৌশলী এ. এইচ. এম. কামরুল হাসান রনি ভোরের আকাশকে বলেন, শাহজাদপুর উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের চিথুলিয়ায় বন্যার পানির স্রোতে রাস্তা ভেঙে গেছে। ভাঙ্গার পরিমাণ ও পানির স্রোত বেশি হওয়ায় কাজ শেষ করতে একটু বেশি সময় লাগছে। গাছের গুঁড়ি ও বস্তা ফালানো হচ্ছে। আশা করি আগামী কয়েকদিনের মধ্যে এখানকার মেরামতের কাজ শেষ হবে।
ভোরের আকাশ/ সু
মন্তব্য