-->
শিরোনাম

সিরাজগঞ্জে বন্যায় পানিবন্দি ৩০ হাজার গবাদি পশু

খাদ্য সংকট

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জে বন্যায় পানিবন্দি ৩০ হাজার গবাদি পশু
যমুনার চরে পানিবন্দি গবাদি পশু

সিরাজগঞ্জে এবার বন্যায় সাধারন মানুষের মতো পালিত গবাদি পশুও পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। এ জেলায় বন্যা কবলিত কাজীপুর, সদর, বেলকুচি, শাহজাদপুর ও চৌহালীসহ পাঁচটি উপজেলায় প্রায় ৩০ হাজার গবাদি পশু এখন পানিবন্দি হয়েছে। পানিবন্দি গবাদি পশু গুলোকে পলিথিন কিংবা কাপড়ের তৈরি ছাউনি তৈরী করে রাখা হয়েছে বন্যা নিয়ন্ত্র বাঁধ ও উচুঁ স্থানে। বন্যায় জেলায় ১০ হাজার হেক্টর ফসলী জমি, চরণভুমি, চরাঞ্চল এবং নিচু এলাকা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট।

তবে সিরাজগঞ্জ প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. ওমর ফারুক ভোরের আকাশকে বলেন, জেলার পাঁচটি উপজেলায় প্রায় ৩০ হাজার গবাদিপশু পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে কাজীপুর, সদর ও চৌহালী উপজেলায় বেশি। চরাঞ্চল নিচু এলাকার ঘাস পানিতে তলিয়ে গেছে এজন্য সমস্যা হচ্ছে। তবে যমুনার পানি কমতে থাকায় কিছুটা উন্নতি হচ্ছে। পানিবন্দি গবাদি পশুর সংখ্যা কমে আসছে। প্রাণী সম্পদ থেকে গবাদি পশুর জন্য খাদ্য দেয়া হবে। আমরা তালিকা করছি। যাতে প্রান্তিক ও গরীব খামারিরা খাদ্য পায়। গবাদিপশু যেন রোগব্যাধিতে আক্রান্ত না হয় এজন্য আমরা পাঁচটি মেডিকেল টিম গঠন করেছি। তারা নিয়মিত বানভাসি কৃষক ও খামারিদের পরামর্শ দিচ্ছেন।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বেলুটিয়া গ্রামের কৃষক নুরুল ইসলাম ভোরের আকাশকে বলেন, ‘ঘরবাড়ি তলাইয়া গেছে, গরু বাছুর সমস্ত কিছু পানি ভিতর। রাস্তাঘাট তলাইয়া গেছে। গরু বাছুর নিয়া বিপদে পড়ছি। বাড়িতে রান্না করতে পারি না। সব জাগাতে পানি। আমগোরে থাকার জাগা নাই গরু ছাগল রাখমু কোনে। ঠিক মতো গরু ছাগলের খাওন দিবার পারছি না।’

এদিকে দুইদিন পানির বাড়ার পরে আবারও কমতে শুরু করেছে যমুনা নদীর পানি। ফলে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেয়া মানুষ বাড়িঘরে ফিরতে শুরু করেছে। শনিবার সকাল ৬টা থেকে রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্ট এলাকায় যমুনা নদীর পানি ১৫ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে এখনও পানি বন্দি অবস্থায় দিন পার করছেন জেলার ৫টি উপজেলার প্রায় অধ্যলাখ মানুষ। সড়কে পানি থাকায় ব্যহত হচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। বন্ধ রয়েছে প্রায় শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমির ফসল ও শতাধিক তাঁত কারখানা। ফলে চরম দুর্ভোগে রয়েছে বন্যা কবলিত এলাকার কৃষক ও শ্রমজীবিরা।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রনজিত কুমার সরকার ভোরের আকাশকে বলেন, যমুনা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাধ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি ১৫ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই মুহুর্তে আর বড় ধরনের বন্যা হওয়ার সম্ভবনা নেই।

 

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version