দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ভেঙে পড়া বেইলি ব্রিজ প্রায় দুই বছরেও নির্মাণ না হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন ওই ব্রিজের ওপর দিয়ে চলাচলকারী দশ গ্রামের বাসিন্দারা। একই সঙ্গে বন্ধ হয়েছে দশ গ্রামের সড়কপথের যোগাযোগ ব্যবস্থা।
জানা যায়, উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের বারাইপাড়া গ্রামের সঙ্গে ছোট যমুনা নদীর পূর্ব প্রান্তের দক্ষিণ এলাকাসহ নদীর পশ্চিম প্রান্তের খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের খয়েরবাড়ী বাজারসহ বিভিন্ন এলাকার সঙ্গে সহজ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা হচ্ছে বারাইপাড়া গ্রামের কমিউনিটি ক্লিনিক সংলগ্ন সড়কটি।
স্থানীয়রা জানান, খয়েরবাড়ী ও দৌলতপুর ইউনিয়নের প্রায় ৪০০ বিঘা ফসলি জমির জলবদ্ধতা নিরসনকল্পে ২০২০ সালে বারাইপাড়া এলাকায় ৯০০ ফুট দীর্ঘ ক্যানেলসহ সড়কের ওপর লোহার বেইলি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। সেই ব্রিজটি ছিল ফুলবাড়ী উপজেলা সদরের সঙ্গে নদীর এপার ও ওপারের ১০ গ্রামবাসীর একমাত্রা সহজ সড়কপথের যোগাযোগ ব্যবস্থা।
কিন্তু প্রায় দুই বছর পূর্বে বর্ষার পানির তোড়ে ব্রিজটি ভেঙে পড়ে। এতে বন্ধ হয়ে গেছে ১০ গ্রামবাসীর চলাচল ব্যবস্থা। দুই কিলোমিটার পথ যেতে পারি দিতে হচ্ছে ১৪ কিলোমিটার। ভেঙে পড়ার সময় উপজেলা প্রকৌশলী এলজিইডির দপ্তর থেকে লোকজন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও এখনো কোনো কাজ হয়নি। ফলে বিধ্বস্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে বেইলি ব্রিজটি।
বারাইপাড়া গ্রামের মিজানুর রহমান ও পার্শ্ববর্তী ঘোনাপাড়া গ্রামের আব্দুর রহিম বলেন, ফসলি জমির জলবদ্ধতা নিষ্কাশনের আগে রাস্তাটি ভালো ছিল এবং এলাকার ১০ গ্রামের মানুষের উপজেলা সদরে যাতায়াতের সহজ পথ ছিল এটি। কিন্তু ক্যানেল নির্মাণ করার প্রয়োজনে সেখানে লোহার তৈরি বেইলি ব্রিজ তৈরি করার জন্য আজ এলাকাবাসীকে জনদুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। ব্রিজটি তৈরির পর বর্ষা মৌসুমে পানি আর ক্যানেলের পানির স্রোতে ব্রিজের দুইপাশের মাটি সরে যাওয়ায় ব্রিজটি ভেঙে যায়। তখন থেকেই ব্রিজটি কোমর বাঁকা অবস্থায় পড়ে আছে সেখানে।
দৌলতপুর ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, ভেঙে পড়া বেইলি ব্রিজটি পুনরায় নির্মাণের জন্য বারংবার উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভায় উত্থাপন করা হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে দ্রুত ব্রিজটি নির্মাণ করা হবে।
খয়েরবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক বলেন, ব্রিজটি ভেঙে পড়ায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার মানুষজন। ব্রিজটি নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে তাগিদ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শফিউল ইসলাম বলেন, বেইলি ব্রিজটি এলজিইডির আইডিভুক্ত রাস্তার ওপর। অর্থ বরাদ্দ না থাকায় এলজিইডির পক্ষে সেটি নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ব্রিজটি নির্মাণের জন্য একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল সেটি অনুমোদন পাওয়া গেছে। আশা করা যায় দ্রুত ব্রিজটির নির্মাণকাজ শুরু করা যাবে।
ইউএনও মীর মো. আল কামাহ্ তমাল বলেন, ব্রিজটি নির্মাণের জন্য দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের থেকে টেন্ডার (দরপত্র) আহ্বান করা হয়েছে। ঠিকাদার নিযুক্ত হলেই ব্রিজের নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে বলে জানান তিনি।
ভোরের আকাশ/ সু
মন্তব্য