কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের হত্যা, তাদের ওপর হামলা-মামলা ও গ্রেফতারের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দায়ী করে নিজ কার্যালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর ছবি সরিয়ে নিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. শামীমা সুলতানা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজের কার্যালয় থেকে ছবি সরানোর বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন শিক্ষিকা। বিজ্ঞাপন এর আগে, আজ দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অধ্যাপক শামিমা সুলতানার অফিস কক্ষে বসা একটি ছবি ভাইরাল হয়। ওই ছবিতে দেখা যায়, শামীমা সুলতানার পেছনের দেয়ালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি টাঙানো থাকলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি নেই।
এ বিষয়ে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা বলেন, যে সরকারের দায়িত্ব ছিল দেশের সকল নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, সেই সরকার আজ ঘাতকে পরিণত হয়েছে। আমার মনে হয় মানুষের হৃদয় থেকে তার (শেখ হাসিনা) ছবি মুছে গেছে। তিনি কোটা আৃৃৃৃৃৃৃন্দোলন ঘিরে শিক্ষার্থীদের ওপর নির্মম নির্যাতন চালিয়েছেন, আবার বার বার মিথ্যাচার করেছেন। তিনি শিক্ষার্থীদের উপর হামলার নির্দেশ দিয়েছেন। তার হাতে অসংখ্য শিক্ষার্থীর রক্ত লেগে আছে। শিক্ষার্থীরা আমার সন্তানের মতো। যার হাত আমার সন্তানের রক্তে রঞ্জিত, তার ছবি আমার দেয়ালে রাখতে চাই না। তাই তার ছবি দেয়াল থেকে সরিয়ে ফেলেছি।' তিনি আরও বলেন, আমি কিন্তু জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিটি দেয়াল থেকে সরাইনি।
দেশের এই পরিস্থিতিতে আমার মনে হয়েছে বঙ্গবন্ধুর সমস্ত অর্জনকে শেখ হাসিনা গত কয়েকদিনের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের ও অপরাধযজ্ঞের মাধ্যমে ধূলিসাৎ করে দিয়েছে। আমি দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সকল সুনাগরিককে নিপীড়িত ছাত্র-জনতার পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান করছি। এদিকে এ ঘটনাকে আইনের লঙ্ঘন বলে মনে করছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তারা বলছেন, একজন পেশাজীবীর এমন কাণ্ড পেশাদারিত্বের লঙ্ঘনের শামিল।
বিজ্ঞাপন এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) রেজিস্ট্রার আবু হাসান বলেন, ‘এটি তো আইনের লঙ্ঘন। যে কেউ করলেই সেটা আইনের লঙ্ঘন হয়। বাংলাদেশে এই বিষয়ে একটি আইন রয়েছে। যে কোনো সরকারি কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি টাঙিয়ে রাখতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রী রয়েছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত এ ছবি নামানো আইনগত নয়। বিষয়টি ভিসি স্যার অবগত কিনা জানা নেই। উলেখ্য, ২০০২ সালের ২৭ মার্চ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রীদের অফিস কক্ষ, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাস ও সকল স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের অফিস কক্ষে সরকার প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিকৃতি টানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়
মন্তব্য