চব্বিশ ঘন্টার রেকর্ড বৃষ্টিতে ডুবেছে নোয়াখালী জেলা শহর। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে টানা কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে শহরের বেশ কয়েকটি স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ডুবে গেছে শহররের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক; বাসাবাড়িতেও ঢুকছে পানি। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে লক্ষাধিক মানুষ।
শুক্রবার বিকেল ৪টায় জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যবেক্ষক আরজুল ইসলাম জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা থেকে শুক্রবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত জেলা শহর মাইজদীতে ২৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এটি গত ২০ বছরের মধ্যে নোয়াখালীতে একদিনের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী নোয়াখালী আরও ২-১ দিন হালকা বৃষ্টি হতে পারে। তবে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা কম।
আজ শনিবার শহরের প্রাণকেন্দ্র উত্তর ফকির পুর এলাকার সফিক উল্লাহ, খোয়াজ মিয়া, কামাল উদ্দিন, টিটু আমিন, কামরুল ইসলাম, নোমান আজাদ সোহাগসহ একাধিক বাসিন্দা বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে ভারি বৃষ্টিতে রীতিমতো ভেসে গেছে মাইজদী শহর। উত্তর ফকির পুর এলাকায় আমাদের বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে গেছে। জলবদ্ধতার কারণে অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে ছেলে-মেয়ে নিয়ে অনত্র উঠেছে এবং লক্ষ লক্ষ টাকার মালামাল নষ্ট হয়েছে। ফোর লেন সড়কের কাজ করার সময় মূল ড্রেন ভেঙ্গে পুনরায় ড্রেনের ব্যবস্থা না করায় বাসা বাড়িতে পানি ঢুকেছে। বার বার জানানোর পরও পৌর মেয়র, কাউন্সিলর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। আমরা মানবেতর জীবন-যাপন করছি।
এদিকে ডিসি অফিস, এসপি অফিস, জজ কোর্টের সামনের সড়কসহ অধিকাংশ সড়ক বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে। জেলা শহর মাইজদীর প্রধান সড়কের টাউন হলের মোড়, জামে মসজিদের মোড়ে পানি উঠেছে। এ বৃষ্টিতে মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। সড়কের আশপাশের বাসাবাড়ির আঙিনায় এখনো বৃষ্টির পানি ডুবে আছে।
স্থানীয়রা বলছেন, তিন-চার ঘণ্টা বৃষ্টি হলেই প্রায় তলিয়ে যায় নোয়াখালী শহরের অনেক সড়ক। যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মিল্টন রায় বলেন, সম্প্রতি অতি ভারী বর্ষণে নোয়াখালী শহরে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা নিরসনে করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভা আগামী শুক্রবার বিকেল ৪টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে সাংবাদিকবৃন্দকে উপস্থিত থেকে পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর নোয়াখালী শহর গড়ার লক্ষ্যে মূল্যবান মতামত প্রদানের অনুরোধ করা হয়েছে।
ভোরের আকাশ/ সু
মন্তব্য