বেকারত্ব ঘুচাতে স্বপ্ন দেখেন উদ্যোক্তা হওয়ার। নিভৃত গ্রামাঞ্চলের যুবক নুর আলম মন্ডল (৩৫)। বছর খানেক আগে ক্রয় করেন একটি বকনা গরু। সম্প্রতি সেই গরুটি একই সঙ্গে প্রসব করেছে তিনটি বাচ্চা। এভাবেই একটি খামার গড়ে তুলবেন বলে আশা করছেন এই যুবক।
সোমবার (১৯ আগস্ট) সকালের দিকে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার খোর্দ্দ রুহিয়া (মন্ডলপাড়া) গ্রামে দেখা গেছে- প্রসব হওয়া গাভী ও বাছুরের দৃশ্য। এসময় উৎসুক জনতার ভীড়ও লক্ষ্যণীয়।জানা যায়, খোর্দ্দ রুহিয়া গ্রামের আব্দুর রহমান মন্ডলের ছেলে নুর আলম মন্ডল কৃষি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন। এরই পাশাপাশি বাড়িতে একটি গরুর খামার করার পরিকল্পনা নেয়। প্রথমে গচ্ছিত টাকা দিয়ে একটি দেশীয় জাতের বকনা বাছুর ক্রয় করেন।
এরপর সেটি লালন-পালন শুরু করেন। এরই মধ্যে কৃত্রিম প্রজননে দেশিয় এই গরু থেকে ফ্রিজিয়াম জাতের একটি বকনা বাছুর প্রসব হয়। এই বাছুরটি ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। এরপর গর্ভ (গাভীন) হয় ফ্রিজিয়া জাতের এ গরুটি। ধারবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) বিকেলের দিকে গাভীটি অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে। এসময় স্থানীয় ভেটরিনারী পল্লী চিকিৎসক মাসুদ মিয়া ও শামীম আকন্দকে খবর দেওয়া হয়। এই ডাক্তারা এসে বুঝতে পারেন, গাভীটি প্রসবের সময় ঘনিয়েছে। এরপর পরিকল্পিতভাবে বাচ্চা বের করার চেষ্টা করেন তারা। অবশেষে আল্লাহর অশেষ রহমতে একে-একে ৩টি বাচ্চা প্রসব করে গাভীটি। সবগুলো বাচ্চাই এঁড়ে এবং ফ্রিজিয়াম জাত। গাভী স্বাভাবিকভাবে একটি বাছুর জন্ম দেয়। কিন্তু তিনটি দেওয়া কমই হয়। এরই মধ্যে এই খবর ছড়িয়ে পড়ে আশপাশ এলাকায়। নুর আলমের বাড়িতে ভীড় করতে থাকে উৎসুক জনতা। প্রত্যেকদিনে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসছেন নারী-পুরুষ ওই তিন বাছুরকে একনজর দেখার জন্য ভীর করছে।
আলেমা বেগম নামের এক বৃদ্ধা বলেন, আমার সংসার জীবনের শুরু থেকে এখনও গাভী পালন করে আসছি। কখনো একটি ছাড়া ৩টি বাচ্চা প্রসব করেনি। এমনকি কোথাও এই খবর শুনিনি। এই প্রথম নুর আলমের গাভীর তিনটি বাচ্চা প্রসব দেখলাম।
গাভীর মালিক নুর আলম মন্ডল বলেন, এখন পর্যন্ত তিন বাচ্চাসহ গাভীটি সুস্থ রয়েছে। দুধ দোহন না করে বাছুরকে খাওয়ানো হয়। এছাড়া অতিরিক্ত এক কেজি করে গাভীর দুধ কিনে খাওয়ানো হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন- বাড়িতে খামার গড়ে তোলার স্বপ্ন নিয়ে প্রথমে একটি গাভী কিনেছি। সেই থেকে এই ৩ বাচ্চাসহ এখন ৫টি গুরু হলো। এসব দিয়ে খামারের পরিধি বাড়ানোর চেষ্টা করছি।
এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সিরাজুল ইসলাম বলেন, সাধারণত কৃত্রিম প্রজনন দিয়ে গাভীর কখনো একই সঙ্গে একাধিক বাচ্চা নেওয়া সম্ভব না। এটি আল্লাহ প্রদত্ত। গরুর মালিক নুর আলমকে সহযোগিতা করা হবে বলে আশ্বাস দেন।
ভোরের আকাশ/মি
মন্তব্য