-->
শিরোনাম

সলঙ্গায় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ১০ সদস্যের অনাস্থা

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
সলঙ্গায় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ১০ সদস্যের অনাস্থা

উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ লুট, ক্ষমতার অপব্যবহার ও ঘুষ-দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আ.লীগ নেতা মোখলেছুর রহমান তালুকদারের বিরুদ্ধে ১০ জন ইউপি সদস্য ও সদস্যা অনাস্থা জানিয়েছেন। রোববার দুপুরে ১০ ইউপি সদস্য ও সদস্যা স্বাক্ষরিত লিখিত অনাস্থা প্রস্তাবটি জেলা প্রশাসক বরাবর দেওয়া হয়েছে।

একই সঙ্গে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব,স্থানীয় সরকার বিভাগ সিরাজগঞ্জের উপ-পরিচালক, দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত পাবনা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ও উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অনুলিপি প্রেরণ করা হয়েছে।অনাস্থা প্রস্তাবে সই করেন সদস্য রফিকুল ইসলাম মন্টু, শরিফুল ইসলাম, মোছা. আফরোজা খাতুন, মোছা. হাওয়া খাতুন, মোছা. নাজমা খাতুন, আব্দুল বারিক প্রামানিক, রাশেদুল ইসলাম, দেলোয়ার হোসেন, মনিরুজ্জামান ও শরিফ।

প্রস্তাবে ইউপি সদস্যরা উল্লেখ করেছেন, দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে ইউপি চেয়ারম্যান বিধি না মেনে নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। তিনি দীর্ঘ দুই বছর যাবৎ ইউপি সদস্যগণের সম্মানি ভাতা প্রদান করেন না। বিগত তিন অর্থবছরের স্থানীয় ইউপি ট্যাক্স, ভূমি উন্নয়ন কর ও ট্রেড লাইসেন্স থেকে প্রাপ্ত অর্থ এবং উপজেলা থেকে ১% অর্থ কোন প্রকার উন্নয়ন কাজ না করে আত্মসাৎ করে আসছেন। এমনকি ইউনিয়ন উন্নয়ন সহায়তা তহবিল, কাবিখা, কাবিটা, টিআর, এডিপির প্রকল্প সমূহ বিধি বহির্ভূতভাবে একক সিদ্ধান্তে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নিজেই আংশিক বাস্তবায়ন অথবা অনেকক্ষেত্রে বাস্তবায়ন না করেই প্রকল্প সমূহের অর্থ আত্মসাৎ করে আসছেন। তা ছাড়াও বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা ও মাতৃকালীন ভাতা কোন প্রকার রেজুলেশন না করে নিজের পছন্দমত ব্যক্তিগণের নাম সুপারিশ করে উপজেলায় প্রেরণ করেন। অর্থের বিনিময়ে এডিপির প্রকল্পসমূহ বরাদ্দ দিয়ে আসছেন এবং গ্রাম আদালতের বিচার ইউপি সদস্যদের অবহিত না করে এজলাসে না বসে নিজ কক্ষেই বিচার কার্য্য পরিচালনা করে আসছেন। পবিত্র ঈদ উপলক্ষ্যে হতদরিদ্রদের জন্য বরাদ্দকৃত ভিজিএফ কার্ডের তালিকা ইউপি সদস্যগণের নিকট থেকে গ্রহণ না করে মিটিং ছাড়াই সাবেক চেয়ারম্যানের সময়ের উপকারভোগীদের নামের তালিকা উপজেলায় প্রেরণ করেন। ফলে বহুসংখ্যক হতদরিদ্র ব্যক্তিগণ তাদের প্রাপ্য অধিকার হতে বঞ্চিত হচ্ছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তিনি ইউপি সদস্যগণের মতামতের তোয়াক্কা না করে ভয়-ভীতি ও হুমকি-ধামকির মাধ্যমে মিটিং না করে রেজুলেশনে অতিরিক্ত স্বাক্ষর প্রদানে বাধ্য করে আসছেন।

চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান এককভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বার্থে পরিষদ ভবনে পর্যাপ্ত কক্ষ থাকা সত্বেও ইউপি সদস্যগণের জন্য কোন প্রকার বসার ব্যবস্থা রাখেন নাই। ইউপি সদস্যদের মতামত ব্যতিত তার ইচ্ছা মতো প্যানেল চেয়ারম্যান গঠন করেন। ফলে উক্ত দুর্নীতিগ্রস্থ ও স্বেচ্ছাচারী ব্যক্তির সাথে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমাদের কাজ করার সুযোগ না থাকায় আমরা তার বিরুদ্ধে এবং প্যানেল চেয়ারম্যান এর প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করিতেছি।

অভিযোগের বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে সলঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মোখলেছুর রহমান তালুকদার অনাস্থার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন,আমি আওয়ামী লীগ দলীয় মানুষ। অনাস্থাজ্ঞাপনকারী সদস্যদের অধিকাংশই বিএনপি করায় বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমাকে কেউ পছন্দ করছেন না।

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন,সলঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সদস্যদের আনীত অনাস্থার চিঠিটি পেয়েছি। এব্যাপারে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে জানান জেলা প্রশাসক।

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version