সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া পৌর এলাকার ঝিকিড়াতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় চোখে পাওয়া আঘাতকে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ফুফাতো ভাইয়েরা প্রতিপক্ষ মামাতো ভাইদের দ্বারা করা সন্ত্রাসী হামলায় চোখ নষ্ট হয়েছে এমন অভিযোগ তুলেছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেছেন মামাতো ভাইয়েরা।
আজ বুধবার (২১ আগস্ট) দুপুরে সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ তোলেন ঝিকিড়া গ্রামের মো. রেকোয়াত হোসেন রকেট ও তার পরিবার।
এর আগে গত সোমবার (১৯ আগস্ট) সকালে সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে একটি চোখ তুলে নেওয়ার অভিযোগ করেন একই মহল্লার ছাত্রদল নেতা পরিচয় দেওয়া সুজন সরকার ও তার পরিবার। এসময় সাবেক এমপির নির্দেশে তাদের থানায় আটকে রেখে চাঁদা দাবি করা হয় বলেও অভিযোগ তোলেন তারা। সুজন ও রকেট সম্পর্কে আপন মামাতো-ফুফাতো ভাই।
আজ সংবাদ সম্মেলনে মো. রেকোয়াত হোসেন রকেট বলেন, আমি পেশায় একজন ব্যবসায়ী। আপনাদের অবগতির জন্য বলতে চাই, গত সোমবার তারা সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাবে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের ভুল তথ্য দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করিয়েছে। আমি সাংবাদিক ভাইদের কাছে প্রকৃত তথ্য উপস্থাপন করতে চাই।
তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, অভিযুক্ত সুমন সরকার ও সুজন সরকার সম্পর্কে আমার আপন ফুপাতো ভাই। তাদের সাথে আমার ভালো সম্পর্ক এবং ছোট বেলা থেকেই কোলে পিঠে করে মানুষ করেছি। এমনকি তাদের বসবাস এর জন্য সম্পুর্ন নিঃস্বার্থভাবে আমার বাবা আলহাজ্ব রকিবুল ইসলামের নিজের লিজকৃত ভিপি সর্বমোট ৬ শতক জায়গার মধ্যে তাদের ৩ শতক জায়গায় বাস করার জন্য দেই। তারা আমাদের এই স্নেহ, ভালোবাসা ও মমতার সুযোগ নিয়ে পরবর্তীতে উক্ত জায়গা তাদের নিজের বলে দাবি করে এবং সেখানে পাকা স্থাপনা নির্মাণের পায়তারা শুরু করে। যেহেতু জায়গাটি আমার বাবার নিজনামীয় লিজকৃত তাই আমরা তাদের পাকা স্থাপনা নির্মাণে বাধা দেই। এ থেকেই তাদের সাথে আমাদের সম্পর্কের টানাপোড়েন এর শুরু হয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা তাদেরকে স্নেহের দৃষ্টিতে দেখলেও তারা আমাদের প্রতি সর্বদাই আগ্রাসী, বদমেজাজী ও প্রতিহিংসা মূলক আচরণ শুরু করে। অভিযুক্তরা পূর্বে থেকেই এলাকার বখাটে, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী বাহিনী হিসেবে এলাকাবাসীর নিকট পরিচিত। প্রতিহিংসায় ও সম্পত্তির লোভে তারা ব্যাপক আক্রমনাত্মক হয়ে ওঠে এবং আমাদের মারপিট করে ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এরপর অভিযুক্তরাসহ তাদের সন্ত্রাসীবাহিনী একত্রিত হয়ে আমার বাড়িতে বেড়াতে আসা আমার খালাতো ভাই মো. ফরজ আলী ও আমার চাচাতো ভাই মো. বুলবুল আহমেদকে বেধড়ক মাড়পিট করে। বিষয়টি নিয়ে আমি নিজে বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে উল্লাপাড়া মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করি যা এখনো বিজ্ঞ আদালতে চলমান। এরপর তারা উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে উক্ত মামলা থেকে বাঁচতে এবং আমাদের ফাঁসাতে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট একটি মামলা আদলতে দায়ের করে।
এসময় তিনি তাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বলেন, কয়েকমাস পূর্বে বাইক অ্যক্সিডেন্টে চোখে আঘাত পেয়ে তারা আমাদের উপর দোষ চাপায় এবং বলে আমরা তাদের উপর হামলা করেছি। যা সম্পূর্ন মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও হয়রানীমূলক অভিযোগ। আদালতে আমাদের বিরুদ্ধে করা মামলায় আমরা স্থায়ী জমিনে আছি। কিন্তু, আমাদের দায়ের করা মামলায় তারা পরবর্তী তারিখে আদলতে আটক হওয়ার ভয়ে মামলা থেকে বাঁচার জন্য নানা রকম ফন্দি ফিকিড় ও স্বঢ়যন্ত্র করতে থাকে। এছাড়াও গত ৫ আগস্ট দেশের শাসন ব্যবস্থায় একটি আমুল পরিবর্তন হলে তারা দেশের চলমান অবস্থাকে কাজে লাগিয়ে মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য প্রকৃত ঘটনাকে একটি রাজনৈতিক ঘটনা হিসেবে প্রচার করার পরিকল্পনা চালায়। তারা পুরো ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য সকল দোষ আওয়ামী লীগ নেতা ও ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. নজরুল ইসলাম লেবু তালুকদার, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), ও তদন্তকারী কর্মকর্তার উপর চাপায়। সম্পূর্ন ঘটনা মিথ্যা, তারা নিজেদেরকে ছাত্রদলের কর্মী দাবি করে রাজনৈতিক সুবিধা লাভের আশায় পরিকল্পনা চালায়, কিন্তু তারা মূলত রাজনৈতিক কোন দলের সাথে সম্পৃক্ত নয়। বরং আমি (রেকোয়াত হোসেন রকেট) সাবেক পৌর ছাত্রদলের সেক্রেটারি ও সরকারি আকবর আলী কলেজের ছাত্রদল প্যানেলের জি. এস পদপ্রার্থী ছিলাম।
সংবাদ সম্মেলনে রেকোয়াত হোসেন রকেট ছাড়াও তার বাবা আলহাজ্ব রকিবুল ইসলাম ও স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
ভোরের আকাশ/মি
মন্তব্য