-->

সাভারে শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে ১২৬ জনের নামে হত্যা মামলা

কামরুল হাসান রুবেল, সাভার (ঢাকা)
সাভারে শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে ১২৬ জনের নামে হত্যা মামলা

বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালে ঢাকা জেলার সাভারে ৫ আগস্ট গুলিবিদ্ধ হয়ে আব্দুল আহাদ সৈকত (১৭) নামের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে ১২৬ জনের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসময় মামলায় অজ্ঞাত আরো ২৫০-৩০০ জনের নাম উল্লেখ করেছে নিহতের পরিবার। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) রাতে নিহত আব্দুল আহাদ সৈকতের বাবা নজরুল ইসলাম সাভার মডেল থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন।

নিহত মো. আব্দুল আহাদ সৈকত (১৭) বগুড়া জেলার সোনাতলা থানার উত্তরদিঘলকান্দি গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে। তিনি সাভার পৌর এলাকার শাহীবাগ মহল্লায় পরিবারের সঙ্গে বসবাস করতেন। তিনি ঢাকার কমার্স কলেজের একাদশ শ্রেনীর শিক্ষার্থী ছিলেন।

আসামিরা হলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত, সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, সাবেক সাভার উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজিব, সাবেক মেয়র হাজী আব্দুল গণি, ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম মানিক মোল্লা, তেঁতুলজোড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফখরুল আলম সমর, বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সুজন, বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সেলিম মন্ডল, সাভার সদর ইউনিয়ন সাবেক চেয়ারম্যান সোহেল রানা, ভাকুর্তা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেন, আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি ফারুক হাসান তুহিন, মাজহারুল ইসলাম রুবেল, সাবেক ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানের এপিএস শামীম আহমেদ,সাভার উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক, রাজু আহমেদ, মোবারক হোসেন খান পলক, মো. আব্দুল কুদ্দুস, কামরুল হাসান শাহীন, মেহেদী হাসান তুষার, সায়েম মোল্লা, আব্দুর রব, রাজু মোল্লা, জাকির হোসেন ওরফে মামা জাকির, মো. ইসরাফিল, রায়হান ইসলাম রিপন, মাসুম দেওয়ান, হাসান আলী, হৃদয় সরকার, জীবন সরকার, আহমেদ ফয়সাল নাঈম তুর্য্য, পাভেল ওরফে তোতলা পাভেল, আব্দুর রাজ্জাক, প্রবাল, হাজী মো. আব্বাস আলী, মো. হাবিজ উদ্দিন,হান্নান মিয়া, মো. রাজা মিয়া, মো. গিয়াস উদ্দিন, ফজলুল হক ওরফে ফজা, মো. আব্দুর রব, শরিফুল ইসলাম শরীফ, রুবায়েত ইসলাম শান্ত, মো. মমতাজুল হক জনি, আমজাদ হোসেন, সোহাগ, রমজান মিয়া, রুবেল, উজ্জল, আব্দুল মতিন, মহিদুল ইসলাম রুবেল ওরফে গিট্টু রুবেল, আসিফ, মোহাম্মাদ হোসেন, মো. রমজান আলী, সাইফুল ইসলাম, কিরণ, ইউনুছ পারভেজ, সিদ্দিক, হামিদ, মামুন, লতিফ, নুরুল আমীন রানা ওরফে ব্যস্ত রানা, মুকুল, সেলিম আহমেদ ওরফে জুট সেলিম, ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী সেলিম মিয়া, রফিকসহ আরও অজ্ঞাতনামা ২৫০/৩০০ জন আসামীর বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আব্দুল আহাদ সৈকত সাভারের থানা রোড়ে মুক্তিমোড় এলাকার আসে। সেখানে ছাত্রদের যৌক্তিক দাবীর পক্ষে একাত্বতা পোষণ করে ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেন তিনি। এসময় আসামীদের প্রত্যক্ষ ও প্ররোক্ষ হুকুমে এবং প্ররোচনায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরাসহ আওয়ামী অঙ্গ সংঘঠনের অজ্ঞাতনামা আরো আসামীরা হামলা করে। আসামীদের সঙ্গে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আন্দোলনরত ছাত্রদের ধাওয়া করে এলোপাতারি পিটিয়ে এবং উপর্যুপরী গুলি বর্ষণ করে। সেসময় আব্দুল আহাদ সৈকতের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলি লাগে। পরে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাভার মডেল থানার এসআই জহুরুল ইসলাম বলেন, ১২৬ জনের নাম উল্লেখসহ আরো জনের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীর পরিবার মামলা দায়ের করেছে। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।

 

ভোরের আকাশ/মি

মন্তব্য

Beta version