-->
শিরোনাম

কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রে বেড়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদন

রাঙামাটি প্রতিনিধি
কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রে বেড়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদন
ক্যাপশন: কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্র

টানা ভারি বর্ষণে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে পানি বেড়ে সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতার কাছাকাছি পৌঁছেছে। কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদনও বেড়েছে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এ টি এম আব্দুজ্জাহের বলেন, গতকাল শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে হ্রদে পানির উচ্চতা রয়েছে ১০৬.০৬ ফুট এমএসএল। যা বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় ছিল ছিল ১০৫.১১ ফুট এমএসএল আর বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় ছিল ১০৫.৮৪ ফুট এমএসএল।

তিনি আরও বলেন, “কাপ্তাই হ্রদে সর্বোচ্চ পানি ধারণক্ষমতা ১০৯ ফুট এমএসএল (মিন সি লেভেল)। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রতি সেকেন্ডে ৩০ হাজার কিউসেক পানি ছেড়ে দেওয়া হয়। আর সাধারণত পানির উচ্চতা ১০৮ এর বেশি হলে তখন আমরা গেইটগুলো খুলে দিয়ে থাকি।”

এদিকে আগাম সতর্কতা ছাড়াই হ্রদের গেইটগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে তথ্য ছড়িয়েছে তাকে ‘গুজব’ বলছেন এই প্রকৌশলী।

তিনি বলেন, “কাপ্তাই হ্রদের গেইটগুলো খুলে দেওয়ার আগে সবসময়ই আমরা কাপ্তাই ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলা প্রশাসন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও নৌবাহিনীকে চিঠি দিয়ে অবহিত করি। এরপর তারাই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়। আমরা মাইকিং বা প্রচার করি না, যা করার ওনারাই করেন।”

দেশের এই দুর্যোগ পরিস্থিতিতে সবার দায়িত্বশীল আচরণ করা উচিৎ বলে মন্তব্য করেন তিনি। তবে হ্রদের পানি বাড়ায় কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদনও বেড়েছে। শুক্রবার ২১৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে, যা এই মৌসুমে সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।

জলবিদ্যুৎকেন্দ্রের তথ্য মতে, বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে ২৩০ থেকে সর্বোচ্চ ২৪২ মেগাওয়াট। এর মধ্যে ১ ও ২ নম্বর ইউনিট থেকে সর্বোচ্চ ৪৬ মেগাওয়াট করে এবং ৩, ৪ ও ৫ নম্বর ইউনিট থেকে সর্বোচ্চ ৫০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়।

কাপ্তাই হ্রদে পানি বাড়ায় বর্তমানে ১ নম্বর ইউনিট থেকে ৪৬ মেগাওয়াট, ৩ নম্বর ইউনিট থেকে ৪৯ মেগাওয়াট এবং ২, ৪ ও ৫ নম্বর ইউনিট থেকে গড়ে ৪০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। তবে যান্ত্রিক ত্রুটি ও নানান বাস্তবতার কারণে এখন আর সর্বোচ্চ ২৪৫ মেগাওয়াট উৎপাদন করা সম্ভব হয় না।

বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এ টি এম আব্দুজ্জাহের জানান, কাপ্তাই হ্রদে পানি না থাকায় গেল মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে একটি মাত্র ইউনিট চালু রাখা সম্ভব হয়েছিল। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন নেমে এসেছিল ২৫ মেগাওয়াটে। যা ছিল সর্বনিম্ন উৎপাদন। পরে জুলাই ও অগাস্ট মাসে কয়েক দফা বৃষ্টিতে হ্রদের পানি বেড়ে যায়। এতে পর্যায়ক্রমে সব কটি ইউনিট চালু করা সম্ভব হয়। বর্তমানে পাঁচটি ইউনিটেই বিদ্যুৎ উৎপাদন চলছে। গতকাল শুক্রবার এই উৎপাদন বেড়ে ২১৮ মেগাওয়াট হয়েছে, যা এই মৌসুমে সর্বোচ্চ।

এদিকে কাপ্তাই হ্রদের পানি বাড়ার কারণে শুক্রবার সকালে ডুবে গেছে ‘সিম্বল অব রাঙামাটি’ খ্যাত পর্যটনের ঝুলন্ত সেতুটি।

সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, এর মধ্যে সেতুর পাটাতন ডুবে গেছে, পানির বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও তলিয়ে যাচ্ছে সেতুটি। সাধারণত হ্রদে ১০৮ এমএসএল পানি উঠলে সেতুটি দুই থেকে তিনফুট পানির নীচে চলে যায়।

 

ভোরের আকাশ/মি

মন্তব্য

Beta version