-->
শিরোনাম

কক্সবাজারে কয়েকলাখ মানুষ পানিবন্দি, বন্যায় দুজন নিহত

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার
কক্সবাজারে কয়েকলাখ মানুষ পানিবন্দি, বন্যায় দুজন নিহত
মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদ সীমার ওপর

কক্সবাজারে বন্যায় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। রামুতে বন্যার পানিতে ডুবে দুই জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া গর্জনিয়ায় উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের স্রোতে এক যুবক ভেসে যায়। বৃহস্পতিবার বন্যার পানিতে ডুবে তাদের মৃত্যু হয়। নিহতরা হলেন, রামু উপজেলার সাচিং মারমা (২৬) ও আমজাদ হোছন (২২)। নিখোঁজ হলেন, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দোছড়ি ইউনিয়নের ছালেহ আহমদের ছেলে রবিউল আলম।

এদিকে পেকুয়া-চকরিয়ায় টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে অন্তত ২০ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির কারণে এসব এলাকা প্লাবিত হয়। এ সময় পেকুয়া ও চকরিয়ার ওপর দিয়ে প্রবাহিত মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যায় অন্তত কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়, দুর্গত এলাকায় বন্যার পানিতে শতাধিক ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। এতে বয়স্ক, শিশু ও নারীরা বিপাকে পড়েছেন। কাছে সাইক্লোন শেল্টার ও স্থানীয় লোকজনের বিল্ডিংয়ে অনেককে আশ্রয় নিতে দেখা গেছে। তবে শুকনো খাবার ও নিরাপদ পানি নিয়ে তাদের দুশ্চিন্তা রয়েছে।

জানা গেছে, বন্যার পানিতে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। রামু উপজেলার গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়া, কাউয়ারখোপ ও জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের অন্তত ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। বাঁকখালী নদীর ভাঙনে এসব এলাকার বাসিন্দারা হুমকির মুখে পড়েছে। সড়ক ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে । কারো চুলায় আগুন জ্বলছে না। এদিকে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক প্লাবিত হয়েছে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। একই সঙ্গে উখিয়া ও টেকনাফের ১০ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন এলাকায় একাধিক পাহাড় ধসের খবর পাওয়া গেছে। কক্সবাজারের প্রধান নদী বাঁকখালী ও মাতামুহুরীর পানি বিপদসীমার অতিক্রম করে প্রবাহিত হচ্ছে।

গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ি'র ইনচার্জ মুহম্মদ ফরহাদ আলী বলেন, সারারাত বৃষ্টির পর বেলা ১১টার দিকে গর্জনিয়া বাজার ও ফাঁড়িতে পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবেশ করে। বন্যার পানিতে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। পানির স্রোতে ভেসে গিয়ে দুই যুবক নিহতের খবর পাওয়া যাচ্ছে। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দোছড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দা রবিউল আলম নামের এক যুবক বাঁকখালী নদীর পানির স্রোতে ভেসে যাওয়ার খবর জেনেছি।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ তোফায়েল হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত কক্সবাজারে ২৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃষ্টি আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে।

রামু থানার ওসি আবু তাহের দেওয়ান বলেন, বন্যা পরিস্থিতি আকস্মিক তীব্র আকার ধারণ করায় রামুর বিভিন্ন এলাকায় পানির উচ্চতা বেড়ে গিয়েছে। অনন্ত ৩০ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। সবার সঙ্গে সমন্বয় করে দুর্ভোগ নিরসনে কাজ করা হচ্ছে।

চকরিয়া ইউএনও মো. ফখরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বন্যার্তদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণের জন্য একটি চাহিদাপত্র জেলা প্রশাসক বরাবর পাঠানো হয়েছে। এসব পণ্য হাতে এলে দুর্গত এলাকায় বিতরণ করা হবে।

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version