মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের নয়ানগর, ইমামপুর ইউনিয়নের কালীপুরা ও হোসেন্দী ইউনিয়নের ইসমানীরচর ও বলাকী এলাকার দুই শতাধিক পরিবার রয়েছে বর্ষা মৌসুমে নদী ভাঙনের ঝুঁকিতে। চলতি সপ্তাহে নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে বন্যা কবলিত হওয়া ও বসত ভিটে-বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার আশংকায় কপালে ভাজ পড়েছে মেঘনা পাড়ের অসহায় মানুষগুলোর।
স্থানীয় ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নয়ানগর গ্রামে সম্প্রতি তিনটি ও বলাকী গ্রামে ৭টি বাড়ি নদীতে বিলীন হওয়ার পর শতবর্ষী একটি মসজিদসহ নদীতীরবর্তী একাধিক পরিবারের বাড়ি রয়েছে ভাঙ্গনের হুমকিতে। গ্রাম ও মসজিদ রক্ষায় বাধ নির্মাণের দাবী ভুক্তভোগীদের। বর্ষায় পানি বাড়লে ভাঙ্গন অব্যাহত থাকতে পারে। এতে গজারিয়া ইউপির নয়ানগর গ্রামের শতবর্ষী মসজিদ এর উত্তর ও দক্ষিণ পাশের অধিকাংশ বাড়ির নদী তীরবর্তী সুরক্ষা দেয়াল ভেঙ্গে পড়ায় পরিবারগুলো রয়েছে ভাঙ্গণ আতঙ্কে।
সম্প্রতি (মে ২০২৪) রেমালের সময় হঠাৎ পানি বৃদ্বি ও ঢেউয়ের স্রোতের তোড়ে নয়ানগরে তারা মিয়া, জাহাঙ্গীর মাষ্টার ও রফিকুল ইসলামের ভিটে বিলীন হয়ে গেছে। বাড়ির তলদেশের মাটি ধ্বসে গিয়ে বাড়ির ঘর ও স্থাপনা হেলে পড়েছিল কয়েক পরিবারের। বর্তমানে সময়ে পানি বৃদ্ধির কারণে আবারো ভাঙণের হুমতিকে রয়েছেন ওই মহল্লার মানুষেরা।
এ দিকে পানি বৃদ্ধি পেয়ে হোসেন্দী ইউপির ইসমানীরচর জেলে পাড়ায় জলমগ্ন হয়ে পড়া পরিবারগুলোকে গতকাল শুক্রবার চাল-ডাল ও শুকনো খাবার প্রদান করেছে উপজেলা প্রশাসন। মূল ভুখন্ড হতে নদী বিচ্ছিন্ন হোসেন্দী ইউপির চরবলাকী গ্রামের আমান উল্লাহর বাড়িসহ সাতঘরিয়া কান্দীর ২৫ থেকে ৩০ পরিবার নদীর তীরে, সম্পন্ন গৃহস্ত আমানউল্লাহ প্রতি বর্ষায় ব্যক্তিগত টাকায় জিও ব্যাগে বালুভরে ভাঙ্গন প্রতিরোধের চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা করতে পারেননি। গত মে মাসে রেমাল তান্ডবে ওই সাত ঘরিয়াকান্দী মহল্লার ৭/৮ টি বাড়ি নদীতে বিলীন হওয়াসহ অনেক পরিবারের অংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
ইমামপুর ইউনিয়নের কালীপুরা গ্রামের নদী ভাঙ্গণের শিকার একাধিক পরিবারের মানুষ নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আমরা সাময়িক কোন সহযোগিতা চাই না, ঘরবাড়ি রক্ষায় স্থায়ী সমাধান চান ক্ষতিগ্রস্থরা।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মুন্সীগঞ্জ কার্যালয়ের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী শেখ এনামুল জানান, গজারিয়া উপজেলার নদী ভাঙ্গন কবলীত বড়কালীপুরা ও ইসমানীর চর এলাকায় জরুরী ভিত্তিতে কাজ করার জন্য স্থানীয় সাবেক এমপি মোহাম্মদ ফয়সাল আহমেদ বিপ্লবের ডিও লেটারের প্রেক্ষিতে ৩২ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গিয়েছিল সম্প্রতি সময়ে। সেই বরাদ্দ বর্তমান প্রেক্ষাপটে রয়েছি কি না তা জানতে হবে।
গজারিয়া উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দুর্যোগ কবলিত মানুষদের তাৎক্ষনিক সহায়তার জন্য উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবু সাইদ মল্লিককে প্রধান করে বৃহস্পতিবার ৫ সদস্যের সমন্বয়ে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে জানিয়ে ইউএনও কোহিনুর আক্তার বলেন, নদী তীরবর্তী স্থানের সুরক্ষার জন্য সাবেক এম পি মহোদয়ের ডিও লেটারে প্রাপ্ত ৩২ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছিলেন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে ওই বরাদ্দেও টাকা পাওয়া যাবে কী না খোজ নিয়ে জানতে হবে।
ভোরের আকাশ/ সু
মন্তব্য