-->
শিরোনাম

আশুলিয়ায় কারখানায় হামলা ঠেকাতে পাহারা

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি
আশুলিয়ায় কারখানায় হামলা ঠেকাতে পাহারা

সাভারের আশুলিয়ায় গত কয়েকদিনে শ্রমিকদের বিক্ষোভের পর ছুটি দেয়া অধিকাংশ পোশাক কারখানায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই কাজ শুরু হয়। এদিন বেশ কিছু কারখানার সামনে শ্রমিক ও স্থানীয়দের পাহারা দিতে দেখা যায়। কারখানায় হামলার অভিযোগে ২ ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে এলাকাবাসী। এছাড়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে মাঠে দেখা গেছে বিএনপির নেতাকর্মীদেরও। সারাদিনে প্রায় ১০টির মত কারখানা ছুটি দিয়ে দিয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (০৫ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেই শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় অন্যান্য স্বাভাবিক দিনের মত কারখানাগুলোতে কাজ শুরু হয়। তবে আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকার হা-মীম, মেডলার এ্যাপারেল্স লিমিটেডে, টাউজার লাইন লিমিটেডসহ নাসা গ্রুপের কারখানায় হামলার ঘটনা ঘটে। পরে শিল্প পুলিশ ও সেনাসদস্যদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি প্রায় স্বাভাবিক হয়।

আশুলিয়ার বিভিন্ন সড়কে বিএনপির নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছে বলে খবর মিলেছে। কেউ হামলা করতে আসলে তারা ধাওয়া দিয়ে তাদের সড়িয়ে দিচ্ছেন। নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের পলাশবাড়ি এলাকায় পার্ল গার্মেন্টস এর শ্রমিকরা চন্দ্রাগ্রামী সড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। পার্ল গার্মেন্টস এর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক বলেন, গত বৃহস্পতিবার থেকে বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করছি। আজকে (বৃহস্পতিবার) দাবি পূরণ করার কথা ছিলো কিন্তু মালিকপক্ষের কেউ আসেনি। তাই বাধ্য হয়ে আমরা সড়ক অবরোধ করেছি।

আশুলিয়া থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান বলেন, গার্মেন্টস তো সবার সম্পদ, আমাদের সবার দায়িত্ব এগুলো রক্ষা করা। উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই শিল্পকে ধ্বংস করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা এগুলো রক্ষায় মাঠে আছি থাকবো। সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে নরসিংহপুরের মেডলার এ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানায় বাইরে থেকে ১০-১২ জনের একটি দল কারখানা লক্ষ করে ঢিল ছোড়ে এবং গেইটের সিসি ক্যামেরা ভাংচুর করে। পরে কারখানাটি ছুটি দেয়া হলে ৯ টার দিকে শ্রমিকরা কারখানা থেকে বের হয়ে যান বলে জানান কারখানাটির শ্রমিকরা।

মেডলার এ্যাপারেল্স লিমিটেডের সিনিয়র কমপ্লায়েন্স এডমিন অফিসার বনি আমিন সরকার বলেন, শান্তিপূর্ণভাবেই সকালে কাজ শুরু করেন শ্রমিকরা। সাড়ে ৮ টার দিকে কিছু উশৃংখল যুবক বাইরে থেকে ইটপাটকেল ছুড়ে, তারা সিসি ক্যামেরা ভেঙে ফেলে। শ্রমিক ও কারখানার নিরাপত্তা কথা ভেবে পরে কারখানা ছুটি দেয়া হয়েছে। এদিকে একই এলাকার শারমিন গ্রুপের কারখানার সামনে থেকে কারখানায় হামলার অভিযোগে স্থানীয়রা ২ জনকে আটক করে আশুলিয়ায় শিল্প পুলিশ-১ এর কাছে হস্তান্তর করেন। সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে হা-মীম গ্রুপের কারখানার মূল ফটক লাঠিসোঁটা দিয়ে ভাঙার চেষ্টা করে বিক্ষোভকারীরা। পরে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা তাঁদের ধাওয়া দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরে আইন শৃংখলা বাহিনী পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

এছাড়া তৈয়বপুর এলাকায় নাসা গ্রুপের একটি কারখানা ও ট্রাউজার লাইন লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন৷ সকাল ১০ টার দিকে হামলার আতংকে আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকার আগামী অ্যাপারেলস লি নামে একটি কারখানা ছুটি দিয়ে দেয়।

এছাড়া জিরাব-বিশমাইল সড়কে এভারব্রাইট সোয়েটার্স কারখানার সামনে এবং দূর্গাপুর এলাকার ফ্যাশন ডট কম গার্মেন্টস এর সামনে কারখানার শ্রমিক ও স্থানীয়দের লাঠি হাতে অবস্থান নিয়ে থাকতে দেখা যায়।

আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, আশুলিয়ায় আজ অধিকাংশ কারখানায় নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু হয়। আল মুসলিম, নিউ এইজ বন্ধ রয়েছে। অনন্ত গার্মেন্টস অভ্যন্তরীন সমস্যার সমাধান করতে না পারায় কারণে এখনো কাজ শুরু করতে পারেনি। যারা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে চাচ্ছে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। শারমিন গ্রুপের কারখানার সামনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে স্থানীয়রা দুইজনকে আটক করে আমাদের হাতে তুলে দিয়েছেন। তবে গত কয়েকদিনের বিক্ষোভের কারণে ছুটি দেয়া ৩-৪ টি ছাড়া বাকি কারখানায় আজ কাজ চলেছে।

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version