-->
শিরোনাম

ঠাকুরগাঁওয়ে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ মাদরাসা সুপারের বিরুদ্ধে

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
ঠাকুরগাঁওয়ে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ মাদরাসা সুপারের বিরুদ্ধে

ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে খামার ঈদগাহ দ্বি-মুখী দাখিল মাদরাসা সুপার মামুনুর রশিদের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য, মাদরাসার জমি লিজ দিয়ে টাকা আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয়রা।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, মাদরাসা সুপার মামুনুর রশিদ চাকরি দেওয়ার নামে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। কিন্তু চাকরি দেন। রাজনৈতিক কারণে সহকারী শিক্ষককে জোর করে পদত্যাগ করিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া জমি লিজ দিয়ে টাকা আত্মসাৎ, মাদরাসার মসজিদে স্থানীয়দের নামাজ আদায়ে বাধাসহ নানা অভিযোগ আনা হয়েছে।

ভুক্তভোগী মাইনুল ইসলাম বলেন, চাকরি দেওয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে ১২ লাখ ৬০ হাজার টাকা নেন সুপার। চাকরি দেওয়ার পরেও তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে রাজনৈতিক কারণে। মাদরাসার সাবেক সভাপতি ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সাবেক এমপি মাজহারুল ইসলাম সুজনের নির্দেশে নিজের ইচ্ছা মতো মাদরাসা চালাতেন সুপার। এলাকার কেউ কথা বললে তাদের মামলার হুমকি দেওয়া হতো।

আতাউর রহমান নামে আরেক ভুক্তভোগীর অভিযোগ, চাকরি দেওয়ার কথা বলে টাকা নেন মাদরাসার সুপার মামুনুর রশীদ। পরে কিছু ফেরত দিলেও বাকি টাকা দেয়নি। মাদরাসাটিতে ২৫ বছর ধরে চাকরি করেছেন সহকারী শিক্ষক ইসমাইল হোসেন। তিনি বলেন, ২০১১ সালে মাদরাসার কক্ষে আটক রেখে জোর করে পদত্যাগপত্র লিখে নেন সুপার ও তার ভাই সহকারী শিক্ষক মানিক হোসেন। এ ঘটনার পর আদালতে মামলা করেন। এক পর্যায়ে মামলা তুলে নেওয়ার শর্তে চাকরি ফেরত দিতে চান সুপার। মামলা তুলে নেওয়ার পর সাড়ে ৬ লাখ টাকা দিয়েও ফেরত পাননি। পেনশনের টাকাও পাননি।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দাতা সদস্যদের পরিবারও ১৭ বছরে কোনো হিসাব দেখতে পায়নি। মাদরাসার নামে সাড়ে ১৭ বিঘা আবাদি জমি আছে। আগে প্রতি বছর ডাক হলেও এখন কীভাবে অন্যের দখলে আছে, সেটা এলাকাবাসী জানে না। লিজ দিয়ে টাকা আত্মসাৎসহ ১৭ বছর আয়-ব্যয়ের হিসাব না থাকায় এ অবস্থা হয়েছে। একটি পদ খালি হলে কমপক্ষে তিনজন থেকে টাকা নিয়েছেন সুপার। খামার ওয়ার্ড কৃষক লীগের সভাপতি মামুনুর রশীদ আগে ভারপ্রাপ্ত সুপার ছিলেন।

অভিযোগ উঠেছে, আওয়ামী লীগের আমলে সুপার হিসেবে নিয়োগ নিয়ে অবৈধভাবে পকেট কমিটি গঠন করে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। মসজিদে স্থানীয়দের নামাজ আদায় করতে দিতেন না। সাবেক এমপি মাজহারুল ইসলামের ছত্রছায়ায় নিজের ইচ্ছামতো ব্যবহার করতেন। সংবাদকর্মীরা তথ্যের জন্য গেলে বের করে দিতেন।

খামার ঈদগাহ দ্বি-মুখী দাখিল মাদরাসার সুপার মো. মামুনুর রশিদ মামুন নিয়মিত মাদরাসায় আসেন না বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কথা বলতে রাজি হননি।

অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে ইউএনও এবং মাদরাসার সভাপতি মো. আরিফুজ্জামান বলেন, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয়ের হিসাবও দেখা হবে। তাদের নিজস্ব জমি থাকলে তা সঠিকভাবে ব্যবহারের বিষয়টি দেখবেন বলেও জানান তিনি।

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version