অতিরিক্ত বৃষ্টি ও উচ্চ জোয়ারে চারা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ভোলার চরফ্যাশনে আমন ধান আবাদ ব্যাহত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কৃষকেরা বেশি দামে কিনে আমন ধানের চারা রোপণ করছেন।
চলতি মৌসুমের জুলাই মাসের অনাবৃষ্টি ও আগস্টের অতিবৃষ্টির কারণে চরফ্যাশন উপজেলার বেশিভাগ ইউনিয়নে রোপা-আমনের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি এবং ফলন কমের আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। তবে আবাদ দেরিতে শুরু হলেও ভালো মানের চারা রোপনে উৎপাদন ব্যাহত হবে না বলে আশা করছেন কৃষি বিভাগ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিনের অতিরিক্ত বৃষ্টিও জোয়ারের পানিতে আমনের বীজতলা ও চারা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আমন ধান আবাদ ব্যাহত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কৃষকেরা চারার সংকটের কারণে অনেকে জমিতে চারা রোপণ করতে পারেনি। আবার কিছু স্থানে চারা পেলেও বেশি দামে কিনে আমন ধানের চারা রোপণ করছেন কৃষকেরা।
উপজেলা সুত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে চরফ্যাশন উপজেলায় ৭১ হাজার ৮শত ২৬ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
কৃষকরা জানান, আমন ধানের মৌসুম হওয়ায় গত মাসের শুরুতেই বিপুল টাকা খরচ করে বীজতলা প্রস্তুত করেন তারা। কেউ কেউ আবার রোপণ করেন চারা। তবে হঠাৎ জলাবদ্ধতায় নষ্ট হয়ে গেছে চারা ও বীজতলা।
একজন ভুক্তভোগী কৃষক বলেন, 'পানির জন্য আমরা ধান লাগাতে পারছি না, সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে। আমাদের অনেক ক্ষতি হচ্ছে, এভাবে ক্ষতি হলে আমরা কী করবো। আশেপাশে যে খালগুলো আছে, সেগুলো খনন করলে পানিগুলো নেমে যেতো।'
ওমরপুর ইউনিয়নের কৃষক সালাউদ্দিন জানান,বৃষ্টি আর জোয়ারের পানিতে সব ডুবে গেছে। আমন ধানের বীজতলায় ৪৫ কেজি ধান বুনেছি চারা করার জন্য, এখন সব পচে নষ্ট হয়ে গেছে। আমন লাগানোর মৌসুম চলে যাচ্ছে, কিন্তু জালার (চারা) অভাবে খেত তৈরি করতে পারছেন না।
হালিমাবাদ এলাকার কৃষক সিদ্দিক ও আমির হোসেন বলেন, ভাদ্রমাসে আমন ধান রোপনের কথা থাকলে এবছর অতিবৃষ্টি ও জোয়ারের ফলে প্রায় বেশির ভাগ জমিতে পানি জমে আমনের বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। এর ফলে চারা সংকটে একমাস পিছিয়ে (প্রায় ৮’শ থেকে ১ হাজার টাকা দরে) বাড়তি দামে চারা কিনে এখন আমন ধান রোপন করছেন। তবে দেরিতে ধান রোপন করায় ফলন কম হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।
এব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা কৃষিবিদ রোকুনুজ্জামান বলেন, অতিবৃষ্টিতে আমন ধান রোপনে বিলম্ব হয়েছে। এতে কৃষকরা যাতে ক্ষতির মুখে না পরে সেজন্য ব্রী ধান ৫২, জাতের ধানের চারা রোপন করা এবং তাঁরা ফাঁকা করে কম চারা লাগানোর পরামর্শ দিচ্ছেন। পরে গোছা মোটা হলে গোছা থেকে কিছু চারা ছিঁড়ে রোপণ করে ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেওয়া যেতে পারে।
ভোরের আকাশ/মি
মন্তব্য