-->
শিরোনাম

সাভার শিল্পাঞ্চলে আজও বন্ধ ২১ঌ কারখানা

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি
সাভার শিল্পাঞ্চলে আজও বন্ধ ২১ঌ কারখানা

ঢাকার সাভার ও আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে আজও বন্ধ রয়েছে ২১ঌটি তৈরি পোশাক কারখানা। বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ ও সেসব সুরাহা না হওয়ায় এসব কারখানা বন্ধ রয়েছে। এরমধ্যে ১৩৩টি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। আর আগে থেকে শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারায় বন্ধ রয়েছে ৮৬টি কারখানা।

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে যথাসময়ে কারখানায় কাজে যোগ দেন শ্রমিকরা। তবে বেলা বাড়তেই কিছু কারখানায় বিভিন্ন দাবিতে শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করলে কারখানাগুলোতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে অন্য কারখানাও ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. সারোয়ার আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। দুপুর ১টা পর্যন্ত শিল্পাঞ্চলে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার কোনো খবর পাওয়া যায়নি। তবে বেশিরভাগ কারখানা সচল রয়েছে বলে জানা যায়।

গত কয়েকদিনে যেসব এলাকায় শ্রমিক বিক্ষোভের ঘটনা ঘটছে সেসকল এলাকায় আজও নিরাপত্তা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

আশুলিয়ার বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়কের নরসিংহপুর এলাকায় বিভিন্ন কারখানার সামনে সেনাবাহিনী, এপিবিএন ও পুলিশ সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। সড়কে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী, র‍্যাব, বিজিবি ও পুলিশ সদস্যরা।

র‍্যাব ৪ সিপিসি ২ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর জালিস মাহমুদ খান বলেন, ‘‘পুরো আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে আমাদের টহল চলছে। আশুলিয়া থেকে জিরানী, ডিইপিজেডের পুরো এলাকায় আমাদের ১৪টি টহল টিম ও চারটি এপিসি কাজ করছে। সকাল থেকে এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’’

এদিকে কারখানা বন্ধ ঘোষণার মধ্য দিয়ে সঙ্কট সমাধান হবে না বলে মনে করছেন শ্রমিক নেতারা।

বাংলাদেশ গামের্ন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইন বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, ‘‘কারখানা ১৩ (১) ধারায় বন্ধ দিয়ে সমস্যা সমাধান হবে না। আলোচনা করতে হবে কারখানা ভিত্তিক। সরকারের শ্রম উপদেষ্টা শ্রমিকদের বিভিন্ন সমস্যা শুনতে কমিটি গঠন করেছেন। কমিটির পাশাপাশি যদি একটি কুইক রেসপন্স টিম গঠন করা হতো, যারা শিল্পাঞ্চলে সমস্যা হওয়া কারখানায় যাবে। সেখানে মালিকদের আন্তরিকতার অভাব নাকি শ্রমিকদের দাবি মানার পরও তারা কাজ করছে না, এসব বিষয় বুঝতে কুইক রেসপন্স টিম গঠন করলে এসব বিষয় নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতা করা যেতো। তারপরও যদি শ্রমিকরা কাজ না করতো, তাহলে সমস্যা বলা যেত।’’

তিনি বলেন, ‘‘আমার মনে হচ্ছে শ্রমিকদের সঙ্গে মালিকদের আলোচনায় আন্তরিকতায় ঘাটতি রয়েছে। আর ১৩ (১) ধারায় কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে শ্রমিক আন্দোলনকে আরও বড় পরিসরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে। কারখানা বন্ধের মধ্য দিয়ে শ্রমিকদের কারখানার সঙ্গে বিচ্ছিন্নতা তৈরি করা হচ্ছে।’’

এসপি মো. সারোয়ার আলম বলেন, ‘‘গতকাল থেকে আমরা মাইকিং করেছি। কথাবার্তা চলছে। শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে কথা হচ্ছে। এই পরিস্থিতি থেকে কীভাবে উত্তরণ ঘটানো, তা নিয়ে কথা হচ্ছে। দাবি দাওয়া নিয়ে যেসব বিরোধ রয়েছে, তা কিভাবে নিষ্পত্তি করা যায় তা নিয়ে কথা হচ্ছে। কলকারখানা অধিদপ্তরের যারা মাঠপর্যায়ে কাজ করেন, তাদের সঙ্গেও আলাপ আলোচনা চলছে।’’

তিনি বলেন, ‘‘আজকে শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারায় বন্ধ আছে ৮৬টি কারখানা। ১৩৩টি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। যেগুলো খোলা আছে এরমধ্যে কিছু কারখানায় দাবি দাওয়া নিয়ে আলাপ আলোচনা চলছে।’’

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ১৩ (১) ধারাতে বলা হয়েছে, কোনো প্রতিষ্ঠানের কোনো শাখা বা বিভাগে বে-আইনি ধর্মঘটের কারণে মালিক উক্ত শাখা বা প্রতিষ্ঠান আংশিক বা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিতে পারবেন; এমন বন্ধের ক্ষেত্রে ধর্মঘটে অংশগ্রহণকারী শ্রমিকেরা কোনো মজুরি পাবেন না।

 

ভোরের আকাশ/মি

মন্তব্য

Beta version